টেলিভিশন অনুষ্ঠানকে স্টুডিও'র চার দেয়ালের বাইরে নিয়ে এসে গত কয়েক বছর ধরে আমাদের সভ্যতা, সংস্কৃতি, ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং প্রত্নতাত্তি্বক গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে গিয়ে ইত্যাদির মূল অনুষ্ঠান ধারণ করা হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় ইত্যাদির এবারের পর্ব ধারণ করা হয়েছে শিল্পনগরী খুলনার রূপসা নদীর তীরে। রূপসা নদীর ওপর নির্মিত খানজাহান আলী রূপসা সেতুকে ঘিরেই তৈরি হয়েছে এবারের ইত্যাদির মঞ্চ। খুলনায় ধারণ করার মধ্য দিয়ে দেশের সব ক'টি বিভাগে ইত্যাদির ধারণ সম্পন্ন হলো। ইত্যাদিতে সব সময়ই দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে প্রচার বিমুখ, জনকল্যাণকামী, সৎ সাহসী মানুষদের খুঁজে এনে তাদের কর্মকাণ্ড তুলে ধরা হয়, যাতে তাদের এসব কাজ দেখে অন্যেরাও অনুপ্রাণিত হতে পারেন।
এবারের পর্বেও রয়েছে শিশুদের স্কুলে যাওয়ার বিড়ম্বনা নিয়ে একটি সচিত্র প্রতিবেদন। খুলনার বটিয়াঘাটা থানার কইয়াবাজারের কমলেশ মলি্লকের ওপর একটি উদ্বুদ্ধকরণ প্রতিবেদন রয়েছে। যিনি তার মেধা খাটিয়ে অক্ষমতাকে জয় করেছেন। দেশের উত্তর প্রান্তের সীমান্তবর্তী উপজেলা ভুরুঙ্গামারীর চেয়ারম্যান আবদুল হাই মাস্টারের ওপর রয়েছে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন। যিনি উপজেলার বিভিন্ন কাজ শুধু করিয়েই নেন না, নিজ হাতেও করেন।
এবারের ইত্যাদিতে মূল গান রয়েছে দুটি। উল্লেখ্য, ইত্যাদিতে সব সময় ভিন্ন আঙ্গিকে গান প্রচার করার চেষ্টা করা হয়। বিশেষ করে লোকসংগীত ও দেশাত্দবোধক গানকে প্রাধান্য দেওয়ার পাশাপাশি ইদানীং ধারণ স্থান অনুযায়ী সে অঞ্চলের ওপর গান তৈরি করা হয় এবং পরিবেশনায় সেই অঞ্চলের শিল্পীদের প্রাধান্য দেওয়া হয়। সেই ধারাবাহিকতায় এবারের 'ইত্যাদি'তে গান গেয়েছেন খুলনার তিন কৃতি শিল্পী অবসকিউরের টিপু, ডিফরেন্ট টাচের মেজবা এবং অরবিটের পলাশ। তিনটি ব্যান্ড দলের তিন জনপ্রিয় গানের অংশ বিশেষের সঙ্গে রয়েছে খুলনাকে নিয়ে রচিত একটি মৌলিক গান।
গানটি লিখেছেন মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান এবং সুর করেছেন আলী আকবর রূপু। ইত্যাদি প্রায়ই চেষ্টা করে নুতন শিল্পীদের উপহার দিতে। সেই ধারাবাহিকতায় এবার উপহার দেওয়া হয়েছে প্রায় অপরিচিত খুলনা অঞ্চলেরই শিল্পী সঞ্জয় রায়কে। যার কণ্ঠে ধারণ করে আছে বিভিন্ন সময়ের অসংখ্য বাংলা গানের ঐতিহ্য। বিশেষ করে পুরনো দিনের ধ্রুপদী গান।
যার সংগ্রহেও রয়েছে অসংখ্য পুরনো দিনের গান।
যেহেতু ইত্যাদির বিভিন্ন অনুষ্ঠান বিভিন্ন স্থানে করা হয়। তাই দর্শক পর্বের নিয়ম অনুযায়ী সেই স্থানকে ঘিরে দর্শকদের বিভিন্ন প্রশ্ন করা হয় এবং সঠিক উত্তর দাতাদের মঞ্চে আমন্ত্রণ জানানো হয়। তাই এই পর্বের নিয়মানুযায়ী এবার ইত্যাদির দর্শক বাছাই করা হয়েছে বৃহত্তর খুলনাকে নিয়ে করা বিভিন্ন প্রশ্নের মাধ্যমে। নির্বাচিত দর্শকদের দিয়ে করা হয় দ্বিতীয় পর্ব।
নিয়মিত পর্ব হিসেবে এবারও রয়েছে যথারীতি মামা-ভাগ্নে, নানী-নাতি ও চিঠিপত্র বিভাগ। রয়েছে বিভিন্ন সমসাময়িক ঘটনা নিয়ে বেশ কিছু সরস অথচ তীক্ষ্ন নাট্যাংশ। ব্যানার চাতুর্য, বিজ্ঞাপন প্রতিক্রিয়া, গরু বিক্রেতা ও তার কর্ম, দেশি-বিদেশি গরু কেনা, টেবিল বৈঠক সমাচার, আত্দপ্রচারের নতুন কৌশল, সংবাদের ভিন্নরূপসহ বিভিন্ন বিষয়ের ওপর রয়েছে বেশ কয়েকটি নাট্যাংশ। বরাবরের মতো এবারও ইত্যাদির শিল্প নির্দেশনায় ছিলেন ইত্যাদির নিয়মিত শিল্প নির্দেশক মুকিমুল আনোয়ার মুকিম।
সব শ্রেণী পেশার মানুষের প্রিয় অনুষ্ঠান ইত্যাদির আগামী পর্ব একযোগে বিটিভি ও বিটিভি ওয়ার্ল্ডে-এ প্রচার হবে আজ রাত ৮টার বাংলা সংবাদের পর এবং পুনঃপ্রচার করা হবে ৬ অক্টোবর, রবিবার রাত ১০টার ইংরেজি সংবাদের পর।
ইত্যাদির রচনা, পরিচালনা ও উপস্থাপনা করেছেন হানিফ সংকেত। নির্মাণ করেছে ফাগুন অডিও ভিশন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।