দেশটা আমাদের। এর জন্য ভাল কিছু করতে হলে আমাদেরই করতে হবে। Mail:rabiul@gmail.com
পরিণত বয়সে অবিবাহিত থাকার অনেকগুলো ডিজ-অ্যাডভ্যাণ্টেজ বিষয়ের একটা হলো প্রিয় বন্ধুদের বা অফিসের কলিগদের নানারুপ ঠাট্রা মশকরা জাতীয় কথা হজম করা। যেমন বিয়ে করছেন না কেন?কবে বিয়ে করবেন?কবে আপনার বিয়ে খাব?অফিসে নতুন কোন আবিবাহিত সুন্দরী মেয়ে জয়েন করলে তার সাথে জড়িয়ে নতুন নতুন বাক্যবানে জর্জরিত করা। যাই হোক এমনই একজন নতুন মেয়ে কলিগ অফিসের আমার গাড়িরই যাত্রী।
ধরা যাক তার নাম ‘ক’।
অফিসের কলিগের একজনকে আফিসের আমরা সবাই মামা ডাকি। উনি খুব মজার একজন মানুষ এবং আমার খুবই প্রিয়। সেই মামার সাথে অফিসের একই গাড়িতে প্রতিদিন আমার আসা যাওয়া আর মজার সময় পার করা হয়। আজ অফিসের গাড়ির জন্য রাস্তায় দাড়িয়ে আছি।
গাড়ি আসতে চার মিনিট লেট। ব্যাস এই চার মিনিটেই বৃষ্টি যা করার করলো। আমার করার কিছুই ছিলো না। কোনমতে ছাতা মাথায় দিয়ে মাথাটা ভেজার হাত থেকে রক্ষা করলাম। গাড়িতে উঠার পর টের পেলাম হাটুর নিচ থেকে পুরো ভেজা।
অফিসের গাড়িতে আমরা ১৪ জন যাত্রী। এর ভিতরে ৩ জন নারী। প্রতিদিন যাওয়া আসার সময়টা মজা করতে করতেই কেটে যায়। নারীদের ভিতর থেকে সেই ‘ক’ খিলগাও থেকে উঠেন। আজও উঠলেন।
কিন্তু আজ দিনটা একটু ভিন্ন। প্রচন্ড বৃষ্টি। ‘ক’ কোন রকমে ছাতা মাথায় দিয়ে তাড়াহুড়ো করে গাড়িতে উঠে বসলেন। ছাতাটা কোন ভাবেই বন্ধ করতে পারছেন না। হাতে ছাতা থাকায় গাড়ির দরজাও টান দিয়ে বন্ধ করতে পারছেন না।
যেহেতু ‘ক’ এর ঠিক পিছনেই আমি বসি তাই সৌজন্যতা বশত গাড়ির দরজা আমি নিজেই লাগিয়ে দিলাম। এখন ছাতা উনার সাথে ভালো রকম বেইমানী শুরু করলো। কোন ভাবেই উনি ছাতা বন্ধ করতে পারলেন না। শেষ পর্যন্ত ব্যার্থতা মেনে খানিকটা লজ্জিত হয়ে আমার দিকেই ঠেলে দিলেন। যেই মেয়ের ফুল বাড়িয়ে দেয়ার কথা সে বাড়িয়ে দিলো ছাতা!!!ভাগ্যের কি পরিহাস!!একই গাড়িতে চলাফেরা করা সত্তেও ‘ক’ এর সাথে কখনো কথা বলা হয়ে উঠেনি(চোরের মনে পুলিশ পুলিশ)।
অবিবাহিত হওয়ার কারণে এই ধরনের কলিগের সাথে কথা বলতে কিছুটা সঙ্কোচ বোধ হয়। তাছাড়া কথা বললেও অন্যান্য পুরুষ কলিগরা হাসি ঠাট্রায় মেতে উঠতে পারে। তাই হঠাত আমার দিকে ছাতা ঠেলে দেয়ায় খানিক বিব্রত হলাম। ‘ক’ এর ছাতা বন্ধের কসরত দেখে বোঝা যাচ্ছে ছাতাটায় ভালোই জ্যাম লেগেছে। ভয়ে আছি আমি বন্ধ করতে পারবো কিনা!!না পারলে তো বিশাল এক কাপুরুষত্ব হয়ে যাবে!!তবে দ্রুতই নিজেকে সামাল দিয়ে ছাতা হাতে নিয়ে কয়েকবারের চেষ্টায় বেয়াদপ ছাতা টাকে বশে আনলাম।
মনে মনে ছাতাটাকে ধন্যবাদ জানালাম কাপুরুষত্বের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য। কিন্তু এই সামান্যতেই সেই মামা(উনি আমার সাথে ‘ক’ কে জড়িয়ে বেশ ভালোই মজা করেন)আমার পিঠে থাবা দিয়ে জোর গলায় সবাইকে শুনিয়ে বলে উঠলেন আপনাকে দিয়েই হবে!!!কলিগের উপর এমন রাগ উঠলো!!(যদিও কথাটা শুনতে বেশ ভালোই লেগেছিলো)আমাকে দিয়ে না হয় হইলো সেটা কি ‘ক’ কে শুনিয়ে বলতে হবে?তারচেয়ে ভয়াবহ কথা বললেন উনি গাড়ি থেকে নামার সময়। কথাটা এইরূপ ‘দোয়া করি ভবিষ্যতে যাতে উনি গোপন আরো অনেক কিছু আপনাকে দিয়ে লাগিয়ে নিতে পারে’।
বিঃদ্রঃ কথাটা শোনার পর থেকে এখনো মাথাটা ভোঁ ভোঁ করতেছে। বিয়েটা শীঘ্রই না করলেই নয়
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।