আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এক প্রবাসীর কথা... ও দেশের বাণিজ্য



প্রবাসী কি আর সাধে হয়েছি? বাধ্য হয়েছি। এর আগে প্রিয় মাতৃভূমিতে স্থায়ীভাবে সেটেল হওয়ার আশায় দীর্ঘ বছর সাধনা করেছিলাম। কিন' দেশের অস্থিতিশীলতা, চতুমর্ুখী দুনর্ীতি, ভেজাল খাদ্যদ্রব্য ও দুর্মূল্যের বাজারে প্রতিযোগিতায় হেরে গিয়ে অবশেষ প্রবাসী হতে বাধ্য হলাম। এবার ভাগ্য টেনে নিয়ে এলো সৌদির আল-জুবাইল শিল্প এলাকায় ডেলিম কোম্পানিতে। একটা কোরিয়া অরিজিন আন-র্জাতিক কোম্পানি।

দাম্মামের পাশেই অবস্থিত আল জুবাইল, একটা উপশহর। চার-পাঁচ বছর আগে রিয়াদ থেকে এখানে বেড়াতে এসেছিলাম। তখন শহরের আশপাশে তেমন কিছু দৃষ্টিগোচর হয়নি। রাস-াঘাটও তেমন ছিল না। এবার এসে দেখি অনেক রাস-াঘাট এবং চারদিকে অসংখ্য কলকারখানা অবস্থিত।

প্রতিনিয়ত প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে বিভিন্ন ফ্যাক্টরি। প্রতিদিনই নতুন নতুন স্ট্রাকচার চলছে। আমাদের কোম্পানিও একটি নতুন পেট্রোকেমিক্যাল কোম্পানির কাজ করছে। আশপাশে ব্যাপক এলাকা নিয়ে বহু কলকারখানা তৈরি হচ্ছে। প্রচুর কর্মসংস্থান হচ্ছে।

এ দেশে হাজার হাজার মাইল খালি জায়গা পড়ে আছে। শুধু মরুভূমি আর মরুভূমি। কলকারখানা বানানোর জন্য এ দেশের মানুষের জমি কিনতে হয় না। স্থানীয় পুঁজিপতিরা প্লান নিয়ে যদি সরকারের কাছে কারখানা বা যে কোনও শিল্প প্রতিষ্ঠান নির্মাণের লক্ষ্যে আবেদন করে তাহলে সরকার পূর্ণ সহযোগিতা ও সমর্থনসহ অত্যন- সহজশর্তে মোটা অঙ্কের লোন দিয়ে কারখানা বানানোর জন্য উৎসাহ দিয়ে থাকে। ফলে এ দেশ দ্রুত উন্নতির পথে ধাবিত হচ্ছে।

অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধশালী হচ্ছে এবং এ দেশের কর্মসংস্থান সংকুলান হয়েও বাইর থেকে কমর্ী আমদানি করছে। আগে নিয়ম ছিল শুধু সৌদিয়ানরাই এ দেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী হবে। সরাসরি তাদের স্পন্সরশিপ নিয়ে বা নাম ব্যবহার করে বিদেশী কোম্পানিরা কাজ করবে। কিন' এখন বিদেশী ব্যবসায়ী বা পুঁজিপতিরা নিজেরাই যেন নিজেদের দায়িত্বে ব্যবসা করতে পারে সেরকম সুবিধা দেয়া হয়েছে। যেমন 'সাজিয়া'।

সাজিয়া হল একটি বেসরকারি বিনিয়োগ সংস্থা। এই সংস্থায় রেজিস্ট্রিভুক্ত হয়ে যে কোনও বিদেশী কোম্পানি নিজের নামে প্রতিষ্ঠান গঠন করে পরিচালনা করতে পারে। পুঁজির প্রাথমিক পরিমাণ হতে হবে কমপক্ষে তিন মিলিয়ন সৌদি রিয়াল। কাজেই সরকারি বা বেসরকারি মদদপুষ্ট হয়ে এখানে অবাধে বাণিজ্য করে যাচ্ছে সৌদি ও বিদেশী কোম্পানিগুলো। ব্যবসায়ীদের অভিমত হল_ এ দেশে ব্যবসায় অনেক নিরাপত্তা আছে।

কোনও ঝামেলা নেই। কাজ পেতে দুনর্ীতির আশ্রয় নিতে হয় না, কোনও চাঁদাবাজিও নেই। লিগ্যাল ওয়েতেই সব চলে। প্রায় সবই অনুকূলে। এখানে বহুদিন থেকে বসবাসরত অনেক বাংলাদেশী আছে যারা নিজের কষ্টার্জিত অর্থ জমিয়ে সৌদি স্পন্সরশিপের মাধ্যমে ছোটখাটো দোকানপাট করে মোটামুটি ভালোই ব্যবসা করে যাচ্ছে।

আমাদের দেশেও বহু ধনী ব্যক্তি আছে যারা দেশে বা বিদেশে কলকারখানা তৈরি করে যথেষ্ট কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার ক্ষমতা রাখে। তারা সৌদি আরবেও বাণিজ্যক উদ্যোগ নিয়ে দেখতে পারেন।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।