আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এক সন্ধ্যার কিছু কথা

"পসার বিকিয়ে চলি জগৎ ফুটপাতে, সন্ধ্যাকালে ফিরে আসি প্রিয়ার মালা হাতে"

আজ সন্ধ্যায় কিছুসুন্দর মুহূর্ত কাটালাম ব্লগের কিছু অতি পরিচিত মানুষের সাথে। এমন সন্ধ্যা খুব কম পাওয়া যায় হাতে। এই সন্ধ্যার পুরো কৃতিত্বটা অবশ্য পিয়ালের। সে'ই উপস্থিত সকলের সাথে যোগাযোগ করে এই সান্ধ্যকালীন আসরের ব্যাপারটা আমাকে জানিয়েছিল ফোন করে। ঈদের পর পরই এমন একটা সন্ধ্যা আমার এখানে কাটানোর কথা ছিল।

কিন্তু মাঝখানে কিছু পারিবারিক সমস্যার কারণে তা হয়ে ওঠেনি। ধন্যবাদ পিয়াল এবং অন্যান্য সবাইকে যারা আজ আমার বাসায় উপস্থিত ছিলেন। হিমু চমৎকার গান গায়। হিমুর গান শুনে আমি রীতিমত 'থ', একেবারে যারপর নাই মুগ্ধ। বেশ ভাল হারমোনিয়াম বাজায় সেটাও সচক্ষে দেখলাম এবং নিজের কানেই শুনলাম।

ব্ল্লগীয় লেখায় যে হিমু একজন নারীঅন্ত প্রাণ বা নারীভক্ত (লিপ্সু কথাটা বলা সমীচীন নয়) সামনে দেখে তা কেউ বলবে না বা স্বীকার করবে না। অত্যন্ত ভদ্র, অমায়িক ও সদালাপি একটা মানুষ যেমন মানুষ আমাদের ডটু রাসেল। হিমুর বাচনভঙ্গি, কন্ঠস্বর এবং ব্যক্তিত্ব সব মিলিয়ে সত্যিই সে যে কোন ললনাকে তার প্রতি আসক্ত করার ক্ষমতা রাখে। এবং বলাই বাহুল্য এই দৌড়ে আমি ওর চেয়ে অনেক পিছিয়ে। আর তার লেখারতো কোন তুলনাই হয়না।

সেই হিমু আজ প্রাণ খুলে, গলা ছেড়ে গান গাইলো, "ললিতাগো ওকে আজ চলে যেতে বলনা, ও ঘাটে জল আনিতে যাবনা যাবনা ও সখী অন্য ঘাটে চলনা ..."। আমি কৃতজ্ঞ আমাদের অন্যতম পুরোনো ভদ্র, মার্জিত ও অত্যন্ত রুচিশীল ব্ল্লগার শোহেল মতাহার চৌধুরীর কাছে। উনি যে কষ্ট করে এই শীতের রাতে আমার বাসায় আড্ডা দিতে ও পরিচিত হতে এসেছেন তাতে আমি অত্যন্ত খুশী হয়েছি। তিনি টানা দেড় ঘন্টা ছাদের উপর এই শীতে, কনকনে হিমেল হাওয়ায় মধ্যে যে ভাবে বসে আড্ডা সচল রেখেছেন ও গান গাওয়ায় উৎসাহ যুগিয়েছেন তার তুলনা নেই। আড্ডায় এমন মশগুল ছিলেন যে নিজের পরনের জ্যাকেটটা না নিয়েই তিনি ছাদে ঠান্ডার মধ্যে বসে গান শুনছিলেন এবং গাইয়েদের রীতিমত হাততালি দিয়ে উৎসাহ যোগাচ্ছিলেন।

অঃরঃপি বর্তমানে গানের চচর্া না করলেও বোঝা যায় যে এককালে সে খুউব ভাল গান করতো। দেশাত্ববোধক একটা গানের লম্বা দমের সুর সে নিখুঁতভাবে গেয়ে শোনালো। ওতেই বোঝা যায় যে সে ভাল গান গাইতো এবং গানের চচর্া ছিল। তবে তার হাতের গীটার বাজানোটা শোন হয়নি। গীটার অবশ্য বাজিয়েছিল রাসেল।

হ্যাঁ আপনাদের অনেক প্রিয় বলুন আর অতি অপ্রিয় বলুন সেই ওয়ান এন্ড অনলি ডটু রাসেল। ব্যক্তি রাসেলের ব্লগে অপ্রকাশিত ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়ের সব কটি ইন্দ্রিয়ের মোহনীয় স্পর্শের ছোঁয়া যেন গীটারের তারের মধ্যে দিয়ে বের হয়ে আসছিল এবং বলাইবাহুল্য তা অত্যন্ত রুচিশীল ও হৃদয়গ্রাহীভাবে। যে হাতের লেখায় ব্লগের অনেকেই বেসুরো হয়ে যায়, ক্ষিপ্ত-রাগান্বিত হয়ে যায় সেই হাতের যাদুস্পর্শে যে আবার মিষ্টি মধুর সুরেলা আওয়াজ বের করে মানুষের মন গলিয়ে দিতে পারে সেটাও আজ নিজের চোখে দেখলাম ও কানে শুনলাম। অবিশ্বাস্য। রাসেল (ডটু) অত্যন্ত চমৎকার, পরিমিত কথার ও নিয়ন্ত্রিত উচ্ছাসে ঠাসা এক উচ্ছল প্রাণবন্তু মানুষ।

সামাজিক মেলা মেশায় বা সামনা সামনি আচরণে বা ব্যবহারে তার পরম শত্রুও তার প্রতি ক্ষুব্ধ হবার কথা নয়। জামাল ভাস্কর ও মৌসুম জুটি বেশ আমুদে, আড্ডাবাজ ও সহজ সরল মানুষ বলেই মনে হলো। মৌসুমের পাশাপাশি ভাস্করের মুখে সাহিত্য, সংস্কৃতি, চলচ্চিত্র ও রাজনীতি বিষয় নিয়ে অনেক কথা শুনলাম। যুক্তি ও পাল্টা যুক্তির মাঝে আড্ডাটা বেশ জমজমাট মনে হচ্ছিল। আজ সন্ধ্যায় এমন সব সেলিব্রেটি ব্লগারদের আমার বাসায় একান্ত সানি্নধ্যে কিছুটা সময়ের জন্য পেয়ে সত্যিই আমি মুগ্ধ।

শোমচৌ, হিমু,অ:র:পি, রাসেল (ডটু), জামাল ও মৌসুম আপনাদের সবার জন্য রইল আমার নির্মল আন্তরিকতা। সবাই আপনারা ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।