দেশবাসী অনেক আশায় ছিল ২ নেত্রীর টেলি কথোপকথনে
অথচ দেখেন সেখানেই ঝগড়া!!!!
হাচিনা বারবার খালেদাকে বলছে খালেদার লাল টেলিফোন নাকি সচল ছিল
অথচ
তার মানে বিরোধী দল সত্যই বলেছিল, লাল টেলিফোন অচল ছিল, সচল হয়েছে।
শেখ হাসিনা: কেমন আছেন
খালেদা জিয়া: আছি, ভাল আছি।
শেখ হাসিনা: আমি ফোন করেছিলাম আপনাকে দুপুরে, পাইনি।
খালেদা জিয়া: দেখেন এই কথাটি যে বলছেন সেটা সঠিক না। আমি যা বলি শুনতে হবে।
দুপুরে যে ফোন করেছন বলেছেন, কিন্তু দুপুরে কোনো ফোন আসেনি। এই কথাটা সম্পূর্ণ সঠিক না। দীর্ঘদিন ধরে আমার ফোন ডেড হয়ে আছে।
শেখ হাসিনা: কিন্তু আমি নিজে ফোন করেছি…
খালেদা জিয়া: আপনি গভর্নমেন্ট চালান কী খবর রাখেন। এই খবরটুকু রাখেন না যে বিরোধীদলীয় নেতার ফোন ডেড হয়ে আছেন।
শেখ হাসিনা: রেডফোন সব সময় ঠিক থাকে।
খালেদা জিয়া: আপনারা লোক পাঠান, এখনই লোক পাঠিয়ে দেখে যান…
শেখ হাসিনা: আপনি তো জানেন, রেডফোন সব সময় ভাল থাকে
খালেদা জিয়া: ভাল থাকে, তো আমারটা তো ভাল নেই। আমি সেদিনও চেক কেরেছি। আপনি যদি সত্য কথা না বলেন, তাহলে তো চলবে না। রেডফোন ঠিক থাকে, এ কথা বিশ্বাস করতে আমি রাজি নই।
শেখ হাসিনা: কিন্তু (এরপর অস্পষ্ট)
খালেদা জিয়া: দীর্ঘদিন ধরে ফোনটা ডেড, হঠাৎ করে কি মৃত ব্যক্তি জেগে উঠবে? মৃত ফোন জেগে উঠবে?
শেখ হাসিনা: যাই হোক, যে কোনো কারণেই হোক আপনি ফোনটা ধরতে পারেননি।
খালেদা জিয়া: না আমি ধরতে পারিনি, তা আমি এখানে বসা। আমি এর মধ্যে ঘুরি। ছোটো জায়গায় থাকি। ফোন বাজলে না ধরার কারণ থাকতে পারে না।
ডেডফোন বাজতে পারে না, বুঝছেন?
