কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য নেওয়া হচ্ছে । তার জন্য চলছে ইন্টারভিউ ।
এমনই এক সাক্ষাৎকারের বিবরন:
প্রশ্ন : তোমার মা কে ?
উত্তর : সোভিয়েত ইউনিয়ন ।
প্রশ্ন : তোমার বাবা কে ?
উত্তর : আমাদের মহান নেতা কমরেড স্তালিন ।
প্রশ্ন : তোমার সবচেয়ে কাঙ্খিত স্বপ্ন কী ?
উত্তর : অচিরেই পুরোপুরি অনাথ হয়ে যাওয়া ।
দুই কয়েদির কথোপকথন :
-- আপনাকে ক্থবছরের জেল দিয়েছে ?
-- কুড়ি বছরের ।
-- কারন কী ?
-- এমনি । কোনও কারন ছাড়াই ।
-- মিথ্যে কথা । কারণ ছাড়া হলে তো দশ বছরের জেল হয় ।
সোভিয়েত দেশ ছেড়ে আমেরিকায় গিয়ে বসবাস করছিলেন এক ভদ্রলোক । সেখানে জমজমাট ব্যবসা করে একদিন রীতিমতো কোটিপতি হয়ে গেলেন তিনি । বয়সও হয়েছিল । দুঃখের বিষয়, আমেরিকা যাওয়ার সময় তাঁর পরিবারের সকলকে নিয়ে যেতে পারেননি । বিশষ করে ছোট নাতির জন্য তাঁর মন কেমন করত ।
ইতিমধ্যে ছোট শিশুটি যুবক হয়েছে । বৃদ্ধ কোটিপতি চিঠি লিখলেন নাতিকে -- যেভাবে পারো এখানে চলে এসো । এখানে আমাকে দেখাশোনা করার কেউ নেই । শরীরও বেশ খারাপ । তাছাড়া কোটি কোটি ডলারের এত বড় সম্পত্তির ভার তো তোমাকেই নিতে হবে, ইত্যাদি ।
যথারীতি কেজিবির হাতে পড়ল সেই চিঠি । নাতির ডাক পড়ল কেজিবি অফিসে । বাঘা অফিসাররা নাতিকে বললেন, ্তুআপনার দাদুকে চিঠি লিখে বলে দিন ব্যবসাপত্র গুটিয়ে টাকা-পয়সা সব এখানকার ব্যাঙ্কে ট্রান্সফার করে দিতে । তারপর তিনি এখানেই চলে আসুন । তাঁর যাতে এখানে কোনও অসুবিধে না হয় তার ব্যবস্থা রাষ্ট্রই করবে ।
্থ
নাতি উত্তর দিলেন, আপনারা, মশাই গোড়াতেই ভুল করছেন । দাদুর শরীর খারাপ হয়েছে ঠিকই । কিন্তু মাথাটা খারাপ হয় নি !
-- লেনিন পরতেন সাধারন জুতো, কিন্তু স্তালিন পরেন গামবুট । কেন ?
-- কারণ লেনিনের সময় দেশে নোংরামির পরিনাণ ছিল পায়ের পাতা পর্যন্ত । স্তালিনের সময় তা হাঁটু ছুঁই ছুঁই করছে !
হুবহু স্তালিনের মতো দেখতে একজনকে গ্রেপ্তার করে স্তালিনের কাছে নিয়ে এল কেজিবির লোকেরা ।
জানতে চাইল কী করা উচিত একে নিয়ে ?
-- গুলি করে মেরে ফেল, স্তালিন বললেন ।
-- না কি, গোঁফ ছেঁটে দেব কমরেড ?
-- হ্যাঁ, তাও করা যেতে পারে -- নির্বিকার স্তালিনের উত্তর ।
একা রাশিয়ান গেছেন ইতালি ভ্রমনে । সেখানে কোদাল কাঁধে এক শ্রমিকের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হল । রুশ পর্যটক কৌতূহলী হয়ে প্রশ্ন করলেন,
-- হপ্তায় ক্থদিনের কাজ পাও তুমি ?
-- মাত্র দু্থদিনের, সিনর !
-- খুবই খারাপ ।
আচ্ছা কমিউনিস্টরা যদি ইতালির ক্ষমতায় আসে, তাহলে সপ্তাহে ক্থদিন কাজ পাবে বলে আশা কর ?
-- ওহ সিনর, তাহলে তো আমাকে সাতদিনই কাজ করতে হবে -- দিবারাত্র ।
-- বাঃ তা কী কাজ কর তুমি ?
-- কবর খোঁড়াই আমার কাজ সিনর !
শ্রমিকদের সভায় রুশ শ্রমিক নেতা তাত্ত্বিক আলোচনা করছেন । তিনি বললেন :
-- কমিউনিজমের আসল নির্যাস হল প্রতিবেশীদের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নেওয়া ।
-- না কমরেড, এক শ্রমিক তাঁর বাস্তব জ্ঞান প্রয়োগ করে প্রতিবাদ জানালেন, আসলে ওটা হবে প্রতিবেশীদের ভাগটা নিয়ে নেওয়া !
