আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

Run Silent Run Deep(1958), WW2 ভিত্তিক সাবমেরিন যুদ্ধের শ্রেষ্ঠ মূভি! (৫ বছর পূর্তি স্পেশাল)

আমি চাই শক্তিশালী স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ
১৯৪২ সালের ব্যাটল অব মিডওয়ের পর মার্কিন সমরবিদরা ঠিক করেন যে এবার পশ্চিম প্যাসিফিকের জাপানী দখলকৃত দেশ ও দ্বীপের অবস্থানকে দূর্বল করতে হবে। এর জন্য জাপানী সামরিক সরবারাহ লাইনকে বিঘ্নিত করার জন্য মার্কিন নৌবাহিনী তাদের বিশেষ বিশেষ সাবমেরিনগুলিকে জাপানের পানিসীমার নিকটে ও কিছু ভিতরে পাঠায়। ঠিক এই রকমই একটি বিপদজনক সুমুদ্র এলাকা হচ্ছে Bungo Strait বাঙ্গো প্রণালী। ম্যাপ দেখে বুঝাই যাচ্ছে এটা একেবারে জাপানের মধ্যেই। সেই দক্ষিণের পাপুয়া নিউ গিনি হতে সাইপান, গুয়াম ও মার্শাল আইল্যান্ড ব্লকে থাকা জাপানী সামরিক বাহিনীর জন্য এখান থেকেই সিংহ ভাগ সরবারাহ যেত।

মার্কিন সমরবদিরা কোনমতেই চাচ্ছিল না যে এখানে জাপানী সামরিকবাহিনী তাদের অবস্থান পাকাপোক্ত করুক। ঐ দিকে অষ্ট্রেলিয়ার জন্যও জাপান হুমকি হয়ে দাড়িয়েছিল। এটা যে কতটা ভয়াবহ তা নিম্ন হতে বোঝা যায়; The New Guinea campaign (1942–1945) was one of the major military campaigns of World War II. Approximately 216,000 Japanese, Australian and U.S. soldiers, sailors and airmen died during the New Guinea Campaign.[20] After World War II the two territories were combined into the Territory of Papua and New Guinea, which later was simply referred to as "Papua New Guinea". http://en.wikipedia.org/wiki/Papua_New_Guinea কাজেই বোঝা যায় কেন মার্কিন সমরবিদদের কাছে জাপানী জাহাজের সরবারাহ বহর গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এই ছবির কাহিনীতে দেখানো হয় Clark Gable যিনি ক্যাপ্টেন পি জে রিচার্ডসনের ভূমিকায়। ১৯৪২ সালে তার ডুবোজাহাজ জাপানী ডেষ্ট্রয়ার আকাকাজীর হামলায় ডুবে যায় সেই বাঙ্গো প্রণালীতে।

তিনি ও তার কিছু ক্র রক্ষা পায়। কিন্তু বিগত এক বছর ধরে তিনি বসে আছেন সেই বাঙ্গো প্রণালীতে দূর কোথাও কোন যুদ্ধে পাঠানো হয়নি। তিনিও পণ করে বসে আছেন যেভাবেই হৌক সেই আকাকাজীকে ধ্বংস তথা নিমজ্জিত করে প্রতিশোধ নিবেনই। শুধু তাই নয় এই বিষয়ে তিনি সম্পূর্ণ রুপে নতুন রণকৌশল ঠিক করেন। এমন ছক কষেন যে যেকোন ডেষ্ট্রয়ার তার পাতা ফাদে পা দিবে এবং নির্দিষ্ট দূরত্ব ও গভীর থেকে টর্পোডো ছুড়ে তার সাবমেরিনকে দ্রুত সুমুদ্রের পানির নীচে নিয়ে যাবেন।