শেখ হাসিনা: ঠিক আছে ফোন ডেড ছিল না করে রাখা হয়েছে।
খালেদা জিয়া: ডেড ছিল। বহু কমপপ্লেইন আপনাদের কাছে গেছে। আমার তো রেড টেলিফোনে কথা বলার লোক নাই। কার সাথে কথা বলবো।
শেখ হাসিনা: ঠিক আছে আমি আগামীকাল দেখবো কেন ডেড ছিল।
খালেদা জিয়া: দেখেন ভাল কথা
শেখ হাসিনা: আমি আপনাকে ফোন করলাম। ২৮ তারিখ সন্ধ্যায় আমি গণভবনে আপনাকে দাওয়াত দিচ্ছি। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাথে আগামী নির্বাচন নিয়ে আলোচনা করছি। আমি আপনাকে দাওয়াত দিচ্ছি।
…আপনি আমার সাথে বসে রাতে খাবার খাবেন
খালেদা জিয়া: আমি খেতে রাজি আছি। কিন্তু ২৮ তারিখে আমি যেতে পারবো না। আমাদের হরতাল আছে। ২৯ তারিখ সন্ধ্যা ছয়টায় আমার হরতাল শেষের পরে…
শেখ হাসিনা: আপনি হরতাল প্রত্যাহার করুন
খালেদা জিয়া: না হরতাল আমি প্রত্যাহার করতে পারবো না। আমি অনেকদিন ধরে আপনাদের বলছি আপনারা আলোচনায় আসুন।
আপনারা শুনেননি। কাজেই আমার হরতাল পার হওয়ার পর…
শেখ হাসিনা: কিন্তু আপনি তো নিজেই কালকে বলেছেন, এই সময়ের মধ্যে আলোচনার…
খালেদা জিয়া: না আমি বলেছি, আলোচনা চলবে কর্মসূচিও চলবে। কাজেই আপনাদের সত্যিকারের যদি আন্তরিকতা থাকে আলোচনার জন্য, আমার আপত্তি থাকবে না। আমি একা যাবো না, আমার সাথে নিশ্চয় আরও লোক থাকবে
শেখ হাসিনা: আপনি যতজন খুশি নিয়ে আসতে পারবেন।
খালেদা জিয়া: না আমি দলবল শুদ্ধ নিয়ে যেতে চাই না।
আমি যাদেরকে প্রয়োজন মনে করবো তাদেরকে নিয়ে যাবো। সেটা হতে হবে ২৮ তারিখের পর। ২৯ তারিখ আমার হরতাল শেষ হওযার পরে…
শেখ হাসিনা: আমি অুনরোধ করবো জাতির স্বার্থে জনগণের স্বার্থে হরতাল প্রত্যাহার করেন।
খালেদা জিয়া: না ২৮ তারিখ আমি হরতাল প্রত্যহার করবো না।
শেখ হাসিনা: (অস্পষ্ট)
খালেদা জিয়া: মানুষ খুন আপনারা করেছেন, গান পাউডার নিয়ে বাসে আগুন দেয়া আপনাদের চরিত্র।
আমাদের সেসব অভ্যাস নাই। মানুষ মারের, লগি বৈঠা দিয়ে মানুষ মারেন। এসব রেকর্ডেড, আপনার মুখ দিয়ে বের হয়েছে, আপনি অস্বীকার করতে পারবেন না।
শেখ হাসিনা: আমি আপনাকে অনুরোধ করবো, জনগণের স্বার্থে হরতাল প্রত্যাহার করুন।
খালেদা জিয়া: না জনগণের স্বার্থেই আমি হরতাল দিয়েছি।
যেহেতু আপনারা কোনো আলোচনায় আসতে রাজি নন।
শেখ হাসিনা: আলোচনায় তো…
খালেদা জিয়া: আপনাদের মন্ত্রীরা বলে দিয়েছেন আলোচনা হবে না।
শেখ হাসিনা: কে বলেছে হবে না…
খালেদা জিয়া: আপনি বলে দিয়েছেন, আমাদের প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছেন। বলেছেন, কোনো আলোচনার দরকার নাই। আবার এখন আলোচনার কথা বলছেন।
সে আলোচনা হতে পারে, তবে তা আমাদের কর্মসূচির আগে না। এই ফোনটা যদি আপনি একদিন আগে করতেন, তাহলে সুযোগটা ছিল।
শেখ হাসিনা: আমি যে ফোন করবো, তা তো একদিন আগের ঘোষণা না। আপনি জানেন আমি বিভিন্ন দলের সাথে…
