এ লড়াইয়ের সঙ্গে জড়িয়ে আমার যুদ্ধাপরাধ
সাধারণভাবে প্রচলিত আছে, বিশ্বাস ও আইডেনটিটিই পাশ্চাত্য ও ইসলামের মধ্যে দ্বন্দ্বের মূল কারণ। তবে বিপরীত মতও দিয়েছেন কেউ কেউ। সমঙ্্রতি ওয়াশিংটন পোস্টে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আইডেনটিটি নয়, ইসলামের সঙ্গে পাশ্চাত্যের মূল সংকট আইডিয়ায়। 'দ্য রুটস অফ টুডেস ওয়ার' শিরোনামে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বাস এবং আইডেনটিটির চেয়ে আইডিয়া সংকটই বিশ্বে এ নয়া মেরুকরণের জন্য দায়ী। প্রাচ্যের মুসলিমরা এখনো এটা মেনে নিতে পারছে না যে, ইসলাম একটি সার্বজনীন ধর্ম_ কেবল প্রাচ্য বা মধ্যপ্রাচ্য নয়, পাশ্চাত্যেও এটা ছড়িয়ে পড়তে পারে।
সমঙ্্রতি ইসলামাইজেশনের যে জোয়ার বইছে, অনেকেই মনে করছেন এটা পোস্ট মর্ডানিটিরই বহিপ্রকাশ। মর্ডানিটি অগ্রাহ্য করে যেভাবে মূলের কাছে ফিরে যেতে বলছে পোস্টমর্ডানিজম_ তারই অংশ হিসেবে চৌদ্দ শ' বছর পর ফের সেই ইসলামের ছায়ায় ফিরতে চাইছে মুসলিমরা। তাই বলে ইসলামী জঙ্গিবাদকে উত্তরাধুনিক বলাটাও এক ধরনের কূপমণ্ডুকতা।
এদিকে ইউএসএ টুডের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আইডিয়া এ দ্বন্দ্বের মূল হলেও বিস্ময়ের কিছু নেই। অনেক ক্ষুদ্র বিষয়ও যুদ্ধের মূল কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের এ সংকটকে ফিলিস্তিনি চিন্তাবিদ এডওংয়ার্ড সাঈদ দেখেছিলেন সাংস্কৃতিক সংকট হিসেবে এবং নম চমস্কি দেখছেন সাম্রাজ্যবাদের আগ্রাসন হিসেবে।
পাশ্চাত্য মিডিয়া ইসলামের সঙ্গে দ্বন্দ্বের জন্য মধ্যপ্রাচ্যের জনগণের সেন্টিমেন্টকে দায়ী করলেও তাদের উস্কানিমূলক আচরণ মোটেই বিতর্কের ঊধের্্ব নয়। 2005-এর 30 সেপ্টেম্বর যখন ড্যানিশ কট্টরপন্থি দৈনিকে মুহাম্মদকে (সা.) ব্যঙ্গ করে কার্টুন প্রকাশিত হয়, তখন গোটা মুসলিম বিশ্বে প্রতিবাদের আগুন ছড়িয়ে পড়ে। শতাধিক মানুষের প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছিল। পাশ্চাত্য মিডিয়া তখন মুসলিমদের অসহিষ্ণু বলে মন্তব্য করে।
এখন প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক, উস্কানিমূলক যে ব্যঙ্গচিত্রের কারণে প্রাণহানির ঘটনা ঘটনা ঘটে- তা প্রকাশিত হওয়া কতোট জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট? জার্নালিজমের মৌলিক নীতি এ ঘটনা কি আদৌ সমর্থন করে? যা হোক, ডেনমার্কের মুসলিমরা এখন বেশ ভালোই আছে। এ ঘটনার পর কোপেনহেগেনে মুসলিমদের জন্য একটি কবরস্থানের জায়গা বরাদ্ধ করেছে ড্যানিশ সরকার। এটাই ডেনমার্কের ইতিহাসে প্রথম মুসলিম গোরস্তানের ঘটনা।
তবে মডারেট মুসলিমরা এগিয়ে আসছেন ইসলাম-পাশ্চাত্য দ্বন্দ্ব নিরসনে। আইডেনটিটি বা আইডিয়ার চেয়েও বড় সত্য হলো, খোদ ইসলামেই অমুসলিমদের সঙ্গে সহিষ্ণু আচরণের নির্দেশ রয়েছে।
এ মৌলিক নীতির কাছেই ফিরে যেতে হবে আমাদের। এতেই মঙ্গল সবার।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।