আপনি যদি সুন্দর দৃশ্য অবলোকন করতে চান ,জানালার পর্দাটা একটু সরিয়ে দিন, আর নখত্র খচিত আকাশ উপভোগ করুন। "
"ভাই,একটা লিফ আর একটা বেনসন দেন। "ক্রেডিট কার্ড use করতে করতে অভ্যাস খারাপ হয়ে গেছে। মানিব্যাগ এ এখন একটা ১টাকা , একটা ৫ টাকা , আর দুইটা ২ টাকার নোট। সিগারেট কিন্তে ১৩ টাকা শেষ আর ৬ টাকা আছে পকেট এ ।
ঢাকা শহর এ একজন ফকির ও ৬ টাকা নিয়ে ঘুরে না । তবু, ২ বছর পর গোল্ড লিফ খাওয়ার সুবর্ণ সুযোগ মিস করতে চাইলো না সে ।
ছোট একটা বিড়ি-সিগারেটের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে আছে সুমন।
তার গন্তব্য স্থান রমনা পার্ক ..একটা গান শোনা যাচ্ছে। একজন সাইকেল চালক বুক পকেটের মধ্যে একটা চায়না সেট এ গান দিয়া মহানন্দে সাইকেল চালিয়ে যাচ্ছে ।
কোন বাংলা সিনেমার গান হতে পারে ,সে বুঝতে পারছে না । একটা বাচ্চা তার বাবার কোলে উঠে পেছনের দিকে মুখ করে চোখ গোল গোল করে সুমনের দিকে তাকিয়ে আছে। সুমন মনে মনে বললো,"ঐ পিচ্চি আমি বাদর নাকি???ঐভাবে দেখার কী আছে???"বাচ্চাটা তাও তাকিয়ে থাকলো। পাত্তা না দিয়ে সুমন এগিয়ে গেল।
রমনা পার্ক এর গেট এর কাছে এক বেবি ট্যাক্সি ওয়ালা এক রিক্সাওয়ালা কে কুৎসিত ভাষায় গালিগালাজ করছে।
রিক্সাওয়ালা কম না,দ্বিগুণ তেজে গালি বর্ষণ করছে.......।
পার্ক এ ঢুকল সে,বৃক্ষ সুশোভিত রমনা পার্কের সেই চিরচেনা বেঞ্চ এ বসলো সুমন। চোখের কোনে লেগে থাকা সৃতি গুলো ভেসে উঠছে। সব আগের মতই আছে। শুধু তার পাশে তার প্রিয় মানুষ টি নেই।
২ বছর আগেও যে তাকে ছাড়া এক মুহূর্ত ভাবতে পারতো না আজকে সে পরের ঘরে কী সুন্দর ঘর-সংসার করছে।
সে ভাবলো। শেষ দিনটায় ,সে বসেছিল সুমন এর ২ হাত দূরে। কারণ সিগারেটের গন্ধটা সে সইতে পারতো না, তার রাগ বাড়িয়ে দেওয়ার জন্যই সুমন এর আয়েশ করে তার সামনে সিগারেট টানত । অন্যদিন সে সিগারেট না খাওয়ার পেছনে ১০১ টা যুক্তি দেখাত।
কিন্তু সেদিন কিছু না বলে সব সইছিল।
সুমন বুঝল সিরিয়াস কিছু হয়েছে। সে আজ ঝগড়া করার মোড এ নাই। আসলে, ফ্লাইট এর দিন টা যতই কাছে আসছিল তাদের সম্পর্কতা ততই নড়বড়ে হয়ে যাচ্ছিল। আজকে,হৃদয় খান এ কাজ হবে না,নতুন কিছু ডায়ালগ লাগবে।
কিন্তু নতুন কিছুই মাথায় আসছিল না।
মাধবী (মে টার নাম) আসার আগে ফুয়াদ/হাবীব আর ২/৩ টা গান শুনলে ভালো হত। যাই হোক শুনা যখন হয় নি আফসোস করে লাভ নাই। অনেক কথাই হয়েছিল সেদিন । মূল কথা ছিল অনেকটা এমন:
"তোমার জন্য ২ বছর অপেক্ষা করে কোনভাবেই আমার পক্ষে সম্ভব না ! "
সুমন সেদিন কিছুই বলে নি , নিজের ক্যারিয়ার টাকেই সে বেছে নিয়েছিল।
কারন,পালিয়ে বিয়ে করের পর লটারির টিকিট জিতে গাড়ি, বাড়ি কিনে কোটিপতি হওয়া একমাত্র বাংলা সিনেমাতেই সম্ভব। বাস্তবতা নিষ্ঠুর।
সে ভেবেছিল তাদের সম্পর্কতাও তেমন গভীর ছিলো না। ভেবেছিল, মাধবী তাকে ভুলে যাবে। হয়ত ভুলেও গেছে।
কিন্তু মজার ব্যাপার সে নিজেই ভুলতে পারে নি। হাঃহা.......কিন্তু এতদিন পরে তার মনে হচ্ছে অনেক অল্প সময়েই তাকে ভালবেসে ফেলেছিল।
একটা গান এর কথা মনে পড়ছে,"হঠাৎ বেজে ওঠে কানে ,সেই প্রিয় সুর........কে যেন পিছু ডাকছে আমায়,পুরোনো সেই ঠিকানায়......!!."গানের কথা এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে ,গলা খূসখূস করছে,"বেনসন" টা ধরানোর সময় হয়েছে !
যাই হোক। এখন সে সফল,তবু তার মনে হচ্ছে সে ব্যর্থ । বাবা মা টার জন্য পাত্রী দেখা শুরু করেছে ।
হয়ত বাবা মা এর ইচ্ছা অনুযায়ী কোনো এক মাধবীর স্বপ্ন চুরমার করে তাকে বিয়ে করতে হবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।