একজন সাধারন মেয়ে -কিরে মা এত রাতে বারান্দায় কী করিস?
-কিছু না বাবা। কী চমৎকার রাতদেখেছ? বারান্দায় বসে থাকতেভালো লাগছে। তুমিও বস না বাবা। তুমি কি আমাকে কিছু বলতে চাচ্ছো?
-হুম না রে মা কিছু না। কফি খাবি?
-কে বানাবে তুমি?
-হ্যাঁ তুই বস আমি কফি নিয়ে আসি।
গোধূলির আলো
…
-এই নে তোর কফি।
-বাবা তুমি কি আমার কাছ থেকে নীরবের কথা লুকাচ্ছো?
-তুই জানলি কী করে যে নীরব দেশে ফিরেছে!
-তোমরা যখন ফোনে কথা বলছিলে তখন আমি শুনেছি । ও কি আমার সাথে দেখাকরতে চায়?
-হ্যাঁ তুই কি কষ্ট পেলি মা?
-না বাবা ওর ওপর আমার কোন রাগ নেই! ও একটা বাস্তববাদী ছেলে। বাবা ওকে বল আমি আগামীকাল ওর সাথে দেখা করব।
-আর একবার ভেবে দেখ মা।
-বাবা আমি ভেবেছি তুমি ওকে কলকরো। বিকালে কফি হাউসে দেখা করতেবোলো। চল ঘুমুতে চল।
আলো নীরব আসার আগে পৌঁছে যায়। হঠাৎ করে ওর চোখের সামনে সব কিছু ফ্ল্যাশ ব্যাকের মত ভেসে ওঠে।
আলো ও নীরব একসাথে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ত। প্রথমে ওদের সম্পর্ক শুধু বন্ধুত্ব ছিল। পরে এক সময়ে ওরা আবিষ্কার করল যে ওদের সম্পর্ক বন্ধুত্ব থেকেও বেশি। পরে নীরব ওকে প্রপোজকরল। ওদের ফ্যামিলি থেকেও ওদের সম্পর্ক মেনে নিয়ে ছিল।
কিন্তু এক দিনের ঘটনায় সব ওলটপালট হয়েযায়। আলোর আলোকিত জীবন অন্ধকার হয়ে যায়। আলো যখন এইসব ভাবছিল তখন নীরব চলে আসে।
নীরব বলে, “সরি দেরি হয়ে গেল। কেমন আছো আলো?”
আলো: হুম! ভালো, হ্যাঁ আছি।
তুমি কেমন আছো? রুপা কেমন আছে?
নীরব: আমি ভালো আছি। রুপা কেমন আছে জানি না!
আলো: মানে?
নীরব: আমাদের ডিভোর্স হয়ে গিয়েছিল আমেরিকা যাবার কয়েক বছর পর। বাদ দাও ওসব কথা। তোমার কী খবর? কী করছ আজকাল?
আলো: আমি ভালো আছি। কতগুলো ছেলেমেয়েকে গান শেখাই ।
ভালই সময় কাটে।
নীরব: গান, তুমি তো চমৎকার গানকরতে। আলো তুমি কি আমাকে ঘৃণাকর?
আলো: না তো, ওসব তো আমি ভুলে গিয়েছি অনেক আগে। তোমার প্রতি আমার কোন অভিমান বা কোনঅনুভূতি নেই। আমি তাহলে উঠি, আমার স্টুডেন্ট আবার এসে পড়বে।
আর কিছু বলবে?
নীরব: তুমি কি আমাকে ক্ষমা করতে পেরেছ?
আলো: হ্যাঁ। আমি তাহলে যাই।
নীরব: আমি কি তোমাকে এগিয়ে দেব?
আলো: না লাগবে না, বাবা নীচে আছে।
আলো বাইরে বের হয়ে আসে। গাড়িতেউঠে বলে, চলো বাবা।
গাড়িতে কেউ কোন কথা বলে না। আলোর সেই কালো ঘটনার কথা মনে পরে যায়। এক দিন ক্লাস শেষে বাড়ি ফেরার পথে এক সড়ক দুর্ঘটনায় ওর চোখের আলো চিরকালের জন্য হারিয়ে যায়। সেই সাথে নীরবও হারিয়ে যায় ওর জীবন থেকে। নীরব পরে ওদেরইআর এক ক্লাসমেট রুপাকে বিয়ে করে।
আলোর এই দুর্ঘটনার পর নীরব মাত্রএকবার এসেছিল। আলোযত না কষ্ট পেয়েছিল ওর দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে তার থেকে বেশি কষ্ট পেয়েছিল নীরবের ব্যবহারে।
বিকাল পেরিয়ে গোধূলি হয়ে আসছিল। গোধূলির আলোয় আলোর চোখের জল ঝলমল করছিল।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।