২৬-২৭ মে ঢাকায় বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দ্বিতীয় অংশীদারি সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়ে গেল। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের আন্ডার সেক্রেটারি অব স্টেট ফর পলিটিক্যাল অ্যাফেয়ার্স ওয়েনডি শারমেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন। অপর দিকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব শহীদুল হক বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন। মার্কিন প্রতিনিধিদলে লক্ষণীয়ভাবে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র দপ্তরের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অব স্টেট (আন্তর্জাতিক ও বাণিজ্যিক বিষয়াবলি) হোজে ফার্নান্দেজ, ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অব স্টেট (গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও শ্রমবিষয়ক) ক্যারেন হ্যানবেহান ও একই দপ্তরের ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অব স্টেট (জ্বালানি) রিচার্ড আইকড। এ ছাড়া ছিল ৩০ জনের একটি মার্কিন প্রতিনিধিদল।
মার্কিন প্রতিনিধিদলের চেহারা দেখলেই বোঝা যাবে এ সংলাপে তাদের নজর কোন দিকে ছিল।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একসময় রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালনের সুবাদে ঢাকায় বিভিন্ন বাণিজ্যিক চেম্বার আমাকে বিভিন্ন সময় তাদের কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানায়। বলা বাহুল্য, আমি সাগ্রহেই তাদের এসব আমন্ত্রণে সাড়া দিই। এবার মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাস্ট্রিজ তাদের প্রতিনিধিদলের একজন সদস্য হিসেবে আমাকে অন্তর্ভুক্ত করে অংশীদারি সংলাপের বিজনেস টু বিজনেস অংশে অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়। এ ছাড়া আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশ (অ্যামচেম) চেম্বারের নেতারা তাঁদের অনুষ্ঠানে যোগদানের আমন্ত্রণ জানিয়ে আমাকে কৃতজ্ঞতাপাশে আবদ্ধ করেছেন।
এসব সুবিধার কারণে আমি সংলাপের বেশ কয়েকটি সেশনে অংশ নেওয়ার সুযোগ লাভ করি এবং দুই পক্ষের আলোচনার প্রাধান্যের দিকগুলো বুঝে নিতে চেষ্টা করি।
এ কথা নিশ্চিতভাবেই বলা চলে যে তাজরীন ফ্যাশনস ও রানা প্লাজা ধসে ব্যাপক প্রাণহানির ঘটনার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে পোশাকশিল্পে কর্মপরিবেশ, নিরাপত্তা ও শ্রমিক অধিকারের বিষয়টি ছিল এবারের সংলাপের কেন্দ্রবিন্দুতে। প্রায় দুই মাসে বাংলাদেশের শ্রমিক অধিকার, শ্রমিকদের কর্মপরিবেশ ও নিরাপত্তার অভাব নিয়ে বহির্বিশ্বে যে পরিমাণ নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে, তা বহু বছরেও দেখা যায়নি। এমন দিন খুব কমই গেছে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো না কোনো পত্রিকা বা টেলিভিশনে বাংলাদেশের প্রাণহানি ও শ্রমিকদের দুর্দশার কথা প্রচার পাচ্ছে না। এর আগেও মাঝেমধ্যে তেমনটি লক্ষ করা যায়নি তা কিন্তু নয়, তবে এবার যে ব্যাপ্তি ও গভীরতা নিয়ে বিষয়টি আবির্ভূত হচ্ছে, তা অভাবিতই বলা চলে।
যাঁরা বাইরের পৃথিবীর খোঁজখবর রাখেন, তাঁরা বিষয়টির গুরুত্ব ভালো করেই উপলব্ধি করতে পারছেন, যদিও দেশে অনেকেই এ ধরনের ঘটনাকে নিয়মিত বা রুটিন প্রতিক্রিয়া হিসেবেই দেখছেন।
