বলিউডের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই তারকা অভিনেতা শাহরুখ খান এবং সালমান খানকে অসহিষ্ণু বললেন সালমানের বাবা প্রখ্যাত চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব সেলিম খান। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই তারকা হওয়ায় শাহরুখ-সালমানের মধ্যে কখনো হূদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠা সম্ভব নয় বলেও মন্তব্য করেছেন ‘শোলে’খ্যাত বর্ষীয়ান এ অভিনেতা ও চিত্রনাট্যকার।
১৯৯৫ সালে মুক্তি পাওয়া ‘করণ অর্জুন’ ছবির পর আর কোনো ছবিতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেননি শাহরুখ-সালমান। সামনে এ দুই তারকা একসঙ্গে কোনো ছবিতে অভিনয় করবেন কি না, এমন এক প্রশ্নের জবাবে সেলিম খান বলেন, ‘তাঁরা দুজনই যথেষ্ট পরিপক্ব। সব বিষয়েই তাঁদের আলাদা আলাদা দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে।
যেকোনো কারণেই হোক চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই তারকায় পরিণত হয়েছেন তাঁরা। আর চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই তারকার মধ্যে কখনোই হূদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠা সম্ভব নয়। কেবল দেবদূতদের পক্ষেই এটা সম্ভব। ’ সম্প্রতি এক খবরে এমনটিই জানিয়েছে ইন্দো-এশিয়ান নিউজ।
চলচ্চিত্রের সফল ব্যক্তিত্বদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা অনিবার্য একটি বিষয় বলেই মনে করেন সেলিম খান।
তার পরও তাঁদের মধ্যে ন্যূনতম সৌজন্যবোধ থাকাটা জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। এ প্রসঙ্গে তাঁর ভাষ্য, ‘শাহরুখের কোনো ছবির সাফল্য উদযাপন করতে কখনোই পার্টির আয়োজন করবে না সালমান। ঠিক একইভাবে সালমানের ছবির সাফল্য উদযাপন করতে কখনোই পার্টির আয়োজন করবে না শাহরুখ। দিলীপ কুমার এবং দেব আনন্দের মধ্যেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল। কিন্তু তাঁরা একে অপরের সঙ্গে ন্যূনতম সৌজন্যবোধ রক্ষা করতে পেরেছিলেন।
কিন্তু শাহরুখ-সালমান খুবই অসহিষ্ণু। ছোট ছোট বিষয় নিয়ে তারা দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে। এটা ঠিক না। তাদের মধ্যে ন্যূনতম সৌজন্যবোধ থাকা উচিত। ’
‘জঞ্জির’ (১৯৭৩), ‘শোলে’ (১৯৭৫), ‘দিওয়ার’ (১৯৭৫), ‘মিস্টার ইন্ডিয়া’ (১৯৮৭)সহ ২৪টি ছবির চিত্রনাট্য যৌথভাবে লিখেছিলেন সেলিম খান এবং জাভেদ আখতার।
সেগুলোর মধ্যে ২১টি ছবিই অত্যন্ত ব্যবসাসফল হয়েছিল। সত্তর এবং আশির দশকে সেলিম-জাভেদ জুটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেলেও একটা সময় তাঁদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়। ১৯৮৭ সালের পর আর কোনো ছবিতে একসঙ্গে কাজ করেনি এ জুটি। তবে সম্প্রতি দ্বন্দ্ব মিটিয়ে ফেলেছেন তাঁরা।
‘শোলে’ ছবির ত্রিমাত্রিক সংস্করণ মুক্তি পাচ্ছে আগামী ৩ জানুয়ারি।
এ উপলক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার সেলিম খান ও জাভেদ আখতার ছবিটির ট্রেইলর উদ্বোধন করেছেন। সামনে আবারও সেলিমের সঙ্গে কাজ করার ইঙ্গিতও দিয়েছেন জাভেদ। এ প্রসঙ্গে সংবাদকর্মীদের সঙ্গে আলাপচারিতার সময় জাভেদ বলেন, ‘সামনে হয়তো আবারও একসঙ্গে কাজ করব আমরা। ’
এদিকে সেলিম-জাভেদ জুটির ভেতর দ্বন্দ্বের কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে সেলিম বলেন, ‘দুজন মানুষের মধ্যে মতের অমিল হতেই পারে। সব সময় তা অতিক্রম করা সম্ভব হয় না।
’
একটা সময় শাহরুখ ও সালমানের ভেতর দারুণ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। কিন্তু তাঁদের সেই বন্ধুত্বে ফাটল ধরে ২০০৮ সালে সালমানের সাবেক প্রেমিকা ক্যাটরিনা কাইফের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে। সেদিন তুমুল বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েছিলেন শাহরুখ-সালমান। সেই থেকে তাঁদের মধ্যে দূরত্বটা ক্রমেই বাড়তে থাকে। তাঁরা বছরের পর বছর কথা বলেননি।
শুধু তা-ই নয়, একে অপরের ছায়াও মাড়াতেন না। সুযোগ পেলেই কথার মারপ্যাঁচে একে অপরকে ঘায়েল করার চেষ্টা করতেন। এভাবে বলিউডের চিরশত্রু দুই তারকায় পরিণত হন তাঁরা।
তবে গত রমজান মাসে এক ইফতার অনুষ্ঠানে একে অপরকে আলিঙ্গন করে পাঁচ বছরের দ্বন্দ্বের অবসান ঘটিয়েছেন শাহরুখ-সালমান। এরপর থেকেই আবার এই দুই তারকাকে এক ছবিতে দেখার অপেক্ষায় দিন পার করছেন তাঁদের অগণিত ভক্ত।
এদিকে সম্প্রতি সালমানের সঙ্গে একই ছবিতে অভিনয়ে কোনো আপত্তি নেই বলেই জানিয়েছেন ‘বলিউড বাদশাহ’ শাহরুখ খান। তাঁদের মধ্যে আত্মমর্যাদার লড়াই কিংবা ব্যক্তিগত বিরোধ নেই বলেও জানিয়েছেন কিং খান।
আবার কোনো ছবিতে তাঁদের দুজনকে একসঙ্গে দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা আছে কি না— এমন এক প্রশ্নের জবাবে শাহরুখ বলেন, ‘ভালো চিত্রনাট্য নিয়ে প্রযোজক ও পরিচালকদের এগিয়ে আসতে হবে। ব্যাটে-বলে মিলে গেলে আবার আমরা একসঙ্গে কাজ করব ইনশাআল্লাহ। যদি সত্যিই এমনটা ঘটে তাহলে তো খুবই ভালো।
আর যদি এমনটা না-ও ঘটে, তাহলেও কোনো সমস্যা নেই। ’
শাহরুখ আরও বলেন, ‘আমাদের মধ্যে ব্যক্তিগত কোনো বিরোধ নেই। আত্মমর্যাদার লড়াইও নেই। দুজনের চলার পথটা ভিন্ন হলেও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ আছে আমাদের ভেতর। আমরা একে অপরকে বহু বছর ধরে চিনি ও জানি।
সালমানের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও আমার ভালো সম্পর্ক রয়েছে। সব মিলিয়ে আবার এক ছবিতে অভিনয় না করার কোনো কারণ দেখি না। দেখা যাক, কত দূর কী হয়। ’
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।