আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

Government's Tele-Drama falls flat on its face!

লেখার মত তেমন কিছুই নেই

কথায় আছে অতি চালাকের গলায় দড়ি, ইনুদের মত পেপার-সর্বস্ব বাম ভাড়দের বুদ্ধিতে চলতে গিয়ে আওয়ামী লীগের হয়েছে এই অবস্থা। প্রথমে দুই নেত্রীর কথাবার্তার অংশ বিশেষ দেখি [সময়কাল ১৭ মিনিট থেকে ১৭ মিনিট ৩০ সেকেন্ড] হাসিনা: আপনিতো সামনে ক্যামেরা নিয়ে বসে কথা বলছেন? (নিজেই নিজের জন্য ফাঁদ ফাঁদেন!) খালেদা: ক্যামেরা ট্যামেরা নেই। আপনিই ক্যামেরা ঘিরে বসে আছেন এবং ছবিও নিচ্ছেন। হাসিনা: আমার এখানে ক্যামেরা নেই, এখানে কেউ নেই (হায়রে সত্যবাদী যুধিষ্ঠির!) খালেদা: আমার এখানে ক্যামেরা ট্যামেরা কেউ নেই, বুঝছেন। ক্যামেরা ট্যামেরা কেউ নেই আমার এখানে, আমি নিজেই কথা বলছি।

সেজন্যে আমি বাসাতেই কথা বলছি, অফিসে হলে আমার জন্য সুবিধা হত ক্যামেরা ট্যামেরা থাকত, সুবিধা হত। আমি এত নিচু কাজ করতে চাই না। তারপরে টেলিভিশনে দেখব আপনারাই ক্যামেরা দেখাচ্ছেন, আমাদের এখানে ক্যামেরা কিচ্ছু নেই, বুঝেছেন। সরকার দাবি করছে তারা এটা ফাঁস করেনি, আসলেই কি তাই? দুটো বিষয় খেয়াল করেন; প্রথম, প্রকাশ করেছে ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াতে আওয়ামী লীগ দলের মুখপাত্রের দায়িত্ব পালনকারী ৭১টিভি (বিটিভি হলো ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াতে সরকারের মুখপাত্র, বর্তমান সরকারী দল আওয়ামী লীগ ভবিষ্যতে অন্য দলও হতে পারে)। প্রকাশটা যদি এনটিভি বা আমার দেশের মাধ্যমে হত তাহলে ধরে নেওয়া যেত এটা বিএনপির কাজ।

এখানে আরো লক্ষ্যনীয় যে, সব পক্ষের অনুমতি না নিয়ে প্রকাশের পরও ৭১টিভি এর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। কিন্তু এনটিভি এভাবে প্রকাশ করলে এতক্ষণে হয়ত তাদের বিরুদ্ধে আমার দেশ বা অধিকারের মত ব্যবস্থা নেওয়া হত। দুই, এটা প্রকাশের পর দুই পক্ষের প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যাক। বিএনপি তীব্রভাবে নিন্দা করছে, বলছে এটা শিষ্টাচার বহির্ভূত কাজ। অন্যদিকে ইনু বলছে, এটা প্রকাশ হওয়া উচিৎ (সব পক্ষের সম্মতি আছে কিনা যেন তার ধার ধারার দরকার নেই)।