খালেদা জিয়া: আমাদের অত ব্যর্থতা না থাকলেও কিছু ব্যর্থতা ছিল। কিন্তু ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়…
শেখ হাসিনা: অস্পষ্ট
খালেদা জিয়া: কাল যে আমাদের পারমিশন দিলেন, এতো দেরিতে দিলেন কেন।
কতোদিন আগে পারমিশন চেয়েছি। মাইক পর্যন্ত লাগাতে দেননি। কতো মানুষ এসেছে জনসভায় কথা শোনার জন্য। মানুষ এসে কথা পর্যন্ত শুনতে পারেননি।
শেখ হাসিনা: আমি তো আলোচনা করবো সরাসরি।
খালেদা জিয়া: না, আপনি বলুন, মাইক কেন দেয়া হলো না
শেখ হাসিনা: মাইক তো দেয়া হয়েছে…
খালেদা জিয়া: না না, আমরা যতখুশি মাইক ব্যবহার করবো। লোক অনেক বেশি, শুনবে। কিন্তু দেয়া হয়নি। দেশে যুদ্ধাবস্থা হয়েছে না কি যে এসব শুরু করে দিলেন আপানারা।
শেখ হাসিনা: আমি এসব বিষয়ে কথা বলতে চা্ইছি না।
খালেদা জিয়া: কথা বলতে না চাইলে কি
শেখ হাসিনা: এসব সত্য না…
খালেদা জিয়া: না এসব সত্য, রেকর্ডেড। আপনারা মিটিং করতে দেবেন, মাইক ব্যবহার করতে দেবেন না। এমন সময়ে মিটিং করতে দেবেন, মঞ্চ করতে দেবেন না। আপনি মিটিং করেননি? কি করেননি?
শেখ হাসিনা: আমার মনে আছে, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার কথাও মনে আছে।
খালেদা জিয়া: গ্রেনেড হামলা করেছেন আপনারা।
আমরা হামলা করি না। (এরপর অস্পষ্ট)
শেখ হাসিনা: রাত ১১ টায় অনুমতি দিলেন… সেটাও মনে আছে…
খালেদা জিয়া: আপনার ভেন্যু চেঞ্চ করেছেন। আপনাদের ভেনু ছিল মুক্তাঙ্গনে। সেখান থেকে আপনারা ভেনু চেঞ্চ করে নিয়ে গেছেন, সেটাও আমাদের জানাননি। পুরনো কথা খুঁজে লাভ নেই।
আমরা পারমিশন দিয়েছি, রেকর্ড খুঁজে বের করেন।
শেখ হাসিনা: রেকর্ড আছে আপনারা রাত ১১টায় অনুমতি দিয়েছিলেন।
খালেদা জিয়া: রেকরর্ড আমাদের কাছেও আছে। আমরা পারমিশন দিয়েছি। … এখন আপনাকে আমি বলছি, যদি সত্যিকারের আলোচনায় আন্তরিক হন, তাহলে…
শেখ হাসিনা: আমি এসব নিয়ে ঝগড়া করতে চাই না…
খালেদা জিয়া: ঝগড়া তো আপনিই করছেন।
শেখ হাসিনা: আপনি তো এক তরফাই বলে যাচ্ছেন, আমি তো কথা বলারই সুযোগ পাচ্ছি না।
খালেদা জিয়া: একতরফা বলবো কেন, আমি তো কেবল আপনার কথার জবাব দিচ্ছি।
শেখ হাসিনা: আমি তো কথা বলারই সুযোগ পাচ্ছি না।
খালেদা জিয়া: না না, আপনি বারবার বলছেন, হরতাল, হরতাল প্রত্যাহার করেন। আমাদের কর্মসূচি শেষ হবে এরপর।
শেখ হাসিনা: আপনি হরতাল করা আর মানুষ খুন করা অব্যাহত রাখবেন?
খালেদা জিয়া: আমি আমরা খুন করি না, মানুষ খুন করেন আপনারা। আপনার ছাত্রলীগ, যুবলীগ করে না। আমরা অস্ত্রসহ ছবি দেখাতে পারবো, কীভাবে নিরীহ মানুষ খুন করে তারা।
শেখ হাসিনা: খুনের রাজনীতি আমরা করি না। বরং আমরা শিকার (এরপর অস্পষ্ট)
খালেদা জিয়া: আপনি কেবল এইবার না।
আপনার ইতিহাস পুরো লজ্জার। স্বাধীনতার পর থেকে। একাত্তরে যখন ক্ষমতায় ছিলেন তখনও হত্যা করেছেন, ভুলে গেছেন এখন?
