আমি অবিশ্বাসী দেবতারে লাথি দিয়ে করি বিশ্বাসী কুকুরের পদচুম্বন! --------------------------- Nobody remains virgin, life f**ks everyone... ! আজ কথা বলি কোয়ান্টাম মেকানিক্স এবং জ্যোতির্বিজ্ঞান নিয়ে, এর কিছু সাধারন বিষয় নিয়ে, যার একটি হল "ব্ল্যাক হোল বা কৃষ্ণ গহবর"।
ব্ল্যাক হোল কি?
এমন কিছু তারকা বা নক্ষত্র আছে, যাদের অস্বাভাবিক আকার, ভর ও ঘনত্ব থাকে, আর এর জন্যে এই সব তারকা থেকে নির্গত আলো বাইরে আসতে পারে না বলে তারকা টি কে কালো দেখায় বলে আমরা একে কৃষ্ণ গহ্বর বা ব্ল্যাক হোল বলে চিনি।
সহজ ভাষায় বলতে গেলে - ব্ল্যাক হোল মহাশূন্যে এমন একটি জায়গা যেখানে যার অভিকর্ষ শক্তি এতই প্রবল যে আলো ওখান থেকে বের হতে পারে না। এই অভিকর্ষীয় শক্তির প্রভাবে বস্তু বা ম্যাটার অই জায়গায় খুব সংকুচিত হয়ে একটি ক্ষুদ্র জায়গায় অবস্থান করে! আর এই ঘটনা তখনই ঘটে যখন একটি তারকার জীবন কাল শেষ হয়ে যায়।
যেহেতু অই জায়গা থেকে কোন আলো বের হতে পারে না, তাই আমরাও ব্ল্যাক হোল কে দেখতে পারি না।
তা অদৃশ্য। কিছু বিশেষ স্পেস টেলিস্কোপ ব্ল্যাক হোল কে খুঁজে বের করতে পারে। যখন কোন তারকা এমন ভাবে আচরন করে অর্থাৎ তার আয়ুকাল শেষ হয়ে আসে এবং ব্ল্যাক হলে পরিনত হতে যাচ্ছে, তখন এই বিশেষ যন্ত্রপাতি সম্বলিত টেলিস্কোপ তাকে চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়।
কতো বড় এই ব্ল্যাক হোল?
ব্ল্যাক হোল ছোট হতে পারে আবার বড়ও হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে ক্ষুদ্রতম ব্ল্যাক হোল একটি পরমাণুর সমান হতে পারে।
এই জাতিও ব্ল্যাক হোল গুলো অনেক ক্ষুদ্র কিন্তু তাদের এক একটার ভর হতে পারে বিশাল কোন পর্বতের সমান। ভর হচ্ছে বস্তুর পরিমান অথবা একটি অবজেক্ট এ অবস্থিত মোট পদার্থ বা বস্তুর উপাদান।
অন্য এক ধরনের ব্ল্যাক হোল কে বলা হয় "স্টেলার" বা "নাক্ষত্রিক"। এর ভর আমাদের সূর্যের ভর এর চেয়েও ২০ গুন বেশি হতে পারে। খুব সম্ভবত অনেক অনেক বেশি ভরের ও নক্ষত্র রয়েছে পৃথিবীর ছায়াপথে।
আর পৃথিবীর এই ছায়াপথ কে বলা হয় "মিল্কি ওয়ে"।
সব চেয়ে বৃহৎ ব্ল্যাক হোল কে বলা হয় "সুপারমেসিভ"। এই জাতিয় ব্ল্যাক হলের ভর হয় ১ বিলিয়ন সূর্যের ভর এর ও অধিক। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন যে প্রতি টি বৃহৎ গ্যালাক্সি বা ছায়াপথের কেন্দ্রে এই রকম একটি সুপারমেসিভ ব্ল্যাক হোল থাকে। আর যে সব ছায়াপথের কেন্দ্রস্থলে এই ব্ল্যাক হোল থাকে তাকে বলা হয় "Sagittarius A" ।
এর ভর প্রায় ৪ বিলিয়ন সূর্যের ভরের সমান এবং একে একটি সুবিশাল বল এর ভিতর সেট করা যাবে, এমন বল যা প্রায় আমাদের পৃথিবীর মতো কয়েক মিলিয়ন প্রিথিবি ধারন করতে সক্ষম।
ব্ল্যাক হোল-এর জন্মঃ
বিজ্ঞানিদের মতে- সব চেয়ে ছোট ব্ল্যাক হোল টির জন্ম ঠিক এই মহাবিশ্বের জন্মের সময়।
