আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দিক-দিগন্ত ( আবর্জনাকে সারে রূপান্তর )



বর্জ্য আবর্জনা হইতে যে নিত্যদিন দুঃসহ দুর্গন্ধ ছড়ায় চারিদিকে, তাহা শহরের বাসিন্দা মাত্রই অবগত আছেন। বর্জ্যের মধ্যে থাকে খাবারের উপকরণ। ভোরবেলায় এই আবর্জনা রাসত্দার পাশ্বর্ে জমা হয়। আবর্জনার দুর্গন্ধ পরিবেশকে দূষিত করে। আবর্জনার সত্দূপ হয় বিশাল।

এই বিশাল আবর্জনার একটা অতি ৰুদ্র অংশই গরীবের ছেলেমেয়েরা কুড়াইয়া নেয়। এই আবর্জনাকে সারে রূপানত্দরের জন্য অধুনা এক বিশেষ প্রক্রিয়া উদ্ভাবিত হইয়াছে। আবর্জনাকে সারে রূপানত্দরের এই নূতন প্রক্রিয়ায় এক জাতের লাল কেঁচো ব্যবহার করা হয়। কেঁচোগুলি মাটির অভ্যনত্দরে থাকে। বর্জর্্য পদার্থের মধ্যে দূষিত পদার্থ থাকে।

এই দূষিত পদার্থই দুর্গন্ধ ছড়ায়। লাল কেঁচো খাদ্যের দুর্গন্ধময় পদার্থ ভৰণ করে। ফলে দুর্গন্ধ দূর হয়। মাটিও ঝুরঝুরে মাটিতে রূপানত্দরিত হয়। এই মাটি সার হিসাবে দুর্দানত্দ কাজ করে।

এই প্রসঙ্গে উলেস্নখ করা যায় যে, রাসায়নিক সার হিসাবে বাজারে যাহা বিক্রয় হয়, সেটা পরিবেশের জন্য ৰতিকর। গবেষণায় দেখা গেছে যে, মাত্র 6টি কেঁচো যদি পরিবেশগত সাহায্য পায়, তাহা হইলে তিন মাসের মধ্যেই কেঁচোর সংখ্যা দুই হাজারে বৃদ্ধি পায়। ফলে বর্জ্য পদার্থ বেশী পরিমাণে তাহারা খাদ্যরূপে গ্রহণ করিতে পারে। এখানে উলেস্নখ করা যায় যে, বর্জ্য খাবারের মধ্যে সবুজ শাক-সবজি, ফলমূলের খোসা, চা পাতা, ভাত, ডাল, সিঙ্গাড়া, বিস্কুট, নুডুলস, ঘাস, ফেন ইত্যাদি থাকে। তবে তাপমাত্রা থাকিতে হয় 10 ডিগ্রী হইতে 40 ডিগ্রী পর্যনত্দ।

সার প্রস্তুতের জন্য লাল কেঁচোর ঘর সাজাইতে হয়। প্রথমে দিতে হইবে ইটের আসত্দরন। ইহার পর নারিকেলের ছোবড়া দিতে হয়। তাহার পর দিতে হয় শুষ্ক গোবর এবং পরের আসত্দরনে থাকে মাটি। শীর্ষে দিতে হয় বর্জ্য খাবারের আসত্দরন।

গ্রামে লাল কেঁচো পাওয়া যায়, লাল কেঁচো বর্জ্য আবর্জনাকে সারে পরিণত করে। বাতাসে দুর্গন্ধ আসে এমন পচনশীল উপকরণকে এই প্রক্রিয়ায় উৎকৃষ্ট সারে পরিণত করা সম্ভব। সারে কোন দুর্গন্ধ থাকে না। এই প্রক্রিয়ার তিন মাসের মধ্যেই বর্জ্য খাদ্য সামগ্রী উৎকৃষ্টমানের সারে পরিণত হয়। এই প্রক্রিয়ায় কেঁচোর ঘরকে বলা হয় ভারসিপিট।

তবে সার নেওয়ার সময় বিশেষ যত্ন নিতে হয়। যেন কেঁচোগুলি নষ্ট হইয়া না যায়। বিদেশে এইসব কেঁচো বিক্রয় হয়। কেঁচোর মাধ্যমে যে সার উৎপাদন হয় তাহা বাজারের সার হইতে উৎকৃষ্ট। কেঁচোগুলিকে রাখা হয় আলো-ছায়ার মধ্যে।

সাধারণত কোন গাছের নীচে বা দেওয়ালের পাশ্বর্ে। কেঁচোর সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে খাবারের পরিমাণও বৃদ্ধি করা জরম্নরী। শক্ত জমি এবং মরম্নভূমিতে এই সার খুবই কাজ দেয়। যেখানে সাধারণত কোন গাছপালা হয় না। যেইসব জায়গায় এই সার খুবই কাজ দেয়।

অনেকে আশা করেন যে, আগামীতে এই সার রাসায়নিক সারের বিকল্প হিসাবে ব্যবহৃত হইবে। ঃঃ দৈনিক ইত্তেফাক ঃ 19.007.2006 ঃঃ

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।