এক কথায় যাকে বলে ক্যালকুলেটেড রিস্ক! এই বিষয়টাই হাওয়াইর মার্কিন নৌবাহিনীর ঘাটিতে তার অফিসের কামরায় তাত্ত্বিক ভাবে পরীক্ষা করছিলেন জুনিয়র নৌ-অফিসার Jack Warden যিনি ক্রাউট মুয়েলারের চরিত্রে অভিনয় করেন। ইতিমধ্যে ১৯৪৩ সালেই তিনটি মার্কিন সাবমেরিন ধ্বংস হয়েছে সেই আকাকাজীর দ্বারা এটাই পি জে রিচার্ডসন জানতেন। কিন্তু যেই তার জুনিয়র মুয়েলার জানালো কয়েকদিন আগে আরো একটি সাবমেরিন হারাইছে মার্কিনিরা তখন রিচার্ডসন রেগে বলেন যে এবার তিনি নৌবাহিনী বোর্ডকে রাজী করাবেন তাকে আরেকটি সুযোগ দিতে যাতে তিনি সেক্টর সেভেন যেখানে বাঙ্গো প্রণালী অন্তর্ভূক্ত সেখানে তার কমান্ডে সাবমেরিন নিয়ে যেতে পারেন। সর্বশেষ মিশন শেষ করে হাওয়াইয়ের পথে আসা ইউএসএস নার্কা (USS Nerka) যেন তাকে দেওয় হয় সেটাই নেভী বোর্ডকে বলবেন। নেভী বোর্ড রাজীও হয়।

এই ছবিতে দেখানো হয় যে সাবমেরিন নার্কার ক্যাপ্টেন যুদ্ধে আহত হলেও সেকেন্ড কমান্ডার Burt Lancaster যিনি জিম ব্লেডসো চরিত্রে সাফল্যের সাথে প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবেলা করে নার্কা ও তার ক্রদের রক্ষা করেন। এই কারণেই জিম ব্লেডসোকেই তার সহকারী নির্বাচন করেন রিচার্ডসন। এই দিকে নার্কাকে সেক্টর সেভেনের জন্য ক্যাপ্টেন রিচার্ডসনকে নির্বাচন করলেও এর ক্ররা ইতিমধ্যে জিম ব্লেডসোকে তাদের পরবর্তী ক্যাপ্টেন ধরে নিছে। তারা এর জন্য ব্লেডসোকে ক্যাপ্টেনের জ্যাকেটও উপহার দেয়। এই নিয়ে ব্লেডসো তার ক্রদের ঠাট্টা করে বলে "তাহলে ঘুষ দিয়েই এর শুরু, যেন বিশেষ সুবিধা পাওয়া যায়"।

এই নিয়ে তার ও ক্রদের মধ্যে হাসাহাসি। কিন্তু হঠাৎ উর্দ্ধতন নৌবাহিনীর অফিসার এসে সাবমেরিনে তাকে আলাদাভাবে জানায় যে তুমি এবার না পরবর্তীতে তোমাকে পদন্নোতি দেওয়া হবে কারণ এবার তুমি ক্যাপ্টেন রিচার্ডসনের অধীনে সেক্টর সেভেনে যাচ্ছ। এই নিয়ে ব্লেডসো মনোক্ষুন্ন হয়ে রিচার্ডসনের বাসায় গিয়ে অনুরোধ করে বলে যে আপনি নার্কা নিলেও আমার বদলে অন্যজনকে নিন। এই নিয়ে বদানুবাদ যে ক্ররা আপনাকে কিছু না বললেও তারা মনে মনে ক্ষুদ্ধ থাকবে। রিচার্ডসনও বলেন যে আমি এই সবের পরোয়া করি না কারণ বোর্ড যা দিছে সেটাই গুরুত্বপূর্ণ।

রিচার্ডসন অনড় থাকলে ব্লেডসো বলেন "আমি আনন্দিত যে আপনাকে আগেভাগে জানিয়ে গেলাম"। রিচার্ডসনও বলেন যে "তুমি রিলাক্স হও সবকিছু ঠিক থাকবে"। এই দিকে যাত্রা শুরু হল। কিন্তু যাত্রা শুরুর আগে ক্রুদের কিছুই জানানো হয়নি যে কোথায় তারা যাচ্ছে কি তাদের মিশন কিছু্ই না। তবে এটা হাওয়াই ছাড়ার পর জানানো হয়।

এর পূর্বে সব ক্রুরা সবাই(রিচার্ডসন ও ব্লেডসো বাদে) বিভিন্ন সেক্টরের উপর বাজি ধরে যে কোন সেক্টরে যাবে। পরে জয়ীরা সেই অনুপাতে বাজি জিতে। এভাবেই চলত তখন। সে যাই হৌক সবাই বিভিন্ন সেক্টর ধরলেও স্রেফ একজন নাবিক জেসি(১৯ বছর বয়স) যে নতুন ছোকরা সে এরিয়া সেভেন ধরল। যখন ক্যাপ্টেন যাত্রা শুরুর পর ডেক থেকে নীচে নেমে এল তখন সবাই স্পীকারের সামনে অপেক্ষা যে এখন ক্যাপ্টেন ঘোষণা করবে।