কয়েকটি বিষয় উল্লেখ করা প্রয়োজন, যার বেশির ভাগ মার্কিন প্রতিনিধিদলের নেত্রী ওয়েনডি শারমেন ও অন্যরাও জোরালোভাবে উপস্থাপন করে গেছেন। প্রথমত, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে এমন একটি ধারণা দানা বেঁধে উঠেছে যে আমরা বিষয়টিকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করছি না। হয়তোবা আমাদের কারও কারও বক্তব্য এতে ইন্ধন জুগিয়ে থাকতে পারে।
তবে মনে রাখা দরকার, যেকোনো ধারণা তৈরি হতে পারে নানা প্রেক্ষাপট থেকে এবং এর সঙ্গে বাস্তব পদক্ষেপের তফাত থাকতেও পারে।
যেমন সরকারিভাবে অনেক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, কিন্তু এগুলো কতটুকু বাস্তবায়িত হবে তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে। দ্বিতীয়ত, এমন ধারণাও দানা বেঁধে উঠেছে যে বাংলাদেশে আইন প্রয়োগের বিষয়ে ব্যাপক গাফিলতি রয়েছে এবং ভবিষ্যতে এ অবস্থার উন্নতি হবে তেমন আশা ক্ষীণ। এমনটাও শোনা গেছে যে প্রতিনিধিদল রানা প্লাজার মতো আরও দুর্ঘটনার আশঙ্কাও করেছে, যদিও আমরা কেউই তা চাই না। তৃতীয় যে বিষয়টি তাদের সবচেয়ে বেশি নাড়া দিয়েছে তা হলো নিজেদের কর্মপরিবেশ, নিরাপত্তা ও কল্যাণের ব্যাপারে পোশাকশিল্পের শ্রমিকদের মতামত প্রদানের সুযোগ না থাকা। বরং তাঁদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া সিদ্ধান্ত তাঁদের মৃত্যুর গহ্বরে ঠেলে দিয়েছে এবং দিচ্ছে।
চতুর্থ বিষয়টি হচ্ছে বিশ্বাসের ঘাটতি। বিভিন্ন উপলক্ষে আমরা বিভিন্ন পর্যায়ে শ্রমমান, কর্মপরিবেশ উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েও তা রক্ষার সুনির্দিষ্ট উদ্যোগ গ্রহণ করিনি। তাতে আমাদের বক্তব্যের ওপর তাদের বিশ্বাসের ভিত্তিটা খুবই দুর্বল হয়ে পড়েছে।
এর পাশাপাশি মার্কিন ও ইউরোপীয় ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলোর গাফিলতির বিষয়টিও সমান গুরুত্ব নিয়ে সামনে এসেছে এবং পাশ্চাত্য জগতে ভোক্তারা এসব প্রতিষ্ঠানের বাণিজ্য পরিচালনার কৌশল নিয়েও কঠিন কঠিন প্রশ্ন তুলে তাদের তুলাধোনা করছেন। প্রকৃতপক্ষে এ ভোক্তাশ্রেণীর চাপেই এখন বড় বড় ক্রেতা সংস্থাসহ সেসব দেশের সরকারগুলো নড়েচড়ে বসতে বাধ্য হয়েছে।
আমার বন্ধুদের কাছেই শুনেছি যে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর বড় বড় ক্রেতা সংস্থাকে ডেকে তাদের কর্মপরিকল্পনা ও কৌশলে আমূল পরিবর্তনের নির্দেশ দিয়েছে। এটি আমাদের জন্য একটি ভালো খবর এবং একটি যথার্থ ইঙ্গিতও বটে।
অন্যদিকে, ক্রেতা সংস্থাগুলোও নিজেদের মতো করে পোশাকশিল্পে নিরাপত্তা ও শ্রমমান রক্ষার জন্য সচেষ্ট হয়েছে। এর মধ্যে ইন্ডাস্ট্রিয়ালের আওতায় ইউরোপীয় ক্রেতারা এবং অপর দিকে মার্কিন ক্রেতা সংস্থাগুলো নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে একটি পথ খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে। বাংলাদেশেও আমরা কিছু কিছু উদ্যোগ লক্ষ করছি।
যেমন সম্প্রতি ২০০৬ সালের শ্রম আইন সংশোধনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে এবং মন্ত্রিপরিষদ ইতিমধ্যেই খসড়া অনুমোদন করেছে। খসড়াটি এখন জাতীয় সংসদের বিবেচনার জন্য যাবে। অন্যদিকে, শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধির অব্যাহত দাবির মুখে সরকার মজুরি বোর্ড গঠনের ঘোষণাও দিয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, অতি দ্রুত এ বোর্ডের সদস্যদের নাম ঘোষণা করা হবে এবং তারা যত দ্রুত সম্ভব তাদের রিপোর্ট সরকারের বিবেচনার জন্য উপস্থাপন করবে। এটিও আশা করা হচ্ছে যে তারা শ্রমিকদের স্বার্থের কথা বিবেচনায় রেখে একটি সম্মানজনক ন্যূনতম মজুরিকাঠামো প্রস্তাব করবে।
