আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

◘◘◘ জ্বীন- এক অতিপ্রাকৃতিক রহস্যের আধার ◘◘◘

আসুন অন্যের বিচার করার আগে আয়নায় নিজের চেহারাটা দেখি।

জ্বীন নিয়ে হরেক রকম আলোচনা সমালোচনা ইতোর্পর্বে হয়েছে, হচ্ছে এবং হবে। কেননা যে জিনিস/সত্ত্বার উপস্থিতি আমাদের দৃষ্টিশক্তির বাইরে; তার উপস্থিতি প্রমাণের সুযোগের অভাবেই নানা রকম যুক্তিতর্কের আবির্ভাব হতেই পারে এটাই স্বাভাবিক। যুক্তিতর্ক যতই হোক না কেন জ্বীন জাতির অস্তিত্বের মোটামোটি একটা শক্ত ভিত্তি আছেই। আর জ্বীনের অস্তিত্বের বিভিন্ন প্রমাণাদীর বর্হিপ্রকাশ পায় তাদের বিভিন্ন রকম অতিপ্রাকৃতিক আচরণ এবং উপস্থিতির মাধ্যমেই।

আর এসব প্রামাণাদী আমাদের পঞ্চম ইন্দ্রিয়র মাধ্যমেই আমরা খুব সহজেই অনুধাবন করতে পারি। এমন অনেকেরই ভাগ্য হয়েছে জ্বীন জাতিকে নিজ হাতে ছুঁয়ে দেখার। কিংবা নিজ চোখে তাদের ভিন্ন রুপে অবলকন করার। আর আমার ভাগ্য হয়েছে সেসব ভাগ্যবানদের কাছ থেকে সেই আশ্চর্যজনক ঘটনার বর্ণনা শোনার। ঘটনা ১ - সালাম নামে আমার এক দূর সম্পর্কের মামা আছে।

দূর সম্পর্ক বলতে বেশি দূরেরও না। আমার বড় মামীর আপর বড় ভাই। তিনি নিজে জ্বীন বশে রাখার দাবি করেন। তার প্রমাণও তিনি দিয়েছিলেন। তিনি একবার আমার নানা বড়িতে বেঁড়াতে এসেছিলেন।

তখন সবার আবদারে তিনি বাড়ির সবাইকে জ্বীনকে হাতে ছুঁয়ে দেখার ব্যবস্থা করেছিলেন এবং জ্বীনের দেওয়া সন্দেশ খাইয়েছিলেন। আমার আম্মাও জ্বীনকে ছুয়ে দেখেছিলেন এবং জ্বীনের দেওয়া সেই সন্দেশ খেয়েছিলেন। ঘটনাটা শেয়ার করা যেতে পারে। সকলের অনুরোধে সালাম মামা বাড়িতে একটা উপযু্ক্ত পরিবেশ তৈরি করলেন। তিনি ঘরে সব দরজা জানালা বন্ধ করে তার গোপন পদ্ধতি অবলম্বন করে জ্বীনকে অন্ধকার ঘরে হাজির করলেন।

যখন জ্বীন হাজির হয়েছিল তখন নাকি সারা বাড়ি মিষ্টি সুগন্ধীতে ভরে গিয়েছিল। এরপর জ্বীনকে ছুঁয়ে দেখার পালা। একজন একজন করে জ্বীনকে ছুঁয়েও দেখেছিলেন। এরমধ্যে আমার আম্মাও ছিল। আমার আম্মার মতে জ্বীনের হাত ছিল ঘন লোমে ভরা।

এরপর সবাই মিলে জ্বীনের দেওয়া সন্দেশও খেয়েছিল। যতদূর জেনেছি সেই সন্দেশের স্বাদ ছিল অন্যান্য সন্দেশের থেকেও উত্তম। ঘটনা ২- অনেক আগে থেকেই প্রতি রমজান মাসে আমাদের গ্রামের বাড়িতে পুরা রমজান মাস তারাবিহের নামাজ পড়ানো হয়। আমাদের সমাজের সবাই আমাদের বাড়িতেই মূলত জামাতের সাথে নামাজ আদায় করে। এটা আমাদের গ্রামের বাড়ির সমাজের একটা পুরাতন ট্রেডিশান।