শেখ হাসিনা: একাত্তরে আমরা হত্যা করেছি?
খালেদা জিয়া: অবশ্যই, একাত্তরের পরে…
শেখ হাসিনা: আপনারা আন্দোলন করেছেন যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষার জন্য…
খালেদা জিয়া: যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা আমরা করছি না। আপনারা বিচার যদি ঠিকভাবে করতেন আমরা সমর্থন দিতাম। কিন্তু সে ট্রাইব্যুনাল আপনি করেননি।
আপনার দলে অনেক যুদ্ধাপরাধী আছে তাদের বিচার করেননি। আপনি কি নিরপেক্ষ প্রধানমন্ত্রী? আপনি তো প্রধানমন্ত্রীই না। আপনি দেশের প্রধানমন্ত্রী হতে পারেননি। নিরপেক্ষতার ঊর্ধ্বে যেতে পারেননি। কীসের প্রধানমন্ত্রী আপনি? নইলে আমার সাথে এমন আচরণ করতেন না।
সেদিন পার্টি অফিসে আমার সোথে যে আচরণ করেছেন। এরপরও আরও বলতে হবে? বিরোধীদলীয় নেতাকে সম্মান দিতে জানেন না, কীসের গণতন্ত্রের কথা বলেন আপনি?
শেখ হাসিনা: আপনার কথার জবাব দিতে হলে তো আমাকে ২০০১ সাল থেকে অনেক কথাই বলতে হবে।
খালেদা জিয়া: সেটার জবাব আমিও দিতে পারি। আপনি দেবেন? আমিও সামনা সামনি সেটার জবাব দিতে পারি।
শেখ হাসিনা: এরশাদ বা তাঁর দলের সঙ্গে কী কী করেছিলেন, ২০০১ সালে আওয়ামী লীগের সঙ্গে কী কী করেছিলেন…
খালেদা জিয়া: এরশাদের সঙ্গে আমরা কিছুই করেনি।
এরশাদের সঙ্গে যত করেছিলেন আপনারা। এরশাদ যখন একটা নির্বাচিত সরকারের কাছ থেকে ক্ষমতা নিল তখন আপনি বিবিসিতে বললেন, আই অ্যাম নট আন হ্যাপি। তার পর আর কী থাকে।
শেখ হাসিনা: না, এটা আমি কখনো বলিনি…
খালেদা জিয়া: আর ফখরুদ্দিন-মঈনুদ্দিন কোন সাংবিধানিক নিয়মে ক্ষমতায় ছিল বলেন তো?
শেখ হাসিনা: ফখরুদ্দিন-মঈনুদ্দিন আপনাদের চয়েজ ছিল।
খালেদা জিয়া: ফখরুদ্দিন-মঈনুদ্দিন আমার কিছুই ছিল না।
আপনি বলেছেন ‘তারা আমার আন্দোলনের ফসল। ’
শেখ হাসিনা: মঈনুদ্দিনকে কারা সেনা প্রধান বানিয়েছিল?...
খালেদা জিয়া: আমি কিছু করেনি, আপনি বলেছিলেন আপনার আন্দোলনের ফসল। সব ভুলে যেতে চান? কিন্তু মানুষ তো ভোলে না।
শেখ হাসিনা: নয়জন আর্মি অফিসারকে ডিঙ্গিয়ে আপনি মঈনুদ্দিনকে আর্মি চিফ বানিয়েছিলেন।
খালেদা জিয়া: সেটা আমি করতে পারি।
কিন্তু আপনি এরকম অনেক অফিসারকে বাড়ি পাঠিয়েছেন।
শেখ হাসিনা: আমি কাউকে বাড়ি পাঠাইনি…
খালেদা জিয়া: এটা নয়জন কী সাতজন সেটা বড় বিষয় নয়। মঈনুদ্দিন যেই থাকুক না কেন, মঈনুদ্দিন যখন ইয়ে করল তখন আপনি সেই অনুষ্ঠানে গেলেন কেন? কিন্তু ওই সরকার সংবিধান সম্মত ছিল না। কেন গেলেন সেদিন? সেদিন তো আপনি মনে করেননি আমরা দুই দলই ক্ষমতার বাইরে। তখন তো একবার মনে করলেন না আমরা আলোচনা করি।
ফখরুদিন-মইনুদ্দিনের এখানে যাওয়া ঠিক হবে না। এরা সংবিধানসম্মত নয়। আপনি তো সেটা মনে করলেন না। চলে গেলেন সেখানে হাসিমুখে।
শেখ হাসিনা: আমি আগুনে বসেও হাসিখুশি থাকি।
আবার বাবা, মা, ভাই...