রানা প্লাজায় নিহত ও আহত শ্রমিকদের জন্য সরকার এবং বিজিএমইএ থেকেও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সন্দেহ নেই, এতে সাময়িক সহায়তা হয়তো মিলবে কিন্তু পোশাকশিল্পের দীর্ঘমেয়াদি স্বার্থে এবং বাংলাদেশের সামগ্রিক অর্থনীতির বিবেচনার আরও একটু গভীর চিন্তার প্রয়োজন রয়েছে। আশার কথা হচ্ছে, এ নিয়ে অনেকেই ভাবতে শুরু করেছেন। সে ভাবনাকে শাণিত করার লক্ষ্যে কয়েকটি প্রস্তাব বিবেচনায় নেওয়া যেতে পারে।
ক. বাংলাদেশের পোশাকশিল্পের সম্ভাবনা অনেক।
গত বছর ম্যাকেঞ্জি রিপোর্টে এ সম্ভাবনার একটি ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ২০২০ সালের মধ্যে প্রায় ৪৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ পোশাক রপ্তানি করতে পারবে এবং এতে করে আরও তিন মিলিয়ন নারীশ্রমিকের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। সম্ভাবনাটি নিঃসন্দেহে উৎসাহব্যঞ্জক। তবে তা অর্জন করতে হলে অনেক কাজ আমাদের করতে হবে। প্রথমত, শ্রম আইন আধুনিকীকরণ করতে হবে, যাতে ইতিমধ্যেই হাত দেওয়া হয়েছে।
তবে এ আইন এখন শুধু আমাদের দেশীয় প্রয়োজনের দৃষ্টিতে দেখলে চলবে না। এটিকে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের আলোকেও দেখতে হবে। কারণ অনেক। যেমন এতে শ্রমিকের নিরাপত্তা, কর্মপরিবেশ ও তাঁদের সংগঠনকেও কথা বলার অধিকার সুনিশ্চিত করতে হবে এবং তা করতে হবে আন্তর্জাতিক চাহিদার কথা মনে রেখে। এখানে বাধ্যবাধকতাটা আসবে আইএলও এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার কাছ থেকে।
আমরা চেষ্টা করছি আইএলও পরিচালিত বেটার ওয়ার্ক প্রোগ্রামে অংশগ্রহণের জন্য। সপ্তাহ দেড়েক আগে আইএলও ও বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে পরামর্শ দিয়েছে শ্রম আইন করার পরই এ কার্যক্রমে অংশগ্রহণে আবেদন করতে। মনে হচ্ছে, শ্রম আইনের যথাযথ আধুনিকীকরণ বেটার ওয়ার্ক প্রোগ্রামে অন্তর্ভুক্তির প্রায় পূর্বশর্তের মতো। অতএব শ্রম আইন যথাযথভাবে আধুনিকায়ন না হলে এ পথে অগ্রযাত্রা ব্যাহত হতে পারে। তাতে আমাদের বিশ্বাসযোগ্যতা ও দীর্ঘমেয়াদি স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকবে।
এর বাইরেও দেশের শ্রমিক ভাই ও বোনদের এবং সেই সঙ্গে বিশ্ব শ্রমিক সংগঠনগুলোর চোখ তো থাকছেই। অতএব আমরা আশা করছি, জাতীয় সংসদ এ বিষয়গুলো বিবেচনায় নেবে। আইন বাস্তবায়নের বিষয়টি তো রইলই। এ নিয়ে আমাদের রেকর্ড যথেষ্ট শক্তিশালী নয়।
খ. পোশাকশিল্পের শ্রমিকদের মজুরি নিয়ে বিতর্ক চলছেই।
কয়েক সপ্তাহ ধরেই পোশাক শিল্পাঞ্চল উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে এ বিষয়কে ঘিরে। যদিও সরকার ইতিমধ্যেই মজুরি বোর্ডের ঘোষণা দিয়েছে, তবুও বিষয়টি নিয়ে গভীরভাবে ভাবা প্রয়োজন। বাংলাদেশ বিশ্ব পোশাক বাজারে মোটামুটি কম মূল্যমানের পোশাক সরবরাহকারী দেশ। শ্রমিকের কম মজুরিকে ভিত্তি করেই আমরা এ সুবিধাজনক অবস্থানে ছিলাম। কিন্তু মজুরি বাড়লে পণ্যের দামও বাড়তে পারে।
প্রশ্ন হলো, তাতে আমাদের প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা কতটুকু থাকবে। অনেকেই বলেন, আমাদের এ সুবিধা কমে যাবে। কথাটি অনেকাংশেই সত্য। কিন্তু এরই সঙ্গে যা বিবেচ্য বিষয় তা হলো কী করে আমরা আমাদের এ সুবিধা ধরে রাখতে পারব। চীন আমাদের দৃষ্টান্ত হতে পারে।