আর স্টেলার ব্ল্যাক হোলের গঠিত হয়ে যখন বিশাল একটি তারকার কেন্দ্র নিজে থেকেই তার উপর পতিত হয় বা আপনা আপনি সঙ্কুচিত হতে থাকে। আর এই পর্যায়ে তার থেকে জন্ম নেয় "সুপারনোভা"। "সুপারনোভা" হলো বিস্ফোরিত তারার একটি অংশ যা মহাশূন্যে ভেঙ্গে পড়ে।
আর সহজ করে বলি- একটি নক্ষত্রের নির্দিষ্ট জালানি নিঃশেষ হয়ে গেলে এর মৃত্যু ঘটে। যতক্ষণ পর্যন্ত এর আভ্যন্ত্যরিন হাইড্রোজেন গ্যাস অবশিষ্ট থাকে, ততক্ষণ পর্যন্ত এর ভিতরে নিউক্লিয়ার বিক্রিয়া চলতে থাকে। হাইড্রোজেন শেষ হয়ে গেলে এর কেন্দ্রিও মূল বস্তু সঙ্কুচিত হতে থাকে। কিন্তু এর বাহ্যিক অংশ তখনও প্রসারিত হতে থাকে। এমন পর্যায়ে যখন নক্ষত্রটির ভর পাঁচ সৌর ভর এর মধ্যে থাকে, তখন সঙ্কোচন এর সময় এর বহিঃস্থ আস্তরন ছুড়ে ফেলে অত্তাধিক উজ্জ্বল হয়ে উঠে।
যাকে আমরা "সুপারনোভা" বলে চিনি।
ধারনা করা হয়- ছাপথের জন্মের সময় এই সুপারনোভার সৃষ্টি।
ব্ল্যাক হোল যদি ব্ল্যাক অর্থাৎ কালো হয়, তাহলে বিজ্ঞানিরা কিভাবে তা দেখতে পান?
সাধারন ভাবে একটি ব্ল্যাক হোল কে দেখা প্রায় অসম্ভব কারন এর অতি শক্তিশালী অভিকর্ষীয় শক্তি এর সব টুকু আলো এর কেন্দ্রের দিকে টানে। কিন্তু এর আসেপাশের তারকা এবং গ্যাস কিভাবে এর দ্বারা প্রভাবিত হয় বা হচ্ছে বিজ্ঞানীরা এটা দেখতে পারেন। যে সব তারকারা ব্ল্যাক হোল কে ঘিরে উড্ডয়মান অথবা ঘূর্ণ্যমান, গবেষক রা সেই সব তারকাদের উপর স্টাডি করতে পারেন।
যখন একটি ব্ল্যাক হোল ও তারকা পরস্পরের খুব কাছাকাছি আসে, তখন অনেক উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন আলো উৎপন্ন হয়। এই ধরনের আলো মানব চক্ষে দেখা যায় না। বিজ্ঞানীরা স্যাটেলাইট এবং কিছু বিশেষ ক্ষমতা সম্পন্ন টেলিস্কোপ ব্যবহার করেন এই উচ্চ ক্ষমতার আলো কে পর্যবেক্ষণ করতে।
ব্ল্যাক হোল কি পৃথিবী তে বিপর্যয় বা ধ্বংস সৃষ্টি করতে পারে?
ব্ল্যাক হোল মোটেও স্পেস বা মহাশুন্যে ভ্রমন করে না কোন তারকা, চাঁদ বা গ্রহ কে তার শিকার বানাতে। আর পৃথিবীও কোন দিন ব্ল্যাক হলে গিয়ে পতিত হবে না কারন, কোন ব্ল্যাক হোল কিন্তু পৃথিবীর সৌরজগতের এত টা কাছাকাছি নয়।
যদি একটি সূর্যের সমান ভরের একটি ব্ল্যাক হোল সূর্যের জায়গায় প্রতিস্তাপিত হয়, তবুও নয়। কোন কোন ব্ল্যাক হলের ভর সূর্যের সমতুল্য হতে পারে। তখনও কিন্তু পৃথিবী এবং অন্যান্য গ্রহ গুলো ও কিন্তু ওই ব্ল্যাক হলে কে কেন্দ্র করে ঘূর্ণায়মান থাকবে, যেমন টা থাকতো পৃথিবী কে কেন্দ্র করে।
আর সব চেয়ে মজার কথা হল, আমাদের সূর্য কিন্তু কখনই একটি ব্ল্যাক হলে পরিণত হবে না।
কেন?
কারন সূর্য তত টা বিশাল নয় যত টা প্রয়োজন হয় একটি তারকার ব্ল্যাক হলে পরিণত হতে।
-------------------------------------------------------------------------------------
আজ এ পর্যন্তই।
ভালো থাকা হোক সবার, নিরন্তর!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।