একটি বই প্রকাশ, একটি সন্তান জন্মদানের মতই কঠিন কাজ। দু’একটি বই যারা প্রকাশ করেছেন, তাদের সাথে আলাপ করলেই বিষয়টি বুঝতে পারবেন। এবার আমরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় যাই।
যারা ব্লগে বা অন্য মাধ্যমে লেখালেখি করছেন, তাদের অনেকেরই স্বপ্ন একটি বই প্রকাশ। নিজে নিজে একটি বই প্রকাশ করতে হলে আপনাকে জানতে হবে বই প্রকাশের ধাপগুলি।
১. বই লেখা
২. কম্পোজ
৩. প্রুফ রিডিং
৪. প্রচ্ছদ ডিজাইন
৫. আইএসবিএন নাম্বার নেওয়া
৬. পেজ সেট আপ ও ট্রেসিং/পজিটিভ প্রিন্ট
৭. প্রচ্ছদের পজিটিভ প্রিন্ট
৮. পেস্টিং/ বইয়ের ইনার প্রিন্ট ও প্রচ্ছদ প্রিন্ট
৯. কভার লেমিনেট
১০. বই বাঁধাই
১১. কপি রাইট অফিসে বই প্রদান
১২. বই বাজারজাত করণ
বই লেখা নিয়ে আমি কিছু বলব না। বই তো সবাই লিখছেন। বিশেষ করে ব্লগে অনেক লেখাই আমরা পড়ে থাকি, সব লেখাই যে বই হয়েবের হবে না, সেটাও আমরা জানি। অনেকে কাগজে কলমে লেখেন, কেউবা আবার কম্পিউটারে কী-বোর্ডে লেখে। যা লেখা হোক না কেন তা সম্পদনা বা পরিমার্জনা করে বই আকারে নিয়ে আসতে হবে।
বই সাধারণত ছাপা হয় বিজয় সফট ওয়্যার-এ। যারা অভ্র বা অন্য সফট ওয়্যার-এ লিখছেন তাদেরকে বিজয়-এ কনভার্ট করে নিতে হবে। সাধারণত এসময় ফন্ট ভেঙ্গে যায়। বিজয় এ কনভার্ট করে দেখতে হবে কী কী সমস্যা হলো। সেগুলো সম্পাদনা করতে হবে।
হাতে লেখা বই কম্পোজ করে প্রিন্ট করতে হবে। প্রিন্ট করার পর একজন প্রফেশনাল প্রুফ রিডার দিয়ে প্রুফ রিডিং বা বানান ভুল সঠিক করে নিতে হবে। সব শেষ নিজে আর একবার প্রুফ রিডিং করে নিবেন।
প্রচ্ছদ ডিজাইনের জন্য একজন প্রচ্ছদ শিল্পীর দারস্থ হতে হবে। অনেকে নিজস্ব আইডিয়ায় গ্রাফিক ডিজাইনার দিয়ে করিয়ে নেন সেক্ষেত্রে যথেষ্ট মান সম্পন্ন নাও হতে পারে।
আপনাকে বই প্রকাশের আগে জাতীয় গ্রন্থাগার থেকে আইএসবিএন নাম্বার নিতে হবে। পরিচিত কোন প্রকাশনী অথবা সংগঠনের ব্যানারে আপনি আইএসবিএন নাম্বার নিতে পারেন। এজন্য আপনাকে বইয়ের কিছু পৃষ্ঠার ফটোকপি দিতে হবে।
প্রচ্ছদের পজিটিভ প্রিন্ট ও বইয়ের ট্রেসিং/পজিটিভ প্রিন্ট করতে হবে। এরপর প্রেসে নিতে হবে ছাপার জন্য।
প্রেসে আপনি কাগজ কিনে দিতে পারেন, অথবা প্রেসকে কিনে নিতে বলতে পারেন। বই ছাপার জন্য ট্রেসিং পেপারের পৃষ্ঠাগুলিকে ফর্মা আকারে সাজানোকে বলে পেস্টিং। এটি প্রেস থেকেই করে নেবে। ছাপার ক্ষেত্রে আপনাকে প্রচ্ছদ ছাপাতে হবে চার রঙে আর্ট পেপারে। বই ভেতরের পৃষ্ঠা ছাপাতে পারেন বাংলাদেশী অফসেট বা বিদেশী অফসেট পেপারে।
প্রচ্ছদ লেমিনেট করার জন্য গ্লোসি অথবা ম্যাট টাইপের ব্যবহার করতে পারেন। অনেক আবার একটা ভিন্ন মাত্রা আনার জন্য স্পট লেমিনেশন করছেন।
বই বাঁধাই করার জন্য আপনাকে যেতে হবে বাইণ্ডারের কাছে। বিভিন্ন সমুনা দেখে আপনার বইয়ের বাঁধাই কেমন হবে সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিন এবং বাঁধাই করুন।
বই বাঁধাই হয়ে গেলে আপনি একটি পূর্ণাঙ্গ বই পেলেন।
বই এর একটি কপি অবশ্যই জাতীয় গ্রন্থাগারে জমা দিতে হবে।
বাইণ্ডারের কাছ থেকে বইগুলি বুঝে নিয়ে আপনি এগুলো বাজারজাতকরণে নেমে পড়তে পারেন। আত্মীয় স্বজনকে পুশ সেল করতে পারেন। বইয়ের দোকানে বিক্রির জন্য রেখে আসতে পারেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আপনাকে বিক্রির পর দোকানদাররা টাকা দেবে।
অনেক ক্ষেত্রে নাও দিতে পারে। তবে বই তো পাঠকের কাছে পৌঁছাতে হবে।
বই প্রকাশ নিয়ে আরো জানার জন্য
লেখকের ফোন নম্বর 01913336127, 01730975008
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।