পুরা রমজান মাসের জন্য একজন কোরআনের হাফেজ রাখা হয়। জলিল নামে একজন ইমাম প্রায় ৫-৭ বছর এই দায়িত্ব পালন করেছিল। লোকটা ছিল অনেক অমায়ীক এবং ভদ্র। আমার নানীজান ওনাকে নিজের ছেলের মতই জানতেন। ওনার ইমামতির দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ার পরেও প্রতি বছর উনি আমাদের বাড়িতে বেড়াতে আসতেন।

তিনি ছিলেন চাঁদপুরের বাসিন্দা। কিন্তু অর্থাভাবে আমাদের এলাকার এতিমখানায় পড়ালেখা করেছিল। আর কাহিনীটা ঘটেছিল ওই এতিমখানাতেই। এতিমখানায় জলিল সাহেব বেলাল নামে এক ছেলের সাথে রুম শেয়ার করতো। বেলালও তার মতন ভদ্র একটা ছেলে ছিল।

প্রথর মেধাবীও বটে। কিন্তু ছেলেটা প্রতিদিন অনেক রাত করে রুমে ফিরতো। তাই এটা জলিল সাহেবের জন্য একটা বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কেননা রোজ রোজ তার জন্য দরজা খুলতে হতো। তো একদিন জলিল সাহেব বেলালকে বলেই ফেললো তার বিরক্তির কথা।

কথা শুনে বেলাল বললো ঠিক আছে তোমার আর কষ্ট করতে হবেনা। তুমি দরজা বন্ধ করেই ঘুমিয়ে পড়ো। তোমার আর কষ্ট করে দরজা খুলতে হবেনা। বলেই সে অন্য কাজে চলে গেলো। ব্যাপারটা জলিল সাহেবের জন্য আশ্চর্য লাগলো।

ছেলে বলে কি? দরজা বন্ধ থাকলে এই ছেলে ঘরে ঢুকবে কিভাবে ??? সেই রাতে জলিল সাহেব দরজা বন্ধ করেই ঘুমিয়ে পড়লো। ঘুমালো না ঠিক। ঘুমের ভান করলো। গভীর রাতে জলিল সাহেব যা দেখলো তাতে তার শরীরের লোম দাঁড়িয়ে গেলো। এতিমখানার ঘরগুলো ছিল টিনের।

টিনের ঘরগুলো ছাউনীর নিচে কিছুটা ফাঁকা জায়গা থাকে, যা ভেন্টিলিটারের কাজ করে। জলিল সাহেব দেখলো সেই ফাঁকা জায়গা দিয়ে বেলাল উড়ে উড়ে রুমে প্রবেশ করলো। এরপর তার পাশে শুয়ে পড়লো। ব্যাপারটা মাথায় নিয়ে সারা রাত জলিল সাহেবের আর ঘুম আসলো না। সকাল বেলা বেলালকে তিনি শক্তভাবে জেরা করতে লাগলেন।

বেলার বুঝতে পারলে সে ধরা খেয়ে গেছে। সে জলিল সাহেবের কাছে সব সত্যি প্রকাশ করে দিল। বেলালে ভাষ্য অনুযায়ী সে জ্বীন সম্প্রদায়ের। কোরআন শিক্ষার জন্য এই মাদ্রাসায় ভর্তি হয়েছে মানুষের রূপ ধারণ করে। ওরা নাকি এভাবেই কোরআন শিক্ষা লাভ করে বিভিন্ন মাদ্রাসায় মানুষ রূপে ভর্তি হয়ে।

আর রোজ রাতে ও ওর সম্প্রদায়ের নিকট যেতে দেখা সাক্ষাত করার জন্য। তাই এতো রাতে ফিরতো। ব্যাপারটা বেলাল সবার কাছে গোপন রাখতে বললো। জলিল সাহেব তাকে কথা দিল। কিন্তু জলিল সাহেব কথা রাখলেও বেলাল ঐদিনই মাদ্রাসা থেকে কাউকে আগে না জানিয়েই চলে গেলে।

