সযতনে খেয়ালী!
ঃ ভাই কেমন আছেন?
- কে কে কে?
ঃ আমি মোল্লা...
- পরিচয় পরে হবে, আগে টিনের বাক্সে বারো টেকা...
ঃ আপনে মিয়া এখনো সোজা হইলেন না!
- ত্যাড়া বেঁকার কী দেখলা?
ঃ না, কী আর দেখুম, কখনো সোজা দেখি নাই তো। সোজা জিনিষটা কি বুঝি না!
...... ..... .... ....
ঃ কী করেন....?
- কদম গাছে উঠি!
ঃ অ ভাই কী কন এগুলা?
- হ মিয়া, কদম গাছে উঠিতে চাই... তারপর রাঁধারে দেখুম...। আমার বাইনোকুলারটা যে কই গেলো।
ঃ উঠেন...। আপনে কদম গাছে আর কদম গাছের নিচে কে খাড়াইয়া আছে দেখছেন?
- তুমি মিয়া একটা বেরসিক।
কদম গাছে উইঠা কি নিচে তাকানোর টাইম আছে.... আহা! বাইনোকুলার কাঁচটা যে কেডা ঝাপসা করলো!
ঃ ভাই একটু নিচে তাকাইয়া দেইখেন। নিচে খাড়াইয়া আছে ভাবী হাতে বিশাল একটা মুলীবাঁশ।
- ধুর মিয়া। তুমি আসলেই বেরসিক। কীসের মাঝে কি...
ঃ ঠিকই আছে।
আপনেরে সোজা করতে হইলে মুলীবাঁশ অলা ভাবী লাগবো। মুলী বাঁশের ডরে যদি সোজা হোন। নাইলে কোন আশা নাই!
- তুমি মিয়া কোন কামের না। মুলী বাঁশের ডরে কি কদমগাছ ছাইড়া দিবা? আহো তুমি ও আহো...
ঃ মাথা খারাপ? আপনের লগে আমি আর নাই। বহুত ক্যাচালে পড়ছি আপনের কথা শুইনা।
অল্পতে মাইর খাই নাই। আবার যদি শুনে যে আপনের লগে কদম গাছে উঠছি তাইলে আর রক্ষা নাই...। আর না গুরু ক্ষমা করেন।
- ধেই মিয়া, তুমি কোন কামেরই না। মাইরের ডরে টাঙকিবাজি ছাইড়া দিবা? হের লাইগাই কইছিলাম, আমার পতাকা তলে আসো, সণ্ন্যাস ব্রত গ্রহণ করো।
নো উয়্যোম্যান নো ক্রাই... নো মুলীবাঁশ - নো মাইরের ডর!
ঃভাই আর কতো। কতগুলা বসন্ত গেলোগা এখনো পোলার বাপ হইলেন না। এখনো কদম গাছে উঠেন, কাজটা কি ঠিক হইলো?
- হৈ মিয়া, পোলা না মাইয়ার বাপ...। অকাজের কী হইলো, তুমি ও ওঠো না করছে কে?
ঃ নাহ ভাই আর না। আমি ভালো হইয়া গেছি।
এখন আমি একজনাতেই আছি...। নো মোর হাঙ্কিপাঙ্কি, নো মোর কডম গাছ! আচ্ছা একটু বলবেন, কদম গাছের ব্যাপার টা কি?
- এই লিংকটা থেকে গানটা শোনো তাইলেই বুঝবা...
---------------
অনেকদিন পরে জুনিয়র এই বন্ধুটার সাথে কথা হচ্ছিলো এমএসএনে। কিছু সময়ে স্মৃতিগুলো নিয়ে চটকানো হলো খানিকক্ষণ। খুব শার্প একটা ছেলে... আমার মতো পাথুরে, নিরেট মাথার একজনরে যে ক'জন খুব ভালো করে পেয়েছে তাদের মধ্যে একজন।
একটা আইডিয়া দেখালো, টেস্টিং চলছে, খুব অ্যাপ্রেশিয়েট করার মতো।
ভেতরে খুব আনন্দ হলেও, প্রকাশ ভঙ্গীটা কেবল 'গুড জব, ওয়েল ডান, কংগ্র্যাটস' এই জাতীয় শব্দ গুলোর মাঝেই সীমাবদ্ধ ছিলো।
একবার এক সিনিয়রকে প্রেম সংক্রান্ট উপডেশ দিতে গিয়ে বলেছিলাম, "তোমারে দিয়া কোন লাভ হইলো না। মাঝখানে দেখবা শ্রোতা হিসেবে বসে থাকা এই মোল্লাই তুরুপটা মারবে"। আসলে তাকে নিয়ে আমি পরপর কয়েক দিস্তা লিখেও শেষ করতে পারবো না।
যেমন এখন চোখের সামনে একের পর এক ভেসে যাচ্ছে সময় গুলো...।
উত্তরায় কামলা ফাঁকি দিয়ে আম চুরি করার সময়টা, বেইলী রোডের বিগবাইটসে বসে সেন্ডউইচ চাবানো, নিউমার্কেটের সামনে বসে ফুচকার দোকানের ফুচকা চুক্তি ভিত্তিতে খাওয়া, কোন মেয়েকে দেখে তার কথ্য-শুদ্ধ ভাষার ফুলঝুড়ি, এর ওর খিতাবী নাম ধরে একেকটা কাল্পনিক কাহিনী বানিয়ে হাসতে হাসতে তেত্রিশ দাঁত বের করে হাসা, ভলভো দোতলা বাসের পেছন দিক, ক্যাফে নাম্বার ওয়ানে বসে ফোন করিয়ে তাকে আনানো, শেষ দেখাটা মনেহয় সেখানেই হয়েছিলো... এবং পুনরায় আমরা তিনজন।
একজন বড়, একজন মেজো আরেক ছোটজন এই মোল্লা....
----------
পুরা পোস্টটাই এসেছে হাসান মোর্শেদ দাদার দেয়া বাসুদেব দাস বাউলের কলঙ্কিনী রাঁধা গানটার অনুপ্রেরণা থেকে!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।