ভালোবাসার ঊর্বশী বুকে লেখা আছে এক নাম- সে আমার দেশ, আলগ্ন সুন্দর ভূমি- বিমূর্ত অঙ্গনে প্রতিদিন প্রতিরাত জেগে ওঠে তার উদ্ভাসিত মুখ
গাছটি দাঁড়িয়ে আছে স্থির পথের পাশেই, পাথর খন্ডটি তার সঙ্গী রাতদিন। ধল প্রহরে আযান শোনায় দূরের মসজিদ, ডেকে ওঠে রাতজাগা পাখি, ঘুম ভাঙে পৃথিবীর, জেগে ওঠে কলরব। কখনও বা মেঘ কখনও বা রোদ, বৃষ্টি-ধূলি-ঝড় জীবনের গল্পটা তাদের- একজন জীবন্ত, আরেকজন জড়-মৃত!
ক্লান্ত পথিক ঝিমায় বসে গাছের ছায়ায়- শোনায় বিরহ-মিলন সুর, কষ্টের কথকতা। গাছটি সযত্নে লিখে রাখে সে সব পাতায়, বিনিময়ে দেয় ছায়া তার- স্বস্তি প্রশান্তির।
দুষ্টু ছেলেমেয়ে ঢিল ছোড়ে, পেতে চায় ফল, মজার গল্পের ঝাঁপি খোলে বালক-বালিকাদল, কিশোর-কিশোরী ছোঁয় বাড়ন্ত বয়স, বুকে প্রেম জমে, আসে যুবক-যুবতী উন্মত্ত যৌবন তাড়নায়- ফিসফাস করে, চোখে চোখে খায় লুকোচুরি, খেলারাম খেলে ঘাসের কোমল আঙিনায়।
বিফলে যায় না কারুরই চাওয়া-পাওয়া। ছায়া দেয় গাছ, ফল দেয় বাতাসের ঝনঝন। কতো কথা শোনে গাছ নিরবে নিভৃতে একা- লিখে রাখে সকলের গোপন বুকের ব্যথা।
বৃদ্ধ-বৃদ্ধা আসে ছড়ি হাতে ধীর পায়ে, ক্লান্তিতে ঝিমুনি চোখে দেখে পথের পাথর; জীবন্ত জড়রা খোঁজে মৃত-জড়দের চোখ- এপারের জীবন বহে ওপারে অপার! গাছ দেখে, পাতা নাড়ে, জানায় স্বাগত, লিখে রাখে বৃদ্ধা ও বৃদ্ধের তাবৎ জীবনগাথা।
দিন যায়, রাত যায়, বছরও যায় শেষে, গাছটি ঝরায় পাতা শীতের হাওয়ায়।
সব লিখা কথা, গাছের সম্ভার ঝরে পড়ে, বুক পেতে জমা রাখে স্মৃতি সেইসব, বন্ধু পাথরটি তার চুিপসারে একা- এ যেন বসন্ত আশীর্বাদ শীতের সন্ধ্যায়।
পাথরের নিচে শায়িত কঙ্কাল তাদের পূর্ব-পুরুষ প্রভু; তাতেই উপহার, শ্রদ্ধাঞ্জলি গাছ ও পাথর খন্ডের। একেকটি প্রজন্মের গল্প শোনে সে অনন্তকাল- প্রতি বছর গাছ ও পাথরের কাছে একবার।
13.10.2006
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।