খালেদা জিয়া: অতীত ছেড়ে দিয়ে আমি বলতে চাই এখন সামনের দিকে কী করে আগাবেন...আপনার যদি সত্যি সত্ উদ্দেশ্য থাকে তাহলে আমরা সামনের দিকে কী করে এগুবো...সামনের দিকে এগুতে চাই।
শেখ হাসিনা: আপনি তো অনেক অভিযোগ করলেন। আমি তো এত অভিযোগ করতে চাই না। ছোট্ট রাসেল..., ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালিয়ে আমাকে হত্যার চেষ্টা করেছেন।
খালেদা জিয়া: ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা আপনারা করিয়েছেন।
আপনাকে হত্যা করতে কেউ চায়নি। আমরা চাই আপনি থাকুন। আপনি যত থাকবেন, তত আমাদের জন্য ভালো। …
শেখ হাসিনা: ১৫ আগস্ট আপনি যখন কেক কাটেন...
খালেদা জিয়া: ১৫ আগস্ট আমার জন্মদিন। আমি কেক কাটবই।
শেখ হাসিনা: খুনিদের উত্সাহিত করার জন্য যখন আপনি কেক কাটেন। ...
খালেদা জিয়া:..এটা বলেন না। ১৫ আগস্ট বাংলাদেশে কোনো মানুষের জন্ম হবে না? কোনো মানুষ পালন করবে না। কেউ কেক কাটবে না? এগুলো বাদ দেন। কথায় কথায় আপনরা বলেন।
অনেক কথা বলেন জিয়াউর রহমানকে। আরে জিয়াউর রহমান তো আপনাদের নতুন জীবন দান করেছে। এগুলো কথা বইলেন না। বুঝেছেন। আপনারা তো বাকশাল ছিলেন।
আপনারা জিয়াউর রহমানের বদলৌতে আওয়ামী লীগ হতে পেরেছেন। আদার ওয়াইজ আওয়ামী লীগ হতে পারতেন না।
শেখ হাসিনা: রাসেলকে তো এই বাসায় ঘুরতেও দেখেছেন। ...
খালেদা জিয়া: আমি তো সবকিছু ভুলে যেতে চাই। আসুন নতুন করে শুরু করি।
সেটাতে আপনি রাজি থাকেন, আসেন আমরা সুন্দর আলোচনা করি। আমার আলোচনা করতে আপত্তি নাই। কিন্তু সেই ডেট হতে হবে আমার হরতাল শেষ হওয়ার পর।
শেখ হাসিনা: আপনার হরতাল প্রত্যাহার করবেন না?
খালেদা জিয়া: না, আমি হরতাল প্রত্যাহার করতে পারব না। এটা তো আমার ডিসিশন না।
এটা ১৮ দলের ডিসিশন। আমি এটা কী করে একলা করব।
শেখ হাসিনা: আপনি ১৮ দলকে ডেকে নিয়ে বলেন...
খালেদা জিয়া: এখন সময় নাই। আপনি যে তাড়া করতেছেন। এখন তো খুঁজে পাওয়া যাবে না লোকজনকে।
আপনি তো সবার পেছনে পুলিশ লাগিয়ে রেখেছেন। কী করে মানুষ পাওয়া যাবে, বলেন?
