এ ব্লগে আর কোন মৌলিক লেখার দরকার নেই, যেহেতু আমি আমার নিকৃষ্টতম লেখার স্বত্ব ও কাউকে দিতে রাজী নই
অতটুকুতেই তাকে নিয়ে গল্প লিখা যেতো ।
1931 এ নোয়াখালীর রামগঞ্জে যে মেয়ের জন্ম হলো, বছর কয়েক পর সে চলে এলো ফেনী শহরে । মেট্টিক পরীক্ষা দিলো । পাশ করতে পারলোনা । একাডেমিক পড়াশোনো আর হলোনা তার ।
সেই মেয়ে, সেই সময়ে কি করে নিজেকে এতোটা স্বশিক্ষিত করে তোললো? রোকেয়া হলের মেট্টন হলো, 'ললনা' নামের পত্রিকার সাংবাদিক হলো, তার পর এক সময় নিজেই সম্পাদনা শুরু করলো সাহিত্য পত্রিকা 'শিলালিপি' । এর ভেতর একবার বিয়ে ও হলো । ভেঙ্গে ও গেলো (বাংগালী পুরুষ অন্যের বউয়ের মেধায় মুগ্ধ হয়, নিজের বউয়ের মেধায় হয় হীনমন্য) । ততদিনে এক সন্তানের মা সেলিনা পারভীন ।
***********************************
সেই বিভীষিকাময় দিন গুলোতে ও সেলিনা পারভীন ঢাকা ছাড়েননি ।
প্রকাশ বন্ধ করেননি শিলালিপি'র ।
সর্বশেষ সংখ্যায় ছাপা হয়েছিল সিকান্দর আবু জাফর, শামসুর রাহমান(শমসের আনোয়ার নামে) স হ আরো কজনের স্বাধীনতার কবিতা ।
শিলালিপি'র ওই কপি বাজেয়াপ্ত করা হয় আর সম্পাদক সেলিনা পারভীন কে ক্ষমা প্রার্থনার জন্য নির্দেশ দেয়া হয় ।
সেই নির্দেশ অস্বীকারের পরিনাম - 14 ই ডিসেম্বর ঘর থেকে তাকে তুলে নেয়া ক্যান্টনমেন্টে আর তার পর দিন বধ্যভূমি!
**********************************
সেলিনা পারভীনের একমাত্র ছেলেকে বড় হতে হয়েছে ব্রাম্মনবাড়ীয়া'র এক এতিম খানায় ।
কৃতজ্ঞ জাতি তার স্মরনে দু' টাকা দামের ডাক টিকিট ছেড়েছে ।
সেলিনা পারভীনের ছবির পিছনে থুথু লেপ্টে আমরা চিঠি ছাড়ি ....
সদাশয় সরকার তার নামে ঢাকার একটা সড়কের নামকরন ও করেছেন । আর কেউ নয়, তার ছেলে একা একা দোকানে দোকানে গিয়ে অনুরোধ করেন সাইনবোর্ডে মায়ের নামের সড়কটা লিখার জন্য ।
ও ই সড়ক ধরে হয়তো ছুটে যায় রাস্ট্রীয় পতাকা বাহী কোন শকট, নিরাপত্তা বলয়ে ঘেরা কোন মহামান্য ।
35 বছর আগে সেলিনা পারভীনকে তুলে এনে ক্যান্টনমেন্টে পৌঁছে দিয়েছিলেন যারা...!
আর 35 বছর ধরে আমরা শবদেহগুলো ধর্ষন করে যাই ... কেননা বাঘ নই, আদতে আমরা যে হায়েনা ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।