ওরা দিনের আধারে ঘুমায় ওরা রাতের আলোতে হাটে, ইটের দেয়ালে মাথা রেখে ওরা হৃদয় খুলে হাসে । ওরা ভালোবাসা বিলিয়ে যায় ,ওরা কষ্ট লুকিয়ে বাচে ।
সেন্ট্রাল লাইব্রেরীর আশেপাশে দেশের সবচেয়ে দুর্ধর্ষ সন্তানদের আনাগোনা , এই সেন্ট্রাল লাইব্রেরীর সামনেই সেদিন দেখেছিলাম আমার জীবনে দেখা সবচেয়ে সুন্দর দৃশ্যটি । যারা সেন্ট্রাল লাইব্রেরীর আশেপাশে হাকিম চত্বর কিংবা লাইব্রেরীর বারান্দায় বসে খিচুরি খেয়েছেন তারা খুব ভালো ভাবেই এই নাছোড়বান্দা বড় ভাইদের চেনেন , হ্যা আমি সেই সব ছোট পথের ছেলেমেয়েদের কথা বলছি যারা আপনার সামনে এসে আপনার এক চামুচ খাওয়া প্লেটটা পুরোটাই চাইবে , মায়া দেখিয়ে আপনি নিজের প্লেট দিয়ে দিবেন , একটু পর আবার যখন আপনি নতুন প্লেট নিয়ে বসবেন দেখবেন আরেক বান্দা হাজির ,এই নাছোড়বান্দা অভ্যাসের জন্য কেহ কেহ উনাদের দেখতে পারেন না । সবচেয়ে বিপদে পড়েন নব্য প্রেমিক প্রেমিকারা , তারা প্রায় তাদের প্লেট সমুহ এক প্রকার ছিনতাই করে নিয়ে যায় , একটু মনযোগ দিয়ে দেখলে দেখতে পারবেন এই বড় ভাইজানেরা এইসব ছিনতাই মাল অন্য এক জায়গায় জমাচ্ছেন , ব্যাপক চিটিং ।
।
যাই হোক আসল ঘটনায় আসি , সেদিন আমিও খিচুরীর প্লেট হাতে আনমনে খিচুরী সেবন করতেছি , আমার পাশেই বসা ছিল এক অতি অত্যাধুনিক মেয়ে যার পোশাক আশাক দেখলে মনে হবে তিনি ঢাকা শহরের সাহবাগে নেই ,তিনি সানফ্রানসিসকোতে বসে খিচুড়ি খাচ্ছেন । কেন জানি আমার ইম্প্রেশন খারাপ হল । ঠিক কিছুক্ষণ পরে এই ভদ্র মেয়ে খিচুরী ছিনতাইকারীদের কবলে পরলেন , আমি মনে মনে ব্যাপক খুশি । যাক বাবারা এতদিনে শিখলি কাদের কাছে ছিনতাই করতে হয় , কিন্তু একটু পরে যা ঘটল তাঁর জন্য আমি প্রস্তুত ছিলাম না , আমি দেখলাম মেয়েটি আসতে করে ছোট্ট একটি ছেলেকে কোলে বসালেন ,ঠিক যেভাবে মা তাঁর সন্তান কে কোলে বসায় ,তারপর চামুচ রেখে হাত দিয়ে আদর করে করে নিজের বাচ্চার মত সেই পথশিশুকে খাওয়াতে লাগলেন , আমার বিশ্বাস হচ্ছিল না এরকম একজন অতি অত্যাধুনিক মেয়ে কিভাবে এতো স্নেহ বুকে লালন করেন পথ শিশু দের জন্য , আমি খাওয়া বাদ দিয়ে হা করে উনাদের মা পুত্রের কাণ্ড কারখানা দেখতে লাগলাম , মনে হল আহ কত দিন এতো বেশি অবাক হইনি , আসলেই অনেক অবাক করার মত ব্যাপার ছিল ওটা ।
চোখে না দেখলে অনুভব করা সম্ভব নয় ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।