আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আজ ৩০ সেপ্টেম্বর, জাতীয় কন্যাশিশু দিবসে একটি গল্প শুনুন

জানার আগ্রহ মানুষের চিরন্তন, বই হলো তার বাহন, আইনের মৃত্যু আছে কিন্তু বইয়ের মৃত্যু নেই।
আরব দেশে আবু হামজা নামক এক ব্যক্তি এক মহিলাকে বিবাহ করে। লোকটি পুত্র সন্তানের প্রত্যাশী ছিল। কিন্ত তাদের গৃহে কন্যা সন্তান জন্ম দিল। লোকটি তখন ক্ষোভে-দুঃখে স্ত্রীর নিকট যাতায়াত বন্ধ করে দিল এবং স্ত্রীর থেকে পৃথক হয়ে অন্য একটি বাড়ি ভাড়া করে বসবাস করতে লাগল।

দীর্ঘ এক বৎসর অতিবাহিত হওয়ার পর একদিন ঐ লোকটি তার স্ত্রীর গৃহের কাছ দিয়ে অতিক্রম করছিল। তখন তার কর্ণে স্বীয় স্ত্রীর সুপরিচিত মধুর কন্ঠে একটি কবিতার পংক্তি ভেসে এল। স্ত্রী তার কন্যাকে আদর সোহাগ ছলে বললেন- “আবু হামজার কি হল যে, আমাদের কাছে আসে না? পাশের বাড়িতে ভাড়া থাকে, তবু আমাদের খোঁজ নেয় না! অসন্তুষ্ট সে, কেন পুত্র সন্তান জন্ম দিলাম না? শপথ আল্লাহর, এসব কিছু তো আমার ক্ষমতার অধীনে না। মহান আল্লাহ যা কিছু দেন, তাইতো মোদের শান্তনা। ” স্ত্রীর কন্ঠের একথা গুলো স্বামীকে দারুনভাবে প্রভাবাম্বিত করে এবং ঈমান, এক্বীন ও আল্লাহর ফয়সালার সম্মুখে মস্তক অবনত করতে বাধ্য করে ।

তখন আবু হামজা গৃহে প্রবেশ করে স্ত্রী ও কন্যার কপালে কৃতজ্ঞতার চুম্বন একে দিয়ে কন্যা সন্তানরূপে করুনাময় আল্লাহ তায়ালা যে মহান নিয়ামত তাকে দান করেছেন, তার প্রতি সন্তোষ ও আনন্দ প্রকাশ করে । এভাবে তাদের সংসার সুখের সংসারে পরিণত হয়। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারিত হয়েছে, ‘কন্যা মানেই বোঝা নয়, করবে তারা বিশ্ব জয়’। বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ৪৫ শতাংশ ১৮ বছরের কম বয়সী শিশু আর এর মধ্যে ৪৮% হল কন্যাশিশু। আজকের শিশুরা আগামী দিনের দেশের ভবিষ্যৎ।

কন্যার মাতা-পিতাদের প্রতি কিছু উপদেশঃ ১. অনেক পিতা-মাতা পুত্র সন্তান জন্ম নিলে খূশীতে আত্মহারা হয়ে যায় বটে, কিন্তু কন্যা সন্তান জন্ম নিলে মুখ শুকিয়ে কালো চামচিকে হয়ে যায়, এমনটি হওয়া কোন ক্রমেই উচিত নয়। ২. কত খুশীর খবর যে, আল্লাহ তা’আলা দয়া করে আপনার ঘরের সৌন্দর্যরূপে, সৌভাগ্যের ফুল রূপে, অঢেল ফযীলতের অধিকারিণীরূপে একটি ফুটফুটে পূর্ণিমার চাঁদ (মেয়ে) দান করেছেন। ৩. তাই কন্যা সন্তান জন্ম নিলে অসন্তোষ প্রকাশ না করে আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশের মাধ্যমে ঈমানের পরিচয় দেয়া কর্তব্য। ৪. মনে রাখবেন- কন্যা সন্তান অপছন্দ করা আল্লাহর সিদ্ধান্তকে অপছন্দ করা একই কথা। আর নিঃসন্দেহে একথা বলা যায় যে, যারা কন্যা সন্তানের কারনে মনঃস্তাপে কিষ্ট হয়, দুঃখিত ও লজ্জিত হয় , তাদের ঈমানে রয়েছে দুর্বলতা; একীন বিশ্বাসে রয়েছে অসচ্ছতা।

৫. তাদের একথা হৃদয়ঙ্গম করা একান্ত প্রয়োজন যে, তারা এবং তাদের পরিবারের, বংশের সমাজের সমগ্র বিশ্ববাসীর শত প্রচেষ্টা সত্তেও আল্লাহর সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে পারবে না। আল্লাহ যা ইচ্ছা তাই করেন, করবেন। তিনি সর্বশক্তিমান, রাজাধিরাজ , সর্বকর্মবিধায়ক। যাকে ইচ্ছা পুত্র সন্তান দান করেন, যাকে ইচ্ছা কন্যা সন্তান দান করেন। মহাগ্রন্থ আল কোরআনে ইরশাদ হচ্ছেঃ “নভোমন্ডল ও ভুমন্ডলের রাজত্ব আল্লাহ তা’আলারই।

তিনি যা ইচ্ছা, সৃষ্টি করেন। যাকে ইচ্ছা কন্যা সন্তান দান করেন এবং যাকে ইচ্ছা পুত্র সন্তান দেন। অথবা তাদেরকে দান করেন পুত্র ও কন্যা উভয়ই। কিংবা যাকে ইচ্ছ বন্ধ্যা করে দেন। নিশ্চয় তিনি সর্বজ্ঞ, ক্ষমতাশীল।

” (সুরা-শুরা ৪৯-৫১)
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।