আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

@ মুহাররামের দশ তারিখের করণীয় (১)

জন্মোপার থেকে পৃথিবী হয়ে অনন্তে >>> ©www.fazleelahi.com

মানুষের স্বভাবই এমন যে, তাদের অধিকাংশের সামনে কোন কিছু পেশ করা হলে হয় অতিরঞ্জণে রঞ্জিত করে তাকে পূজো করা শুরু করবে; নয়তো অবমূল্যায়ণ করে তাকে সময়ের আস্তাকুঁড়ে ফেলে রাখবে। অবশ্যই মধ্যমপন্থা অবলম্বন বা যথোপযুক্ততা অনুধাবন করার মত যথেষ্ট মানুষ পৃথিবীতে সর্বকালেই ছিল, আছে এবং থাকবে; কারণ, তাদের দ্বারাই ভারসাম্য রক্ষা হয়ে থাকে। তারা অতি আবেগ তাড়িত হয়ে অন্ধও হয়ে যায় না, আবার অতি মোটা মাথা কিংবা স্থুলবোধীদের মত অননুধাবনপ্রবণ হয়ে দৃষ্টি মেলে দেখতে না পারার মতও নিঃস্পন্দন থাকে না। পৃথিবীর অতি সাধারণ ব্যাপার-স্যাপার থেকে নিয়ে শুরু করে বড় বড় ঘটনাবলীতেও এ বিভক্তি দৃশ্যমান; এমনকি জীবন ধারণের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যবস্থাবলী তথা জীবন বিধান নিয়েও; বরং এ অতি ও নূন্য অনুধাবনের মাত্রা ধর্মসমূহে আরো অধিক হারে সংযোজিত হয়েছে। যে কোন ব্যাপারেই আবেগ ও অবহেলাকে বর্জন করে বিবেক খাটিয়ে সুচিন্তিতভাবে সিদ্ধান্ত নেয়াটাই শ্রেষ্ঠসৃষ্টি মানুষের জন্য শোভনীয়।

ইসলামের মূলগ্রন্থ আল কুরআন তাই বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্নভাবে তার অনুসারীকে একথা বুঝাতে সচেষ্ট হয়েছে যে, বিবেকবানদের জন্যই বিধিবিধান, বুদ্ধিমানগণের জন্যই উপদেশ এবং তারাই তা গ্রহণ করে ও করতে সক্ষম হয়। যেমন- هَـذَا بَلاَغٌ لِّلنَّاسِ وَلِيُنذَرُواْ بِهِ وَلِيَعْلَمُواْ أَنَّمَا هُوَ إِلَـهٌ وَاحِدٌ وَلِيَذَّكَّرَ أُوْلُواْ الأَلْبَابِ. ((এটা মানুষের জন্য এক বার্তা, যাতে এটা দ্বারা তাদেরকে সতর্ক করা হয় এবং তারা জানতে পারে যে, তিনিই একমাত্র ইলাহ্‌ আর যাতে বুদ্ধিমানগণ উপদেশ গ্রহণ করে। )) [সূরা ইব্‌রাহীমঃ ৫২] এছাড়াও আরো দেখুন- সূরা আল-বাকারাঃ ২৬৯, সূরা আলে-ইমরানঃ ৭, সূরা আর্‌-রা‘দঃ ১৯, সূরা সোয়াদঃ ১৯, সূরা আয্‌-যুমারঃ ৯, ১৮। মুহার্‌রাম মাসের দশ তারিখে মুসলমানদের একটা অংশ এবং কিছু উপদল ধর্মপালনের নামে যাচ্ছেতাই যা করে যাচ্ছে, তাকে যদি কেউ ইসলামের বিধিবিধানের আলোকে বিশ্লেষণ করে অথবা অন্ততঃ সাধারণ বুদ্ধিবিবেচনা খাটিয়েও চিন্তা করে, তাহলে ব্যক্তির বিবেচনায় তার অসারতা সুস্পষ্ট হতে বাধ্য। মুহার্‌রাম মাস, হিজরী সালের প্রথম মাস।

এ মাসে ঘটে যাওয়া ইতিহাস অনেক দীর্ঘ এবং বহুল তাৎপর্যপূর্ণ। তাই মুসলিম-অমুসলিম সকলের নিকটই এ মাসের গুরুত্ব সীমাহীন। শিয়া সম্প্রদায় এ মাসের দশ তারিখে যে মাতম বা শোক পালন করে, তার সাথে ইসলামের দূরতম সম্পর্কও নেই; বরং কারো মৃত্যু বা হত্যার পর তার জন্য বেদনার্ত মনের অধৈর্যে নিরবে অশ্রু বিসর্জন দেয়ায় কোন বাধা নেই। কিন্তু মুখে আঘাত করে, হাত-পা ছুঁড়ে অথবা মিছিল করে এবং সেখানে বিভিন্নভাবে নিজেকে রক্তাক্ত করে বেদনা প্রকাশের অথবা প্রদর্শনের কোনই সুযোগ নেই, উপরন্তু কঠোরভাবে নিষেধ করা হয়েছে। ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ ((যে ব্যক্তি গাল চাপড়ায়, বুকের কাপড় ছেঁড়ে এবং জাহেলী যুগের রীতি অনুযায়ী চিৎকার করে, সে আমাদের দলভুক্ত নয়।

)) [মুত্তাফাকুন ’আলাইহি; বুখারীঃ ১২৯৪, মুসলিমঃ ১০৩] পরবর্তী অংশ পড়ুন।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।