১৯৪৮-৪৯ সালে একটি তিন দিনের ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল মহারাষ্ট্র ও কাটিওয়ার। প্রথম দুই দিনে দুর্দান্ত ব্যাটিং করে ৪৪৩ রান সংগ্রহ করেছিলেন কাটিওয়ারের ব্যাটসম্যান ভুসাহেব নিমবালকার। আর মাত্র ৯ রান করলেই তিনি ছুঁয়ে ফেলতে পারতেন ডন ব্রাডম্যানের ৪৫২ রানের বিশ্বরেকর্ডটি। কিন্তু তৃতীয় দিনে আর ব্যাটই করতে নামেননি নিমবালকার। ইনিংস ঘোষণা করে মহারাষ্ট্রকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছিল কাটিওয়ার।
স্কোরবোর্ডে যথেষ্ট রান জমা হয়ে গিয়েছিল বলেই নাকি ইনিংস ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু অনেককে এটাও বলতে শোনা যায় যে, তৃতীয় দিনে বিয়ের পিঁড়িতে বসার কথা ছিল নিমবালকারের। এ জন্যই নাকি রেকর্ডের লোভে আর মাঠে নামেননি ব্যাট হাতে।
কাছাকাছি ধরনেরই একটা ঘটনা ঘটেছিল ১৯৩৮-৩৯ সালে। ওই সময় টেস্ট ক্রিকেট এখনকার মতো পাঁচ দিনের ম্যাচ ছিল না।
ফল নির্ধারণ না হওয়া পর্যন্ত খেলা চলতেই থাকত। ডারবানে দক্ষিণ আফ্রিকা আর ইংল্যান্ডের মধ্যকার ম্যাচটি গড়িয়েছিল নবম দিনে। ইংল্যান্ড ব্যাটিং করছিল ৬৯৬ রানের লক্ষ্য নিয়ে। ৫ উইকেট হারিয়ে ৬৫৪ রান সংগ্রহও করে ফেলেছিল সফরকারীরা। কিন্তু শেষ কয়েকটা রান আর জমা করা হয়নি স্কোরবোর্ডে।
ইংল্যান্ডগামী জাহাজটা ছাড়ার সময় হওয়ায় খেলা ফেলেই ছুটতে হয়েছিল ইংলিশ ক্রিকেটারদের। এটাই টেস্ট ইতিহাসের সবচেয়ে দীর্ঘতম ম্যাচ হিসেবে স্মরণীয় হয়ে আছে।
টেস্ট ক্রিকেটের সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত ম্যাচটি খেলা হয়েছিল ২০০৯ সালে। ইংল্যান্ড আর ওয়েস্ট ইন্ডিজের সেই ম্যাচে মাঠে গড়িয়েছিল মাত্র ১০টি বল। এর পরই মাঠের অনিরাপদ অবস্থার কথা বিবেচনা করে খেলা বন্ধ করে দিয়েছিলেন আম্পায়াররা।
১৮৭৭ সালের মার্চে মেলবোর্নে অনুষ্ঠিত প্রথম আনুষ্ঠানিক টেস্ট ম্যাচটিতে ইংল্যান্ডকে ৪৫ রানে হারিয়েছিল ইংল্যান্ড। ঠিক ১০০ বছর পর মেলবোর্নেই আরেকটি ম্যাচ আয়োজন করা হয় প্রথম সেই ম্যাচটির শতবর্ষ উদযাপনের জন্য। অদ্ভুতভাবে এবারও জয় পায় অস্ট্রেলিয়া। ঠিক ওই ৪৫ রানের ব্যবধানেই। অদ্ভুত পুনরাবৃত্তিই বটে!
একই দিনে চারটা ইনিংস মাঠে গড়ানোর ঘটনাও ঘটেছে টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে।
২০০০ সালে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার ম্যাচে দেখা গেছে এই বিরল ঘটনাটা। টেস্ট ক্রিকেট এমন ঘটনার সাক্ষী হয়েছে এই একবারই।
ক্রিকেটের নিয়ম অনুযায়ী একই বোলার পর পর দুটি ওভার বল করতে পারেন না। কিন্তু এমন নজিরও আছে ক্রিকেট ইতিহাসে। ১৯৫১ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এই কাজটা করেছিলেন নিউজিল্যান্ডের অ্যালেক্স মোইর।
চা-বিরতির ঠিক আগের ও পরের ওভারে বল করেছিলেন এই কিউই বোলার। এমন ঘটনা এর আগে ঘটেছিল আর একবারই। ১৯২১ সালের অ্যাশেজ সিরিজের একটি টেস্টে।
টেস্ট ক্রিকেটে টাই ম্যাচের ঘটনা ঘটেছে মাত্র দুইবার। দুটি ম্যাচের সাক্ষীই অস্ট্রেলিয়া।
প্রথমবার ১৯৬০-৬১ সালে ব্রিসবেনে, তাদের প্রতিপক্ষ ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দ্বিতীয়বারের ঘটনাটি ১৯৮৬-৮৭ সালের। সেবার মাদ্রাজে অস্ট্রেলিয়া মুখোমুখি হয়েছিল ভারতের।
খেলার মধ্যে বৃষ্টি শুরু হলে অনেকেই গালমন্দ করেন প্রকৃতির খামখেয়ালকে। কিন্তু আজ যে একদিনের ক্রিকেটের এত রমরমা, এর মূলে কিন্তু আছে এই বৃষ্টির বাধা।
১৯৭১ সালে ইংল্যান্ড আর অস্ট্রেলিয়ার প্রথম যে একদিনের ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল, সেটা আদতে একটা পাঁচ দিনের টেস্ট ম্যাচই হওয়ার কথা ছিল। বৃষ্টির কারণে প্রথম চার দিন পণ্ড হওয়ায় পঞ্চম দিনেই একটি একদিনের ম্যাচ অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। অস্ট্রেলিয়া জিতেছিল ৫ উইকেটে। একদিনের ক্রিকেটের প্রথম বলটি মোকাবিলা করেছিলেন জিওফ বয়কট। বোলার ছিলেন গ্রাহাম ম্যাকেনজি।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।