তো জেসির দায়িত্ব টর্পোডো লোডিং গ্রুপে। সেখানে কেউ এরিয়া ১৬ কেউ এরিয়া ২২ ধরলেও সে যখন জানাল যে আমি এরিয়া ৭ ধরছি সবাই রাগ করল। বলল "বেকুব তুই করছস কি? আমাদের সবাইরে ডুবাইতে চাস?"। সে বলল কেন? তখন একজন "এটা ওয়ান ওয়ে টিকেট"। আরেকজন "নো রিটার্ন জেসি"! তখন জেসি বলে "আমার জন্ম ৭ তারিখে"।

এখন সে দৌড়ে বাজির দায়িত্বে থাকা অফিসারকে বলল "চীফ আমি কি এরিয়া পরিবর্তন করতে পারি?"। চীফ তখন বলল তুই দেড়ী করে ফেলছস। জানা গেল ২০০ ডলার জমা হয়েছে। এর পর তখন ক্যাপ্টেনের আওয়াজ শোনা গেল। তখন যেই ক্যাপ্টেন বলল আমরা এরিয়া সেভেনে যাচ্ছি তখনই সবাই ক্ষুদ্ধ হল এবং জেসি খুশী।

একজন বলল স্পীকার বন্ধ কর। আকেজন বলল যাক আমরা কেউ বাজি জিতিনি অর্থ ফেরত দাও। তখন অফিসার বলল যে না একজনই এরিয়া সেভেন ধরছে সে হইল এই (জেসি)। উপস্থিত সবাই জেসির দিকে এমন ভাবে চাইল যে তারা যেন কবরস্থানের নীরবতায় আছে। আর ঐ দিকে জেসিও সাফাই গাইল যে "হায় যীশু আমি এই বিষয়ে জানি না, স্রেফ আমার জন্মদিন হিসেবে ধরছি" এই ঘোষণায় ক্যাপ্টেন জানাল যে তারা বাঙ্গো প্রণালীকে এড়িয়ে যাবে।

কারণ এটাকে কবরস্থান বলা হয়। এরপর যখন রিচার্ডসনের ছক কষা কৌশলের মহড়া তথা Drill শুরু হল তখন তাদের একটু খটকা জাগল। কারণ যখন সাবমেরিন পানির নীচে চলে যায়(সাধারণত শত্রু জাহাজের জন্য) এর পেরিস্কোপটা নামানো থাকে। কিন্তু রিচার্ডসনের এই বিশেষ পরীক্ষায় পেরিস্কোপ উচু করাই থাকবে। কারণ পেরিস্কোপ উচু রেখেই শত্রু জাহাজ নির্দিষ্ট দূরুত্ব ও নিজ সাবমেরিন কিছু নীচে গেলেই টর্পোডো ফায়ার করবে।

রিচার্ডসন বললেন যে কৌশলটা নতুন হলেও তোমরা রপ্ত করতে পারবে ও অভ্যস্থ হবে। এভাবে কৌশলটার বিষয়ে প্রাথমিক ভাবে ক্রুদের আয়ত্ব হলে দেখা গেল ৪৩ সেকেন্ড লাগে। এতে রিচার্ডসন সন্তুষ্ট হতে পারলেন না বললেন "ইট ইজ নট গুড"। তারপর যথারীতি এই বিষয়ে অনুশীলন চলতে থাকল। পরের বার ক্রুরা এটাকে ৩৭ সেকেন্ডে নামিয়ে আনলে রিচার্ডসন বললেন "ভেরী গুড"।

