'... আমাদের আশার কোনো পরকাল নাই'
রাজশাহীতে সড়ক ও জনপথ বিভাগের সেই জমিতে আরসিসি পিলারের নির্মাণ কাজ শুরু করেছে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল কর্তৃপ। রাজশাহীর নওদাপাড়া এলাকায় সরকারের অধিগ্রহণ করা ওই জমি দখলের প্রতিবাদে ইসলামী ব্যাংক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপরে বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়ে গত সপ্তাহে স্থানীয় দুই ওয়ার্ড কমিশনারের নেতৃত্বে এলাকাবাসী সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলীকে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এরপর সড়ক ও জনপথ বিভাগ থেকে শামখদুম থানায় এ ব্যাপরে একটি লিখিত অভিযোগ করা হলেও নির্বিঘ্নে চলছে নির্মাণ কাজ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী-নওগাঁ সড়কটি প্রশস্ত করার জন্য 1962 সালের 26 ডিসেম্বর এক নির্দেশে নওদাপাড়া বর্তমান বিএডিসি গেটের বিপরীত এলাকায় 1.87 একরের 17 টি প্লট সরকারি নিয়মে অধিগ্রহণ করে সওজ। 1961-62 সালের মূল ভূমি হুকুম দখলের ফাইল অনুযায়ী অধিগ্রহনকৃত প্লটগুলোর মধ্যে 2063 ও 2064 নম্বর প্লট দু'টি পাশপাশি অবস্থিত।
এই দু'টি প্লটের পরিমাণ .59 একর। অধিগ্রহণের আগে 2063 প্লট নম্বরের জমিটির প্রকৃত মালিক ছিলেন জীবনকৃষ্ণ মণ্ডলের পুত্র কালিপদ মণ্ডল এবং 2064 প্লট নম্বরের জমিটির মালিক ছিলেন পূর্ণ চন্দ্র মণ্ডলের পুত্র অধীর কুমার মণ্ডল। 2003-2004 শিাবর্ষ থেকে যাত্রা শুরু করা রাজশাহীর ইসলামী ব্যাংক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মূল ক্যাম্পাস নির্মাণের জন্য কর্তৃপ নওদাপাড়া বিএডিসি গেটের সামনে সওজ'র জমির পাশে 6 একর জমি কেনে। 2003 সাল থেকেই তারা নিজেদের জমি ঘিরে নিতে শুরু করে। পরের বছর এসে তারা সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধিগ্রহণকৃত 2063 ও 2064 নম্বর প্লট দু'টিও ঘিরে নেয়।
এরপর তারা শুরু করে ভবনের নির্মাণ কাজ। স্থানীয় এলাকাবাসী সেই সময় কয়েকবার বাধা দিলেও তাদের বাধা না মেনেই চলে ওই দখল প্রক্রিয়া। বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ করা হলে তিনি সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলীকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য বলেন। বিষয়টির সত্যতা মেলায় সওজ কর্তৃপ ইসলামী ব্যাংক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপকে ওই দু'টো প্লট দখল না করতে কয়েক দফা মৌখিক নির্দেশ দেয়। কিন্তু তা না মেনে হাসপাতাল কর্তৃপ দু'টি সরকারি প্লটেই মাটি ভরাটের কাজ শুরু করে।
এ ব্যাপারে এ বছরের 5 মার্চ সমকালে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হবার পর তড়িঘড়ি করে ওই জমিতে আরসিসি পিলার দিয়ে স্থাপনা নির্মাণের কাজ শুরু করে ইসলামী ব্যাংক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপ।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে সমকালে সংবাদ প্রকাশিত হবার পর দখল প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে এলাকাবাসী একাধিকবার সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করেও কোনো ফল হয়নি। 26 মার্চ রাজশাহী সিটি করপোরেশনের 17 নম্বর ওয়ার্ড কমিশনার শাহাদত হোসেন শাহু ও ওই এলাকার সংরতি মহিলা কমিশনার আঞ্জু আহমেদসহ শতাধিক এলাকাবাসী নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেন। পরদিন 27 মার্চ রাজশাহী সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী সুরুজ মিয়া স্বারিত এক লিখিত অভিযোগে শাহমখদুম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে ওই স্থাপনা নির্মাণ বন্ধের ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানানো হয়। তবে সড়ক ও জনপথের এই অভিযোগের পরেও নির্মাণ কাজ চলছে বহাল তবিয়তে।
#
প্রতিবেদনটি এ বছরের 2 এপ্রিল সমকালের লোকালয় পাতায় প্রকাশিত হয় ছবিসহ। এই প্রতিবেদনটিরও প্রতিবাদ দেয়নি ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজ।
শেষ কথা : প্রশাসন এখনো কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি। দখল করা জমিতেই দিব্যি ভবন নির্মাণ করে কাজকাম শুরু করা হয়েছে। নামজারির মামলাটিও খারিজ হয়নি।
বাহ, ইসলামের কী দুর্দান্ত নমুনা!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।