শেখ হাসিনা: আমরা পুলিশ লাগিয়ে রাখব কেন?
খালেদা জিয়া: আপনি লাগিয়ে রাখবেন না তো কে রাখবে? পুলিশ কার কথায় কি আমার কথায় চলে? আপনি তো সবার বাসায় বাসায় রেড করছেন। বস্তি থেকে পর্যন্ত আপনি লোক ধরে নিয়ে যাচ্ছেন।
শেখ হাসিনা: যেখানে বোমা ব্লাস্ট হয়ে যাবে...
খালেদা জিয়া: বোমা ব্লাস্ট হয়ে যাবে। বোমা ব্লাস্ট তো আপনারা করেন।
আর নাম দেন আমাদের। এগুলো তো আপনাদের পুরাতন ঐতিহ্য। আমি বলতে চাই, যদি আপনারা ২৯ তারিখের পরে করেন আমি রাজি আছি। আমি নিশ্চয় কথা বলতে রাজি আছি।
শেখ হাসিনা: আপনি আলটিমেটাম দিলেন দুই দিনের।
এখন আমি দুই দিনের মধ্যেই ফোন করলাম। অথচ এখন হরতাল ও করবেন আবার বলছেন ২৯ তারিখের পরে। আপনি কী বক্তৃতা দিলেন আর আজকে এখন কী বলছেন, আপনি একটু ভেবে দেখেন।
খালেদা জিয়া: আমি বলেছি আলোচনা চলুক, কর্মসূচিও চলবে।
শেখ হাসিনা: আপনি নিজেই বলছেন দুই দিনের মধ্যে আলোচনা...হরতাল দিবেন না।
...শুনেন আমার কথা...আমার এখানে ক্যামেরা নাই...
খালেদা জিয়া: আমার এখানে ক্যামেরা টেমেরা নাই। আমি নিজেই কথা বলছি। আমি বাসায় বসে কথা বলছি। অফিসে হলে আমার জন্য সুবিধা হতো। ক্যামেরা টেমেরা থাকত।
টেলিভিশনে দেখব আপনারাই ক্যামেরা দেখাচ্ছেন। ...যে বলেছে...টেলিভিশনে স্ক্রল দিয়েছে যে ওনার রেড টেলিফোন ঠিক আছে। আমি এটা দেখতে চাই।
শেখ হাসিনা: আামি খবর নিলাম। ফোন ঠিক আছে।
১০-১২ বার ফোন করেছি।
খালেদা জিয়া: ফোন ঠিক নাই। তাহলে বলতে চান আমরা কেউ ফোনে শুনছি না। ফোন বাজে আমরা কেউ শুনি না।
শেখ হাসিনা: আমি কানে শুনব কি করে।
গ্রেনেড হামলায় তো আমার এক কান এমনিতেই নষ্ট। ...ফোন আমি নিজে করেছি।
খালেদা জিয়া: আপনি নিজে করলে কী হবে। আপনি একটা ডেড ফোনকে... আপনি বলেছেন আপনি ফোন করেছেন।
শেখ হাসিনা: ফোন রিং হচ্ছিল
খালেদা জিয়া: রিং হবে কী করে।
যে ফোন ডেড, সেটা রিং হবে কী করে। এটাই তো মন-মানসিকতার পরিচয়। আপনি কি সত্যি কথা বলছেন কি না।
শেখ হাসিনা: আমি সত্যি কথা বলছি। মিথ্যা বলার কিছু নেই...
