আমার মা রিস্ক পিরিয়ড অতিক্রম করেছেন। পিজির ১০ তলায় অবস্থিত ইউরোলজি ওটি থেকে প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর তাকে পোস্ট অপারেটিভে নিয়ে যাবার সময়, দুজন নার্স আমাকে ও আমার ছোটবোনকে দেখালেন, মার জ্ঞান ফিরেছে। একজন নার্স চলমান বেডে শুয়ে থাকা মাকে বললেন, 'এই যে আপনার ছেলেমেয়ে। ' আমরা মার মুখে হাত দিলাম। কী যে হলো! আমার চোখ দিয়ে ঝরঝর করে পানি গড়িয়ে পড়ল।
আমার কান্না কিছুতেই আটকাতে পারলাম না। আমার দুজন খুব কাছের মানুষ, তারা ভোর থেকেই সঙ্গে ছিল। একজন বলল, অপারেশন সাকসেসফুল। এটাই তো এখন আনন্দের। এ সময় তো হাসবেন।
চোখে পানি কেন? আমার ছোটবোনটাও ওদের সঙ্গে সুর মিলিয়ে আমাকে কোমল ভর্ৎসনা করল, 'হুম, তুমি কাদছ কেন? মা তো এখন দ্রুত সুস্থ্য হবে। '
(আমার মা সন্তানের দেয়া কষ্ট পাওয়া মা। আমি তার উচ্ছন্নে যাওয়া একমাত্র পুত্র। কয়েকদিন ধরেই একটা টানটান উত্তেজনা-অস্থিরতায় কাটাচ্ছি। বাসা টু পিজি করছি।
আমার আর কিছুই করতে ভালো লাগছে না। কিন্তু মার সুস্থতা দেখে, সত্যি, এখন মনে হচ্ছে কত কাজ করতে পারব আমি, কত কাজ করতে হবে আমার...মার কথা ভাবতে ভাবতে, এই লিখতে লিখতেও চোখে পানি এসে গেল হঠাৎ। কারণ কী, জানি না। হয়তো, মাকে সবচেয়ে বেশি কষ্ট দিয়েও সবচেয়ে বেশি তার কাছে পাই বলে। মাত্র কদিন, কিছুটা নির্ঘুম আমি, আমার দুবোন।
কিন্তু মা কতকাল ভালো করে ঘুমোই না আমাদের জন্যে?
সপ্তাহ দুই পর, আজ আমার অনেক ভালো লাগতেছে। আমার মায়ের সার্জারি রেকর্ড গুড। এখন সুস্থ হবার সময়।
আমি খুশি, আমার চোখে পানি।
মা সুস্থ হয়ে উঠছেন দেখে, আমি ও আমার বোনেরা বেঁচে উঠলাম...
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।