শ্রমদিবসের প্যারেডে হাজিরা দেওয়ার জন্য রাবিনোভিচকে ডাকা হয়েছে কারখানার পার্টি শাখায় । তাঁকে বলা হল :
-- এই কারখানার সবচেয়ে প্রবীণ শ্রমিক হিসেবে আপনাকে কমরেড চেরনেনকোর প্রতিকৃতি বহনের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে ।
প্রতিবাদ জানিয়ে রাবিনোভিচ বললেন :
-- না কমরেড আমাকে এই দায়িত্ব দেবেন না । লেনিনের প্রতিকৃতি নিয়ে প্যারেডে গিয়েছি , লেনিন মারা গেছেন । গিয়েছি স্তালিনের ছবি নিয়ে, মারা গেছেন স্তালিনও । ক্রুশ্চেভের প্রতিকৃতি নিয়ে গিয়েছি, তিনিও গেছেন পরলোক । ব্রেঝনেভের ছবি নিয়েছি, তিনিও বিদায় নিয়েছেন পৃথিবী থেকে ।
আর এই তো ক্থদিন আগে বহন করেছি আন্দ্রোপভের প্রতিকৃতি । তিনিও আজ আর এই ধরাধামে নেই ।
পাশ থেকে এক শ্রমিক প্রস্তাব দিলেন :
-- শুধু চেরনেনকোর প্রতিকৃতিই নয়, রাবিনোভিচকে কমিউনিজমের লাল পতাকাও বইতে দেওয়া হোক ।
কমিউনিস্ট পার্টির তাত্ত্বিক নেতা শ্রমিকদের ক্লাস নিচ্ছেন :
-- আপনারা নিশ্চই এতদিনে জেনে গেছেন যে কমিউনিজম ইতিমধ্যে দিগন্তে পৌছে গেছে ।
-- দিগন্ত মানে কী, কমরেড ?
-- দিগন্ত হল একটা কাল্পনিক রেখা, যেখানে ভূমি মিশে যায় আকাশের সঙ্গে ।
আর দিগন্তের দিকে যত এগোনো যাবে, তত বেশি তা দূরে সরে যেতে থাকে ।
জাদুঘরে স্তালিনের মায়ের প্রতিকৃতির সামনে দাঁড়িয়ে একটি লোক খুব বিমর্ষ ভাবে মাথা ঝাঁকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল :
-- কী সুন্দরী মহিলা । কিন্তু কেন যে সময়মতো অ্যাবরশান করাননি !
মানুষের সুখের রকমফের :
কাজের শেষে ঘরে ফির এল জার্মান । বউ তাকে খেতে দিল ঝলসানো মাংস আর বিয়ার । ডিনার করে সে শুয়ে পড়ল বউকে জড়িয়ে ধরে ।
তারা সুখী ।
কাজকর্ম সেরে ইংরেজ ফিরে এল সন্ধ্যাবেলায় । স্ত্রীর সঙ্গে ডিনার করে কুকুরকে নিয়ে একটু বেড়াতে বেরোল সে । তারপর ফিরে এসে বউকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে পড়ল সে । তারা সুখী ।
হাড়ভাঙা খাটুনি খেটে বাড়ি ফিরল ফরাসি । বউকে ঘরে পেল না । এক বোতল শ্যাম্পেন নিয়ে সে চলল প্রেমিকার কাছে । তারা সুখী ।
কাজের শেষে রাজনৈতিক প্রোপাগান্ডার মিটিঙে বাধ্যতামূলক হাজিরা দিয়ে বাড়ি ফিরল রুশ দম্পতি -- ইভানভ আর ইভানভা ।
বেশ একচোট ঝগড়া হল দু্থজনের মধ্যে । ডিনারের প্রশ্নই ওঠে না । কারণ ঘরে খাওয়ার মতো কিছু নেই । তাই পরস্পরের দিকে পিঠ ফিরিয়ে বিছানায় শুয়ে পড়ল তারা । মাঝরাতে দরজায় কড়া নাড়ার শব্দ ।
-- কে ?
-- আমরা কেজিবি থেকে আসছি । দরজা খুলুন ।
দরজা খুলতে জনাদশেক লোক ঢুকল । নেতা গোছের একজন প্রশ্ন করল :
-- আপনারা পেত্রোভ আর পেত্রোভা তো ? গ্রেপ্তার করা হল আপনাদের ।
-- ভুল করছেন ।
আমরা পেত্রোভ আর পেত্রোভা নই, আমরা ইভানভ আর ইভানভা । পেত্রোভরা থাকেন উপরের ফ্ল্যাটে ।
দুঃখিত বলে কেজিবির লোকজন চলে গেল । একটু পরে ইভানভ আর ইভানভা জানলা দিয়ে তাকিয়ে দেখল পেত্রোভ ও তার স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাচ্ছে কেজিবি । গাড়ির দরজা বন্ধ হতেই শুয়ে পড়ল ইভানভ আর ইভানভা ।
তারা সুখী !
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।