খালেদা জিয়া: আমি কাল পর্যন্ত চেক করেছি।
আপনি করতে পারেন। ...ফোন চেক করে রিপোর্ট করেছি। আপনারা...লোকজন...কেউ আসেন। তারা তো আমাদের মানুষ বলে মনে করে না। কাজেই আসেও না, টেলিফোন ঠিক করা গরজও বোধ করে না।
রেড টেলিফোন কেন? আজকাল তো মোবাইল ফোন আছে, টিঅ্যান্ডটি আছে।
শেখ হাসিনা: রেড টেলিফোনের দোষ দিয়ে খামাখা মিথ্যা বলার তো দরকার নেই।
খালেদা জিয়া: মিথ্যে বলব কিসের জন্য। যে টেলিফোন ডেড। তো ডেডকে ডেড বলবই তো।
আপনি বললে তো হবে না যে ফোন বিজি ছিল। এটা বললে কেউ বিশ্বাস করবে না
শেখ হাসিনা: এক্সচেঞ্জে কালকে খবর নেওয়াই যাবে। এটা কোনো ব্যাপার না।
খালেদা জিয়া: কিন্তু আপনার গুলশান এক্সচেঞ্জ থেকে যে বলেছে, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। কারণ সে সত্য কথাটা বলেনি।
শেখ হাসিনা: রেড টেলিফোন কিন্তু আলাদা এক্সচেঞ্জ। আরও ভালো করে জানবেন।
খালেদা জিয়া: আলাদা এক্সচেঞ্জই। টেলিভিশন স্ক্রল দিছে। আপনি নিজে সামনে থাকলে দেখতেন।
শেখ হাসিনা: আমি গণভবনের অফিসে বসে আছি। আমার অফিসে কোনো টেলিভিশন নেই।
খালেদা জিয়া: তাহলে কেন বলা হচ্ছে, টেলিফোন ঠিক আছে।
শেখ হাসিনা: আপনার শিমুল বিশ্বাসের সাথে কথা হয়েছে...
খালেদা জিয়া: আপনার সঙ্গে কথাই ছিল যে এই টেলিফোনে কথা হবে আমাদের। আমি তো বসে আছি এখানে।
আধা ঘণ্টা বসে আছি যে আপনার টেলিফোন আসবে। আমরা তো গোপন কিছু বলব না। একসময় আমরা অনেক কথা বলেছি। এরশাদবিরোধী আন্দোলনে একসঙ্গে কাজ করেছি। কেন কথা বলব না।
এখনো বলতে চাই, কাজ করতে চাই। আসুন দেশের...
শেখ হাসিনা: আগামী ২৮ তারিখ আসেন। আমরা আলোচনা করি।
খালেদা জিয়া: না, আমি ২৮ তারিখ যেতে পারব না। আপনি যদি সত্যি আন্তরিক হন, ২৯ তারিখের পর ডেট দেন।
আমি আসব।
শেখ হাসিনা: আপনি কালকে বললেন...
খালেদা জিয়া: না, আমি কর্মসূচি দিয়ে ফেলেছি। এখন সম্ভব না।
শেখ হাসিনা: আপনি নিজেই বলেছেন, দুই দিনের মধ্যে আলোচনার জন্য না ডাকলে হরতাল দেবেন।
খালেদা জিয়া: আমি হরতাল দিয়ে ফেলেছি।
তার আগে বলা উচিত ছিল।
শেখ হাসিনা: আপনি আপনার বক্তব্যটা আবার শুনেন।
খালেদা জিয়া: হ্যাঁ, এখন আমি নিজে শুনলেও কর্মসূচি দিয়ে ফেলেছি। সঙ্গে সঙ্গেই বলেছি, কর্মসূচিও চলবে, আলোচনাও চলবে।
শেখ হাসিনা: আপনি যেহেতু বললেন দুই দিনের মধ্যে...
খালেদা জিয়া: আমি বলেছি।
কর্মসূচি-সংলাপ একসঙ্গে চলবে।
শেখ হাসিনা: এর আগেই আমি ফোন করলাম।
খালেদা জিয়া: না, হরতাল চলবে। কর্মসূচি ঠিক হয়ে গেছে। ১৮ দলের সবার সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
১৮ দল পাব কোথায় এখন? এখন কেউ নেই।
শেখ হাসিনা: ১৮ দল আপনি পাবেন, ডাকলেই পাবেন। আপনি ডাকলে হবে না, এটা কোনো কথা হলো নাকি। এটা কেউ বিশ্বাস করবে না।
খালেদা জিয়া: বিশ্বাস করবে না ঠিক আছে।
আমি ডাকলে হতো। কিন্তু এখন হবে না, এই কারণে...