তারপরেও রিচার্ডসন জানাল যে যখন আমরা এরিয়া ৭ এ যাব তখন এটাকে আমরা ৩৩ সেকেন্ডে নিয়ে আসব টানা মহড়া তথা অনুশীলনের মাধ্যমে। এর পর হঠাৎ তাদের পেছনে দিকে একটি জাপানী সাবমেরিন ৯০ ডিগ্রী কোণে ভিন্ন পথে যাচ্ছে। ক্রুরা সবাই আশা করছিল যে রিচার্ডসন নার্কাকে মোড় ঘুরিয়ে এটাকে ধাওয়া করে ধ্বংস করবেন। কারণ নার্কার গতি জাপানী সাবমেরিন হতে বেশী। কিন্তু সবাইকে অবাক করে রিচার্ডসন বললেন "যে না নার্কা তার বর্তমান কোর্সেই চলতে থাকবে"।

এই নিয়ে ক্রুরা সবাই নাখোশ। বিশেষ করে ব্লেডসো বলল "স্যার শী(নার্কা) হেটস টু শো হার বেকসাইড টু এ জাপানীজ সাব"। এই দিকে ক্রুরা সবাই বলাবলি করতে লাগল এটা কোন ধরণের পাগলামীর যুদ্ধ যাত্রা? আরেকজন রসিকতা করে বলে "আরে এটা আবার কিসের যুদ্ধ যাত্রা...এটা মহড়ার যাত্রা। মহড়ায় ভাল পারফরমেন্সকারী ক্রুকে টোকিও রোজের সাথে মধুচন্দ্রিমা করার পুরস্কার মিলবে" টোকিও রোজ হল জাপানী রেডিওর ইংরেজীতে ভাষ্যদানকারীনি মহিলা পাঠিকা রোজী! এই যখন অবস্থা নার্কার রাডারে ধরা পড়ল যে কিছু দূরে দূরে কয়েকটি জাহাজ ভাসছে! নার্কা সেই কোর্সে চলে যখন দৃষ্টি সীমায় এল রিচার্ডসন তখন সাবমেরিনের উপর ডেক থেকে দেখলেন একটি জাপানী ট্যাংকার ও ডেষ্ট্রয়ার মমোকে। তিনি সিদ্ধান্ত নেন যেই মমো ট্যাংকারকে ছাড়িয়ে এগিয়ে যাবে তখন তিনি টর্পেডো মেরে ট্যাংকারটিকে নিমজ্জিত করবেন।

এটা তার প্রাথমিক হামলা। তারপর যথারীতি নিশানা করে ট্যাংকারটিকে ডুবিয়ে দেওয়ার জন্য টর্পোডো দিয়ে আঘাত করা হলে তা বিস্ফোরিত হয়। এরপর জাপানী ডেষ্ট্রয়ার মমো এটা দেখে সাবমেরিন নার্কাকে হামলা করার জন্য যেই কোর্সে ছুটে এল তখন সাবমেরিনের মধ্যে দায়িত্বে থাকা অফিসার বলল "ক্যাপ্টেন জেনে বুঝে ডেষ্ট্রয়ারকে আমাদের(নার্কার) সমান্তরাল পথেই নিয়ে আসছে"। তখন রিচার্ডসনও উপরে ডেক থেকে বলল "মহড়া নিয়ে যদি তোমাদের কোন প্রশ্ন থাকে আশা করি উত্তর পেয়ে গেছ। আমরা এখন মমোকে মোকাবেলা করব"।

সে সাবমেরিনের টর্পোডোর নিশানা কারিদের প্রয়োজনীয় কোর্স নির্ধারণ তথা নির্দেশনা দিয়ে জানালেন যে "১৫০০ গজ দূরত্বেই আমরা ডুব দিব এবং ঠিক ৫০ফিট নীচে গেলে দুটি টর্পেডো ফায়ার করব"। ক্যাপ্টেনের এই কথা শুনে তখন ক্রুদের পাকস্থলী যেন মুচড়ে যাওয়ার অবস্থা হয়। ভীষণ ভয় এবং অবিশ্বাস। দারুণ এক রোমাঞ্চ কর অবস্থা তখন! কিন্তু ক্রুদের সব ভয় ও অবিশ্বাস কে ভূল প্রমাণ করে এই নতুন কৌশলে নার্কার দুটি টর্পোডোই জাপানী ডেষ্ট্রয়ার মমোকে ধ্বংস ও নিমজ্জিত করে। ওহ সাবমেরিনের ভিতরে থাকা ক্রুদের সেই কি উল্লাস! মজার কথা হল ক্যাপ্টেন যে ৩৭ সেকেন্ডকে ৩৩ করতে বলেছিল মমোকে হামলা করতে কৌশলটা ৩২ সেকেন্ড লাগল।