ওর আর দেখা পাওয়া গেলোনা। ঘটনা ৩- এই ঘটনাটা খুবই সাধারণ। কিন্তু ঘটনার সত্যতা আছে। আমার খুলুর চামড়ার তৈরি সামগ্রীর কারখানা ছিল। সেখানে আলিম নামে তার এক ভাগিনা কাজ করতো।

ছেলেটাকে আমিও চিনতাম। সে মিথ্যা বলার মত ছেলে না। যাই হোক, আলিম একদিন একা একা কাজ করছিল কারখানায়। বাকি সবাই দুপুরের খাবারের জন্য বাইরে ছিল। আলিম লক্ষ্য করলো একটা সুঠাম দেহের লোক কারখানার এক কোণা থেকে আস্তে আস্তে হেঁটে আলিমের প্রায় ১০ হাত দূরে এসে বসে পড়লো।

এরপর ওর দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকে ইশারায় ওকে কাছে আসতো বললো। আলিম ভয়ে ভয়ে তার সামনে গিয়ে দাড়াতেই ওর গালে জোড়ে একটা চড় দিয়ে বললো সালাম দিলি না কেনো ? চড় থেয়ে আলিম এক দৌড়ে খালুর বাসায় চলে আসলো। ভয়ে তার জ্বর এসে পড়লো । তার গালে কিন্তু চড়ের দাগও ছিল। এলাকার ইমাম সাহেবকে ঘটনা বললে তিনি জানাল ওটা জ্বীন ছিল।

পড়ে কারখানার চার পাশে ইমামসাহেব কি যেনো কেরামতি করে দিয়েছিলেন। এর পর আর জ্বীনের আনাগোনা দেখা যায় নি। ঘটনা ৪- আমার অফিসে মাদ্রাসা পড়ুয়া একটা ছেলে নামাজ পড়ায়। ঘটনাটা ওর কাছ থেকে শোনা। ও একদিন মসজিদে বসে কোরআন তেলাওয়াত করছিল।

হঠ্যাৎ ওর গালে একটা জোড়ে চড় পরলো। ওর নিজের দাবি ও তেলাওয়াতে কিছু ভুল করেছিল। ওর বিশ্বাস জ্বীনে ওকে চড় মেরেছিল ভুল তেলাওয়াত করার জন্য। ও আর একটি ঘটনা বলেছে জ্বীন সম্পর্কে। ওর বিশ্বাস ভালো জ্বীনেরা গভীর রাত্রিতে জামাতের সাথে নামাজ আদায় করে।

তাই কেউ যদি ইমামের নামাজের জায়গায় ভুল করে ঘুমিয় পড়ে, ঘুম থেকে উঠে দেখবে সে ওই যায়গাতে নাই। অন্য যাওগায় চলে গেছে। জ্বীনেরা নাকি এটা করে। এটা পরীক্ষা করার জন্য ওর এক বন্ধু ইমামের ইমামতীর জায়গায় রাত্রিতে ঘুমিয়েছিল। সকালে উঠে দেখে সে আগের যায়গাতে নাই।

দূরে শুয়ে আছে। ►আমার আশেপাশের মানুষকে ঘিরে এরকম আরো অনেক ঘটনা আমার জানা আছে যা মোটামোটিভাবে প্রমাণ করে জ্বীনের অস্তিত্ব। তবে আমার এখনও তেমন কোন অভিজ্ঞতা হয়নি। পবিত্র কোরআন শরীফে জ্বীন নামে একটা পরিপূর্ণ সূরাও নাজিল হয়েছে। সূরা জ্বীন সম্পর্কে বিস্তারিত পরবর্তী পোস্টে দেওয়ার ইচ্ছা আছে।

আপাতত সূরা জ্বীন নিয়ে স্টাডি করতেছি। সবাই ভাল থাকবেন...................

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ৫২ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।