শেখ হাসিনা: আপনি বললেন, দুই দিনের মধ্যে আলোচনা না করলে আপনি হরতাল দেবেন। এ সময়ের মধ্যেই আপনাকে ফোন করলাম।
খালেদা জিয়া: না, আপনি যদি কাল রাতেও যদি আপনি ফোন করতেন, তাহলে কর্মসূচি বিবেচনা করা যেত। পুরো রাত চলে গেছে।
সকালে অফিসে চলে গেছি।
শেখ হাসিনা: রাতে ফোন না দিলে তো আপনার হয় না। আমি রাত জাগি না।
খালেদা জিয়া: আপনি কি সন্ধ্যার সময় ঘুমিয়ে পড়েন?
শেখ হাসিনা: আমি নামাজ পড়ি...
খালেদা জিয়া: আমি জানি। আপনি নামাজ পড়েন, কোরআন পড়েন... করেন।
সবই জানি। ...
শেখ হাসিনা: আপনি যে সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন আমি ঠিক সেই সময়ের মধ্যেই আপনাকে ফোন করেছি আলোচনার জন্য।
খালেদা জিয়া: এখন আমার দলের কোনো নেতাকে পাব না, কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাদের পাব না, ১৮ দলের নেতাদের পাব না, কার সাথে কথা বলে আমি এটা প্রত্যাহার করব, আপনি বলেন?
শেখ হাসিনা: আপনি কাউকে পাবেন না—এটা একটা কথা হলো? আপনি হুকুম দিলেই তো সব হবে।
খালেদা জিয়া: আরে আপনার ডিবি, এসবি তো আমার বাড়ি ঘেরাও করে রেখেছে। আমার নেতারা কি করে আসবে বলেন?
শেখ হাসিনা: আপনারা ছুরি-কাঁচি-দা-কুড়াল নিয়ে মানুষকে আক্রমণ করার কথা বলছেন।
খালেদা জিয়া: ছুরি-কাঁচি-দা-কুড়াল নিয়ে তো আপনারা করেন। বিশ্বজিেক আপনার লোকজন দা দিয়ে হত্যা করল না?
শেখ হাসিনা: আমার লোকজন না। যারা করেছে তারা অনেক আগে থেকেই বহিষ্কৃত। আমরা তাদের সবাইকে গ্রেপ্তার করেছি।
খালেদা জিয়া: আমি আপনাকে আবার রিকোয়েস্ট করছি, ২৯ তারিখের পর আপনি সময় দেন, আমি আলোচনায় রাজি আছি।
এখন এই কর্মসূচি থেকে বেরোনোর কোনো পথ নেই। আপনি ৩০ তারিখে ডাকেন, আমি যাব।
শেখ হাসিনা: আপনি জনগণের সামনে, জাতির সামনে যে বক্তব্যটা দিয়েছেন, সেটা অনুসরণ করেন। হরতাল প্রত্যাহার করেন।
খালেদা জিয়া: সেটা করার পথ আর খোলা নেই এখন।
টাইম ওভার হয়ে গেছে। আপনি যদি কাল রাতেও ফোন করতেন, আমি রাতেই মিটিং ডাকতাম।
শেখ হাসিনা: আপনি দুই দিন সময় দিয়েছিলেন। আমি দুই দিনের মধ্যেই আপনাকে ফোন করেছি।
খালেদা জিয়া: আপনি কি মনে করছেন এই হরতালেই আমাদের কর্মসূচি শেষ হয়ে যাবে!
শেখ হাসিনা: না, না।
আপনি তো আরও হরতাল দেবেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।