'... আমাদের আশার কোনো পরকাল নাই'
শফিক রেহমান পালাতে চেয়েছিলেন, পারেননি। 104 জন সাংবাদিকের হাতে চাকরিচু্যতির নোটিশ ধরিয়ে দিয়ে, সাড়ে 4শ সংবাদকর্মীকে বেকার বানিয়ে আধুনিকতার খোলসে আপাদমসত্দক স্বার্থপর এই মানুষটি দেশ ছেড়ে ভাগতে চেয়েছিলেন এমিরেটস এয়ারে। যায়াযায়দিনের বিুব্ধ সাংবাদিকরা তাকে বিমান থেকে টেনে নামিয়েছেন। তার পকেটে পাওয়া গেছে আরো 3 টি এয়ারের টিকেট। মজার ব্যাপারটি হলো, শফিক রেহমান যাদেরকে চাকরিচু্যত করেছেন, তারা নয়, তার বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তারাই, যাদের চাকরি তিনি খাতা-কলমে খাননি।
খবর শোনার সঙ্গে সঙ্গে আমার 3 দিনের সহকর্মীদের অনেকের কাছেই ফোন করে জানলাম, সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে চাপ আসছে শফিক রেহমানকে যেতে দেয়ার জন্য।
ব্যক্তিগভাবে আমি শফিক রেহমানকে অপছন্দ নয়, রীতিমতো ঘৃণা করি। তিনি কোন রাজনীতি করেন, কার ভাষণ লিখে দেন, বিশ্বকাপ দেখা নিয়ে কার সাাৎকার ছাপেন, কাকে রাণী বানান, কাকে নোবেল দেন, মঈন-মিলার কী সম্পর্ক দাঁড় করান, সে নিয়ে আমার কোনো আপত্তি নেই। আমার আপত্তি তার শঠতায়। তিনি যায়যায়দিনে বু্যরো প্রধানদের নিয়ে বৈঠকে স্পষ্ট করে বলেছিলেন, বাংলাদেশে এখন যে সাংবাদিকতা চলছে তা ব্যাকডেটেড।
তিনি সেটাকে আপগ্রেটেড করতে চান! তার মতে, মানুষ জানতে চায়, হোটেল এ্যাথেনা নামটি কেনো হলো? মানুষ এখন আর দুঃখের কাসুন্দি পড়তে চায় না। বুঝুন অবস্থাটা, তার কাছে সাধারণ মানুষের বঞ্চনার চেয়ে একটি রাজকীয় হোটেলের নামের হেতু অনুসন্ধান মহান সাংবাদিকতার কাতারে পড়ে গেলো। আমি সেদিনই সিদ্ধানত্দ নিয়ে যোগ দেয়ার 3 দিনের মাথায় যায়াযায়দিন ছেড়ে পুরানো কর্মস্থলে ফিরি।
শফিক রেহমানের লেখায় কৌশল আছে অনেক, পড়তে মন্দও নয়। কিন্তু তার অনেক লেখাই শালীনতার সীমারেখা ছাড়িয়ে চলে যায়।
মানুষকে (বিশেষ করে আওয়ামী লীগ ও বাম নেতাদের) ধুতে ধুতে তিনি এমন অবস্থায় নিয়ে আসেন যে তখন মনে হয়, শফিক রেহমানের ইচ্ছেটা বোধহয় ছিলো অন্যকিছু! রাজনীতির ঘরে বুদ্ধি বেচে টুপাইস কামিয়ে নেয়ার েেত্র তার চেয়ে সফল আর কেউ কি হতে পেরেছে! সব মানুষের কাছে গ্রহণীয় একটি জনপ্রিয় সাপ্তাহিককে মুহূর্তেই তিনি নিজের স্বার্থ উদ্ধারের জন্য বন্দনাগীতিপত্র বানিয়ে ফেললেন! অথচ আমাদের দেশে ভালো সাপ্তাহিকের কতো না অভাব! শফিক রেহমান এভাবে পাঠকের সঙ্গে বেঈমানি করলেন কীভাবে! শফিক রেহমান নিজে গর্ব করে বলেন, 'আমার যায়যায়দিনে একমাত্র আবেদ খান ছাড়া দেশের আর সব বড় লেখকদের লেখাই কখনো না কখনো ছাপা হয়েছে। ' পত্রিকার চরিত্রে প্রকট দলবাজী ফুটিয়ে তুলে শফিক রেহমান সেই লেখকদেরও অপমান করেছেন।
হয়তো একসময় সব আলোচনা ফুরোলে শফিক রেহমান আবার কোনো নতুন ধান্দায় আত্মনিয়োগ করবেন। আমরা ভুলে যাবো, যারা ব্যথা পেয়েছেন তারা হয়তো ভুলবেন না। কিন্তু যারা ব্যথা পাননি তারা আবারো ছুটে যাবো শফিক রেহমানের কাছে।
হতেও পারে। কিন্তু যদি মনে রাখি, এই শফিক রেহমানই সেই লোক যিনি এর আগেও যায়যায়দিন প্রতিদিন নামে এক ট্যাবলয়েড বের করে কয়েকশ সংবাদকর্মীকে বেকার করেছে, তাহলে কি মন্দ হয়? আমরা যদি না ভুলি, এই শফিক রেহমান আবার নতুন করে সাড়ে 4 শ সংবাদকর্মীর জীবন বিপণ্ন করে তুলেছেন, তাহলে ক্যামন হয়? আসলে ইতিহাস কি এই ভণ্ডটাকে কখনো ভুলবে? তার জন্য কি বরাবর একরাশ থুথু আর ঘৃণাই জমা হয়ে থাকবে না? যুগ যুগ ধরে আর কেউ না বলুক, অনত্দতঃ আমি শফিক রেহমানকে বাংলাদেশের সাংবাদিকদের গণশত্রু বলে চিহ্নিত করবো। একই কথা আমি বলেই যাবো, দিনের পর দিন...।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।