আমার চোখের পাতায় তখনও অগ্রাহয়ণের রোদের মতন ঘুম লেগে ছিল। কালো চায়ের উষ্ণ কলাই মগে চুমুক তবু সতেজ আকাশের সূর্য জাগছিল না কিছুতেই। ব্যাস্তদিনের শুরুতে কেমন শুনসান নিরবতা, ভয়ের কাঁপন জাগায় বুকের অতলে হঠাৎ দুরদার অস্থির চারপাশ বদলে যায় প্রেক্ষাপট অজানা সংকেতে। ভয়ংকর এক গভীর অন্ধকারে যেন তলিয়ে যাচ্ছি, পথ বন্ধ সুরঙ্গ দিয়ে। দূরে দূরে আগুনের বহ্নিশিখা, আমাকে ধরবে বলে লকলকে জ্বীব মেলে আছে।

পথ বন্ধ চারপাশে বল্লম, শুরকী পিস্তল বন্দুক ককটেল হাতে অচেনা মানুষ। আমি কোন পথে পালাব, ঘুম চোখে আমি তখনও ছিলাম সুখের অনুভবে আমার নিজস্ব ভুবনে। আমি দুমুঠো খেটে খাওয়া মানুষ। চাঁদের বন্যায় সুখ পাই। বাতাসের টানে ডানা মেলে দেই।

বৃষ্টির ধারায় ভিজে প্রাণ পাই। রোদের তাতান উমে জীবনের সঞ্চয় বেঁধে নেই আঁচলের খুটে। ছায়াছবির মতন অসংখ্য মানুষ চারপাশে তোমরা কত কিছু বলো রাজা উজিড়ের হিসাব নিকাশ করো, আমি তোমাদের কথা বুঝতে পারি না। আমি ভাটির সুরে মন ডুবিয়ে ডাংগুলি খেলি আপন মনে তারাদের সাথে মিতালি পাতিয়ে আমি ঘুমিয়ে পড়ি দূর্বাদলে। আমার জেগে উঠা শুধু দু মুঠো ভাতের প্রয়োজনে।

আমার জেগে উঠা শুধু শারীরিক প্রয়োজনে। আমার জেগে উঠা আকাশ আর আলোর মিলনে। তোমাদের অচেনা হিসাবের খাতায় আমার নেই কোন আগ্রহ। আমি বেঁচে থাকি এই প্রকৃতির উচ্ছাসে। অথচ আজ আমার চারপাশ ঘিরে দাঁড়িয়ে তোমরা কারা।

এত অস্ত্র এত আয়োজন আমাকে পুড়ানোর উৎসব তোমাদের। আমি তো করিনি কোন ক্ষতি তোমাদের। আমি তো তোমাদের পথে কোন বাঁধা নই। আমাকে ছেড়ে দাও, আমি বাঁচতে চাই প্রকৃতির বিনোদনে, আমার সাথে তোমাদের কী বিরোধ? উল্লাশে তোমরা ছড়িয়ে দিচ্ছো আগুণ আমার শীর্ণ কায়ায়, যা বেড়ে উঠেছে প্রকৃতির ভালোবাসায়। আমার দুচোখের ঘুম ভাবালুতা নিয়ে আমি বাঁচতে চেয়েছিলাম তখনও লেগেছিল অগ্রাহায়ণের নরম রোদ আমার চোখে তখনও জানিনা আমি কী হচ্ছে আমাকে ঘিরে অথচ আমি জ্বলে যাচ্ছি আমি জ্বলে যাচ্ছি আমি মরে যাচ্ছি কি আমার অপরাধ আমি জানি না।

এ পৃথিবীর সুনিবিড় ছায়ায় আমি থাকতে চেয়েছিলাম আরো কিছুদিন ভালোবেসে অথচ আমি শুধু জ্বলে যাচ্ছি তোমাদের হিংস্রতায়.............. আমার নাম লেখা থাকবে তোমাদের হিসাবের খাতায় আজীবন এই জীবনের হিসাব তোমাদের মিটাতেই হবে একদিন জেনে রাখো। ১২/১১/১৩ অসহায় নিরহ যে মানুষগুলো মরা যাচ্ছে রাজনৈতিক দ্বন্দে, হরতাল হিংস্রতায় তাদের স্মরণে এই নিবেদন।
।