[বাস্তবতা ও কল্পনার জগত্ দুটি সম্পূর্ণ আলাদা। কল্পনার ছকেঁ প্রতিটি মানুষকেই সুখী মনে হয়। কিন্তু বাস্তবতায়তা সম্পূর্ণ ভিন্ন]
-------ঈদের নামায পড়ে বাসায় ফিরছিলাম। সাথে আমার আরো দুই বন্ধু। আমাদের বাসার ফিরারপথেই ফারহানাদের বাসা।
ফারজানা ছিল আমাদের ক্লাসমেইট। ঈদের দিন ওদের বাসায় যাবার জন্য ফারজানাবারবার করে বলেছিল। তাই ঠিক করেছিলাম ওর বাসায় ঢুকব।
যাক আমরা তিন বন্ধু ওদের গেটে নক করলাম। ফারজানাই গেট খুলে দিল।
আমাদের দেখেসে অনেক খুশি হল। ভিতর গিয়ে বসলাম। বসেই এক ধরনের কান্নার শব্দ পেলাম। তবে শব্দ টা স্পস্ট নয়। আমি ফারজানাকেবললাম, কিরে কাঁদে কে? ফারজানা কোন উওর দিল না।
সে আমাদের কে বসিয়ে অন্য রুমে চলে গেল।
বেশ কিছুক্ষণ পর রুমে এল নিতু আপু। নিতু ফারজানার বড় বোন। ওনি রুমে ঢোকার সাথে সাথে আমি লক্ষ্য করলাম ওনার দুটি চোখ ফোলা। বুঝতে পারলাম ওনার কান্নার শব্দই আমি শুনতে পেরেছিলাম।
ওনি আমাদের সেমাই, পিঠা এসব খেতে দিল। আমরা খেতে শুরু করলাম। হঠ্যাত্ নীল বলে উঠল আপু ফারজানা কই গেছে? আসতেছে তোমরা খাও, নীতু আপু জবাব দিল।
কিছুক্ষণ পর ফারজানা ও আন্টি( ফারজানার আম্মা ) রুমে প্রবেশ করল। আমরা তিন বন্ধু প্রত্যেকে ওঠে গিয়ে আন্টিকে সালাম করলাম।
যা এখন আপনাদের বলা দরকার ফারজানাদের বাবা নেই। ওরাদুই বোন ও তাদের মা এ তিন জন কে নিয়েই তাদের সংসার। নীতু আপুর যখন ৫ এবং ফারজানার যখন ১ বছর তখন তাদের বাবা মারা যায়। আনক্কেল সরকারি চাকরী করতপরে আন্টিকে তার জায়গায় চাকরী দেয়া হয়। ঐ সময় থেকেদুটি বাচ্চা মেয়ে কে নিয়ে তার সংগ্রামের সংসার শুরু।
আজ ও তিনি সংগ্রাম করে যাচ্ছেন।
ওনাকে সালাম করে আবার বসলাম। আন্টি ও বসল ওনার পাশে বসল ফারজানা। আমরা কথা বলছিলাম কথা বলার এক পর্যায়ে আন্টি বলে উঠল, আমি খুব খুশি হয়ছি তোমরা বাসায় এসেছ এ বলে তিনি কেঁদে দিলেন। বাকি কথা গুলো শুধুই ওনার--
আমার দুটি মেয়ে কখন ও দেখেনায় তাদের বাসা থেকে কেউ নামায পড়তে বাইরে যায়।
প্রতি ঈদে মানুষ যখন ঈদের নামায পড়তে ঈদগায়ে যায় নীতু জানালা দিয়ে শুধু তাকিয়ে দেখে। আর চোখের অশ্রু ফেলে। তোমরা আসার আগে ও নীতু কাঁদছিল। ছোট বেলায় ২ জন ই বাবাকে হারিয়েছে। ছোট বেলা থেকেইএই শূন্যতা নিয়ে বড় হয়েছে তারা।
প্রতি ঈদেই তারা নানা কিছু তৈরি করে কিন্তু তাদের ভাই বাবা কেউ নেয় তাই কেউ বাসা থেকেনামাযে ও যায় না। তাই যখন দেখে পাশের বাসার ছেলে, তাদের বাবারা নামায পড়ে ঘরে ফিরে নীতু এসব দেখে কাঁদে। কথা গুলো তিনি অশ্রু ভেজা চোখে বলছিলেন। নীতু আপুর চোখে তখন ও অশ্রুর ফোটা লক্ষ্য করলাম। আজ তোমরা বাসায় এসেছো তাই আমি অনেক খুশি।
আন্টি নীতু আপুকে বলল, যাওনীতু রান্না কর গিয়ে। এরা তো তোমার ছোট ভাই। প্রতি ঈদে ইতো রান্না করো কিন্তু তোমার রান্না খাবার কেউ থাকে না। এবার আল্লাহ তোমার জন্য দেখ ভাই পাঠিয়েছে। দেখ নামায পড়ে বাসায় ও এসেছে।
এভাবে কথা চলতে থাকল। আমি লক্ষ্য করলাম যে সবার চোখেই অশ্রুর বিন্দু লুকোচুরি করছে। আসলে আমরাএমন ঈদের দিনে এ কথা গুলো শোনার মতো প্রস্তুত ছিলামনা। এত আনন্দের মাঝে ও সেইঈদে কেঁদেছিলাম। তবে আনন্দ টা ও হয়েছে কয়েক গুণবেশি।
পরে দুপুর বেলা ফারজানাদের বাসায় খেয়ে আমাদের নিজের বাসায় ফিরেছিলাম।
আজ ঈদ। আজ অনেক খুশির দিন। কিন্তু এই খুশির দিনে ও অনেক ফারজানা নীতু আছে যারা নাকি একটা অতৃপ্তির মাঝেই ঈদ কাটায়। যা আমাদের চোখে প্রত্যেক্ষ হয় না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।