যে জন বলেছিল টোকিও রোজের সাথে হানিমুন সেই ক্রু রুবি বলল "হোয়াট এ স্কীপার!"। এরপর রিচার্ডসন বললেন "তোমরা একটি জাপানী টিন ক্যানকে(রণতরী) মাত্র ৩২ সেকেন্ডে নিমজ্জিত করলে, তাই ভদ্রলোকগণ আমি আশা করি এই বোট যেকোন পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত। এটা এই বিবেচনায়ই চলুক"। বস্তুত রিচার্ডসনের কৌশল কাজে দেওয়ায় সে নার্কাকে বাঙ্গো প্রণালীতে নেওয়ার জন্য স্থির করেন যে একই ভাবে বাঙ্গোর ড্রাগন আকাকাজীকে ধ্বংস করবেন। এই নিয়ে সব ক্রুরাতো বটেই ব্লেডসো রাগান্বিত হয়ে বলে "আপনি বলেছিলেন এই বাঙ্গো প্রণালীকে এড়াবেন কিন্তু এখন কেন সেখানে যাবেন?"।

তখন রিচার্ডসন বলেন "তুমি জান যে একজন ক্যাপ্টেন যদি এটাকে বিশেষ সুবিধাজনক মনে করে তাইলে তাইলে সিদ্ধান্ত পূনঃনির্ধারণ করতে পারে"। ব্লেডসো আপত্তি করলে রিচার্ডসন বলেন মমোর উদাহরণের কথা। ব্লেডসো বললেন "আকাকাজী ইজ নট এ মমো, দেয়ার ইজ এ হেল অব ডিফারেন্স!"। কিন্তু ক্যাপ্টেন অনড়। ব্লেডসোর উপস্থিতিতে মাইক দিয়ে সকল ক্রুকে জানিয়ে দিলেন "যে বিশেষ সুবিধার কারণে আামি নার্কাকে বাঙ্গো প্রণালীতে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি"।

পরে এই নিয়ে তখন সাবমেরিনের অন্য অফিসাররা বিদ্রোহের পরামর্শ দিলেও ব্লেডসো সেটা অস্বীকৃতি জানায়। বলে যে আমরা রিচার্ডসনকেই ফলো করবো। মার্কিন নেভী রুলে আছে যে ক্যাপ্টেনের অধিকার আছে সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের। এরপর বাঙ্গো প্রণালীতে যেয়ে দেখা গেল শুধু আকাকাজী ডেষ্ট্রয়ার নয় জাপানীজ বিমানবাহিনীর জঙ্গী বিমানও হঠাৎ হাজির। তবুও রিচার্ডসন একটি সাপ্লাই জাহাজকে ডুবিয়ে নার্কার উদ্দেশ্যে টর্পেডো ফায়ার করেন যেখানে একই সময় হাফ ডজন জাপানী বিমান বোমা বর্ষণ করছিল।

তবে তারা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। নার্কার গতি যেখানে ঘন্টায় ১৮ নট সেখানে আকাকাজীর গতি ৩০ নট। তারপর ক্রুদের মতে আকাকাজীর উদ্দেশ্যে নার্কার সর্বশেষ ফায়ার করা দুটি টর্পোডোর একটিও তাকে আঘাত করেনি বরং উল্টো একটি টর্পোডো নার্কার দিকে এগিয়ে আসে। সকল ক্রুতো বটেই রিচার্ডসনকেও হতবাক করে দেয়। ঐ টর্পোডোকে কোনমতে এড়িয়ে ও রক্ষা পেয়ে সাগরের গভীরে ডুব দিলেও(সর্বোচ্চ ৩০০-৩৫০ ফিট নীচে যেতে পারে) আকাকাজীর অবিরাম ডেপথ চার্জ এটাকে ফাঁদে পড়া শিকারের অবস্থা হয় নার্কার।