তারা তাদের পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তাদের শ্রমিকের উৎপাদনশীলতা বাড়িয়ে বেশি মূল্যমানের দিকে উঠে এসেছে। আমাদের সে পথেই হাঁটতে হবে। অর্থাৎ কম মূল্য থেকে উৎপাদনশীলতা বাড়িয়ে বেশি মূল্যের পোশাক স্তরে উঠে আসতে হবে। দীর্ঘ অভিজ্ঞতার আলোকে বলা চলে, এটি সম্ভব। তবে এর জন্য যা প্রয়োজন তা হলো আমাদের শ্রমিকের কর্মক্ষমতা ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি।
এর জন্য প্রাথমিক শর্ত হচ্ছে শ্রমিকদের শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ।
গ. প্রশিক্ষণের মধ্য দিয়ে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির বিকল্প নেই। শিল্পের প্রয়োজনেই আমাদের তা করতে হবে। রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর বিশ্বব্যাপী যে সমবেদনা আমরা পাচ্ছি, তা এখনই কাজে লাগানো প্রয়োজন। মার্কিন সরকারসহ অন্য ইউরোপীয় সরকারসমূহ পোশাকশিল্পের উন্নয়নে আগ্রহ দেখাচ্ছে, তেমনি আগ্রহ দেখতে পাচ্ছি বহুপক্ষীয় আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানসমূহ, যেমন: বিশ্ব ব্যাংক, এডিবি, জাইকার মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকেও।
ক্রেতা সংস্থাগুলোর কাছ থেকেও ইতিবাচক ইঙ্গিত মিলছে। যদিও তাদের তাৎক্ষণিক মনোযোগ কারখানাগুলোর নিরাপত্তা ও শ্রম পরিবেশ নিয়ে, তবুও শ্রমিকের দক্ষতা বৃদ্ধিতে আমরা উদ্যোগী হলে তাদের কাছ থেকে সাড়া পাওয়া যাবে আশা করি। এ ছাড়া আমরাও আমাদের দক্ষতা বৃদ্ধির নীতিমালার আওতায় তা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। শুধু যা দরকার তা হলো উদ্যোগ নিয়ে কাজে নেমে পড়া। সরকারের সঙ্গে সঙ্গে বিজিএমইএ এ কাজে নেতৃত্ব দিতে পারে।
প্রয়োজন হলে সুশীল সমাজভিত্তিক বা বেসরকারি খাতে যাঁরা কাজ করছেন, তাঁদের সাহায্যও নেওয়া যেতে পারে।
ঘ. রানা প্লাজা-উত্তর প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অনেক উদ্যোগ তৈরি হয়েছে। এসব নিয়ে আলোচনা চলছে। প্রশ্ন হলো, যে ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে ঘিরে এত সব উদ্যোগ, সে ক্ষেত্রে আমাদের সংশ্লিষ্টতা কতটুকু? এটি মোটামুটি বোঝা যাচ্ছে যে খুব শিগগিরই পোশাকশিল্পের জন্য নিরাপত্তা ও শ্রমমানের বিষয়ে নতুন কাঠামো ও কর্মপরিকল্পনা তৈরি হবে। এ ক্ষেত্রে যা প্রয়োজন তা হলো ক্রেতা সংস্থাগুলোর সঙ্গে সঙ্গে আমাদের মালিক-শ্রমিক প্রতিনিধি এবং সরকারের সংশ্লিষ্টতা।
তা না হলে আমরা যা পেতে পারি, তাতে আমাদের জাতীয় স্বার্থ পুরোপুরি সংরক্ষিত নাও থাকতে পারে। কাজেই দেরি না করে আমাদের কূটনৈতিক দক্ষতা ও কাঠামোকে ব্যবহার করে প্রয়োজনে সত্বর দর-কষাকষিতে লেগে যাওয়া দরকার। কারণ, পোশাকশিল্পের ভবিষ্যৎ ও বাংলাদেশের অর্থনীতির ভবিষ্যৎ এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার অংশীদারি সংলাপের আলোকে আমরা বুঝতে পারছি, এ কাজে আমাদের পাশে আমাদের বন্ধুরা আছেন। প্রয়োজনে আমরা তাঁদের সাহায্যও নিতে পারি।
যুক্তরাষ্ট্রের আন্ডার সেক্রেটারি ফর পলিটিক্যাল অ্যাফেয়ার্স ওয়েনডি শারমেন সে ইঙ্গিতই দিয়ে গেলেন কয়েক দিন আগে।
এম হুমায়ূন কবির: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত ও সচিব। বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের সহসভাপতি। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।