কাদের দ্বারা এটা প্রকাশ পেল সেটা দুধের বাচ্চাও বুঝবে! কিন্তু কেন এমন করা হলো? উদ্দেশ্য অত্যন্ত পরিষ্কার, রাজনৈতিক সুবিধা আদায়ের লক্ষ্যে অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে পুরো বিষয়টা সাজানো হয়েছে। কিভাবে ধাপে ধাপে আগানো হয়েছে লক্ষ্য করুন; প্রথম, দুপুরের পর থেকেই মিডিয়া ব্যবহার করে একটা নিগেটিভ প্রচারণা চালানো হলো যে, খালেদা জিয়া শেখ হাসিনার ফোন ধরছেন না। নিজেকে প্রশ্ন করেন, সন্ধ্যার সময় যে শেখ হাসিনা সব মিডিয়া ডেকেই কথা বলছেন তিনি দুপুরে মিডিয়াকে ডাকেননি কেন? কারণ, আর কিছু না খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নিগেটিভ প্রচারণা চালিয়ে আগে থেকে তাকে একটু রাগান্বিত বা বিরক্ত করে রাখা। ব্যাপারটা এভাবে চিন্তা করুন, আপনার বন্ধু যদি ফোন করে বলে যে, সে আপানকে ঘন্টাখানেক ফোন করে পায়নি যেটা আদৌ সত্য নয়, সেক্ষেত্রে কি আপনি একটু বিরক্ত হবেন না? আর এক্ষেত্রে ব্যাপারটা আরো জটিল, তারা দুজন বন্ধুও নন এবং এখানে ব্যাপারটা শুধুমাত্র দুজনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি বরং মিডিয়াকে দিয়ে পুরো দেশবাসীকে বলার চেষ্টা করা হয়েছে যে খালেদা জিয়া ফোন ধরছেন না। পুরো জিনিসটা খালেদা জিয়ার জন্য আরো বিব্রতকর।

প্রথম চাল সফল! দুই, শেখ হাসিনা আগে থেকেই জানতেন এটা রেকর্ড করা হবে এবং তারা যে উদ্দেশ্য নিয়ে এগুচ্ছেন যদি সবকিছু সেভাবেই এগোয় তাহলে সেটা পরে প্রকাশিত করা হবে। উদ্দেশ্যটা কি? খালেদা জিয়ার একটা নিগেটিভ ইমেজ দাড় করানো এবং সাথে সাথে মানুষকে দেখানো শেখ হাসিনা খালেদা জিয়ার তুলনায় ভদ্র, শিষ্ট, মার্জিত। ফলে আমরা কি দেখলাম? যে শেখ হাসিনা দিনে একবার খালেদা জিয়াকে নিয়ে অশ্লীল কটুক্তি না করলে পেটের ভাত হজম হয়না তিনিই রাতারাতি হয়ে গেলেন দুনিয়ার সবথেকে শান্ত, শিষ্ট, ভদ্র মহিলার মূর্ত প্রতিক। এবং একই সাথে ঠান্ডা মাথায় প্রথম থেকেই খালেদা জিয়াকে ক্রমাগত খোঁচা দিয়ে যেতে থাকলেন যেন খালেদা জিয়া মেজাজ হারান। দ্বিতীয় চালও সফল! কিন্তু শেষমেষ কি পুরো গেমটা সরকারের পক্ষে গিয়েছে? আপাতদৃষ্টিতে যায়নি বরং বিলবোর্ডের মত বুমেরাং হয়েছে।

কারণ মানুষ এখন পুরো বিষয়টাকেই সন্দেহের চোখে দেখছে, খালেদা জিয়া কেমন করে কথা বলেছেন তার থেকে শেখ হাসিনা যে খালেদা জিয়ার তুলে ধরা অভিযোগগুলোর একটারও কোনো উত্তর না দিতে পেরে অসহায়ভাবে হজম করে গেছেন সেটা নিয়ে কথা বলছে, সার্বিকভাবে সরকারের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। তার থেকেও বড় ব্যাপার, পুরো জিনিসটার আইনগত বৈধতা নিয়ে দেশের বিশিষ্ট আইনজীবী ও ব্যক্তিরাও এখন প্রশ্ন তুলছেন। এমনকি সরকারী পত্রিকা বলে পরিচিত ইত্তেফাকের আজকের প্রধান সংবাদ হয়েছে 'আইন লঙ্ঘন করে ফোনালাপ প্রচার'! খালেদা জিয়া গত কয়েকটি ভাষণে একটি কথা বারবার বলছেন, 'অন্যের জন্য গর্ত খুঁড়লে সেখানে নিজেকেই পরতে হয়', শেখ হাসিনার উচিৎ ছিল খালেদা জিয়ার অন্তত এই কথাটি একবারের জন্য হলেও ভেবে দেখা।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।