এখন মূভির বাকীটা দেখে জেনে নিন কি হয় মূভিটি ডাউনলোডের জন্য টরেন্ট লিংক; Click This Link Run silent run deep 1958 torrent সরাসরি ডাউনলোড; Click This Link অথবা; Click This Link মূভিটি আসলে কাল্পনিক তথা মমো ও আকাকাজীকে ধ্বংস করতে যাওয়ার বিষয়টি সঠিক তো নয়ই বরং ইউএসএস নার্কা নামে মার্কিনিদের কোন সাবমেরিন কোন কালে না থাকলেও এই কৌশলেই অনেক জাপানী যুদ্ধজাহাজ ধ্বংস করে মার্কিন নৌবাহিনী। এই মূভিটি মার্কিন নৌবাহিনীর ক্যাপ্টেন Edward L. Beach, Jr. এর উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত হয়। এই Edward সাবমেরিন USS Piper এর অধিনায়ক সহ আরো তিনটি সাবমেরিনে কাজ করছেন। তিনি Best-selling author হিসেবেও নাম করেন; Click This Link. তবে কিছু কথা বলেতই হয় যে বেশ কিছু বিষয়ে মার্কিন নৌবাহিনী WW2এ এগিয়ে ছিল। জাপানীদের তুলনায় তাদের সাবমেরিনের গতি বেশী, আরো গভীরে ডুব দেওয়া সহ রাডার এডভান্টেজ ছিল।

আমরা জানি সাবমেরিন যখন ভেসে চলে তখন সে ডিজেলে চলে এবং তার ব্যাটারি ইলেকট্রিক চার্জ সঞ্চয় করে। যা ডুবন্ত অবস্থায় তাকে সাপোর্ট করে। এখনকার দিনে আণবিক শক্তি সহ অন্য উপায়ে সপ্তাহর উপর চার্জ থাকলেও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ৩৬ ঘন্টার বেশী ডুবে থাকতে পারত না। তাই সাবমেরিন সমূহের ক্যাপ্টেনরা বেশীর ভাগই চাইতেন আক্রমণে যাওয়ার পূর্বে যেন যথেষ্ঠ ব্যাটারী চার্জ থাকে সেই লক্ষ্যে সুমুদ্রেই যেন সিংহভাগ সময় ভেসে চলে। তখন সবচেয়ে বড় সমস্যা ছিল শত্রু পক্ষের বিমান হঠাৎ করেই উদয় হয়ে বোমা বর্ষণ করে সাবমেরিনকে ডুবিয়ে দিতে পারত।

জাপানীদের সাবমেরিনে কোন রাডার না থাকলেও মার্কিনিরা সাবমেরিনের উপযোগী রাডার স্থাপন করতে সমর্থ্য হয়। ঐ সময়ে সেই রাডার ১৫ মাইল বা ২৪ কিমি ব্যাসার্ধের মধ্যে আকাশের যেকোন বিমান এমনকি সমুদ্রের ভাসমান জাহাজকেও সনাক্ত করতে পারত। তাই জাপানী বিমান সাবমেরিনের দেখা পাওয়ার আগেই মার্কিনিরা কয়েক মিনিটের মধ্যেই সাগরে ডুব দিত। এই রাডারের নাম SJ Radar "এসজে রাডার"; http://en.wikipedia.org/wiki/SJ_radar http://www.fleetsubmarine.com/radar.html সেই ১৯৪২ সালেই মার্কিন নৌবাহিনী এটা তাদের সাবমেরিন সমূহে প্রচলন করে। এ যাবৎ কালের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অনেক সাবমেরিন যুদ্ধের মূভি দেখা হয়েছে।

নিঃসন্দেহে এই Run Silent Run Deepকে এখন পর্যন্ত সবার উপরে স্থান দিব। অনেকে হয়ত জার্মান Das Bootকে সেরা ভাবেন কিন্তু সেই ১৯৫৮ সালে যে সুযোগ সুবিধায় এবং সর্বপরি যে প্রেক্ষাপটে কাহিনী রচিত হয়েছে তা এক কথায় অসাধারণ। আই.এম.ডিবিতে এর রেটিং ৭.২ Click This Link আর ক্লার্ক গেবল ও ব্রুট ল্যাঙ্কাষ্টারের অভিনয়ও অসাধারণ। আরো বেশ কয়েকজন তারকা আছেন এখানে জ্যাক ওয়ার্ডেনের সাথে Brad Dexter, Don Rickles। আজকে আমার ব্লগিং এর ৫ বছর পূর্তি।

তাই এই পোষ্ট!
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।