আমি সত্য জানতে চাই
মিনাকে তো আমরা সবাই চিনি। মিনা একটি প্রতিকী চরিত্র। এই চরিত্রের মাধ্যমে শিশুদের আধিকার, শিক্ষা, সাংস্কৃতি, বিনোদন, শারীরিক ও মানসিক ভাবে বেড়ে ওঠার চিত্র ফুটে উঠে। মিনা কার্টুনে একটি পরিবারের কাহিনী ফুটে উঠেছে। সেখানে মিনা সময়মত স্কুলে যায়, বন্ধুদের সঙ্গে খেলাধুলা করে, পরিবারের বিভিন্ন কাজে সহযোগীতা করে,অন্যের বিপদে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসে।
আমাদের প্রিয় সেই মিনার টিয়া পাখি মিঠু আর ছোট ভাই এর নাম রাজু। সে কিন্তু গ্রামের মেয়ে। ছোট ভাই রাজু ছাড়াও তার পরিবারে আছে বাবা-মা, বোন আর দাদী। আদরের টিয়া পাখি মিঠু সারাক্ষণ মিনার সঙ্গেই থাকে। কার্টুনটি আমাদের অনেকেরই প্রিয় কারণ এখানে মিনার অনেক বুদ্ধিমত্তা ও সাহসিকতা আমরা দেখেছি।
সবার জন্য ভালো কিছু করতে মিনা সবার আগেই থাকে। সবসময়ই তার আগ্রহ, কিসে এলাকার মানুষের উপকার হয়। কিভাবে বুদ্ধি করে সে চোর ধরেছিলো তা তো আমরা দেখেছি। এতে অবশ্য এটাও বোঝানো হয়েছে যে শিক্ষা কতোটা গুরুত্বপূর্ণ। শুধু কি তাই, মিনা তার বাবাকে ঠকে যাবার হাত থেকেও বাঁচিয়েছিলো।
এজন্যই মিনা কার্টুন সারা পৃথিবী জুড়েই ব্যাপক ভাবে জনপ্রিয়। এজন্য বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর মিনার জন্মদিন হিসেবে পালন করা হয়। প্রায় প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এই বিশেষ দিনটি বিভিন্ন প্রতিযোগিতা ও উৎসব উদযাপন করা হয়। মিনা দিবসে বিশ্বের সব শিশুদের সম অধিকার প্রতিষ্ঠিত হোক-–এই প্রত্যাশা আমাদের।
'মানসম্মত শিক্ষা পেলে শিশু বিবাহ ও শিশু শ্রম রোধ হবে' এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশে আজ পালিত হচ্ছে মীনা দিবস।
শিশুদের বিদ্যালয়ে লেখা পড়ার সাথে সাথে তাদের অন্যান্য ভাল অভ্যাস যেমন চিত্রাঙ্কন, নাচ গান, খেলা ,সাস্থ্য সচেতন ও তাদের সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার জন্য জাতিসংঘ আমাদের দেশের শিশু দের উদ্বুদ্ধ করে আসছে।
এই কর্মসূচিকে জনপ্রিয় করে তোলার জন্য সার্ক প্রতি বছর ২৪ সেপ্টেম্বর দিনটিকে মীনা দিবস হিসেবে পালনের ঘোষণা দেয়। প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল পর্যন্ত তার ফলশ্রুতিতে গ্রামাঞ্চলের শিশুরা অনেক এগিয়ে গেছে বিগত দিন গুলো থেকে। তাই প্রতি বৎসর এ দিনটি বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলের শিশুরা উৎসব ও প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহন করে।
পৃথিবীর অন্যান্য অঞ্চলের মতো দক্ষিণ এশিয়ার আর্থসামাজিক অবস্থা খুবই নাজুক।
দারিদ্র্য, অশিক্ষা, কুশিক্ষা, কুসংস্কারে আচ্ছন্ন এই সমাজে সবচেয়ে বেশি দুর্দশাগ্রস্থ মেয়েরা। কিছু কিছু দক্ষিণ এশীয় দেশে মেয়েদের স্কুলে ভর্তির হার ছেলেদের তুলনায় ৫০% বেশী কম। ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের পুষ্টির মাত্রাও কম। মেয়েদের সমস্যার প্রতি মনোযোগের সঙ্গে গুরুত্ব প্রদান ও তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার উপলব্দি থেকে দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা পরিষদ ১৯৯০ দশককে কন্যা শিশু দশক হিসেবে ঘোষণা করেছিল। এই ঘোষণার আলোকে দক্ষিণ এশিয়ার ইউনিসেফ এবং তাঁর সহযোগীদের মিলিত উদ্যোগে মীনা কার্টুন, কমিক বই ও শিক্ষা উপকরণ তৈরি করা হয়।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশসমূহে মেয়ে শিশুর সম অধিকার প্রতিষ্ঠা ও মেয়ে শিশু ইস্যু আরও জোরদার করে তোলার প্রতীক হিসেবে মীনা চরিত্রটিকে বেছে নেয়া হয়। উল্লেখ্য বাংলাদেশে প্রথম ১৯৯৫ সালে বিটিভিতে মিনা কার্টুন দেখানো শুরু হয়েছিলো। তারপর থেকে বাংলাদেশের ছেলেবুড়ো প্রত্যেকের কাছেই মিনা দারুণ জনপ্রিয়।
আজ মিনা দিবসে মিনা থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা কোন শিশুকেই অবহেলা না করে শিশুরা যেন ভবিষ্যতে সুন্দর পরিবেশে বেড়ে উঠতে পারে সে লক্ষ্যেই সবাইকে এক সঙ্গে কাজ করতে হবে। তাহলেই আমরা দেশ ও জাতী হিসাবে বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাড়াঁতে পারবো।
মিনা দিবসে বিশ্বের সব শিশুদের সম অধিকার প্রতিষ্ঠিত হোক-–এই প্রত্যাশা আমাদের সবার।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।