পরিবর্তনের জন্য লেখালেখি
আমাদের অফিসে সাপোর্টস্টাফ হলো জব্বার ভাই। চা, কফি থেকে শুরু করে যাবতীয় ফাই ফরমায়েশ তার কাছে। আমাদের অনেক, মানে বেশির ভাগ, টপ বসদের ও অনেক অনেক আগে থেকে উনি এখানে চাকরী করেন। বেশির ভাগ বস তাই এই বর্ষীয়ান মানুষটাকে সমীহ করে কথা বলেন, হুকুম করেন না!
তার দোর্দন্ড প্রতাপের নমুনা-
বসঃ জব্বার ভাই, কিছু নাস্তা না দিলে মিটিং করি কি করে? খিদা লেগেছে তো!
জঃ মিটিং করার দরকারটা কি? স্বাস্থ্য খারাপ হইয়া যাইতাসে, যান ! বাসায় যান!
প্রোগ্রাম এ্যাসিস্ট্যান্ট ঃ [ বাজখাঁই গলায়] চা কই?
জঃ [ নির্বিকার] দোকানে!
আমার সাথে এ হেন টক-ঝাল-মিষ্টি জব্বার ভাইয়ের সম্পর্কটা স্নেহের! আশে পাশের সবাই তার কাছে চা-কফি চায়। আমি কখনোই চাই না। বরং , না চাইতেই যখন দিয়ে যায়, আমি আমার বিখ্যাত ভুবন ভোলানো হাসিটা দেই!!
বিনা বাক্য বিনিময়ের কথোপকথনটা অনেক বেশি আদুরে, কোন আবদার আহলাদ নেই বলেই হয়ত আমি তার কাছে ভীষন আহলাদী!
রোজ দুপুরে তার সাথে আমার কথোপকথনটা এরকম-
জঃ আপা খাইসেন?
আমিঃ এ্যাঁ...আম.....এই তো যাচ্ছি!
জঃ অকখনি যান! [ একটু রাগত]
আমিঃ না....মানে ......হাতের কাজটা.....
জঃ [ ফেটে পড়া রাগে] আর একবার কইতে হয় যদি.....!!!!!!!
এই সব ভালবাসার কোন নিয়মকানুন, শ্রেনী, সং গা, যুক্তি নেই। এই যে , ' আমাকে চা দিয়ে কিছুক্ষন পরে আবার এসে মনে করিয়ে দেওয়া যে চা টা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে অথবা রোযায় আমাকে চা-কফি দেওয়া যাচ্ছে না বলে মন খারাপ করে আমার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা'......- এর কোন ব্যাখ্যা আছে? নেই। শুধু , জানি, এর চেয়ে খাঁটি ভালবাসা আর নেই!!
কেউ যখন শর্ত হীন, যুক্তি হীন, স্বার্থ হীন ভালবাসে- তো সেই ভালবাসাকে বদলাতে যাওয়া বৃথা!
তাকে বোঝাতে যাওয়া বোকামি!
আর তর্ক করাটা রীতিমত নির্মম!
মাথা পেতে গ্রহন করাটাই সঠিক পন্থা ।
আমি তাই নির্মল ভালবাসার সামনে সম্পূর্ণ নত হই প্রতিদিন। গ্রহন করি প্রচন্ড শ্রদ্ধাতে , প্রাণের আনন্দে............ভোঁ দৌড় লাগাই উঠে , 5 তলায়, ডাইনিং -এ আরেক বার বকা খাওয়ার আগেই!!!!
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।