আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

Never Give up on a dream!

I love politics. I want death of those who killed our Army officers.

ভীষন এক ঝামেলায় পরলাম! ব্যাপারটা এখন কিভাবে যে কতৃপক্ষকে বলবো তা ঠিক বুঝতে পারছিনা। লেখার একটি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছিলাম যেখানে বিভিন্ন বিষয়ের ওপর লেখা পাঠানো যাবে। শর্ত ছিল একটাই যে যারা লেখা পাঠাবে তাদের বয়স ১৪থেকে ১৯বছর হতে হবে। ....আমার বয়স ৭৫। শর্ত জেনেও আমি সাহস নিয়ে লেখা পাঠিয়ে ছিলাম।

ভেবেছিলাম যারা জিতবে তাদের পুরষ্কার হয়তো বাসায় কুরিয়ারের মাধ্যমে পৌছিয়ে দেবে। আজকে সকালে যখন পত্রিকায় দেখি যে যারা যারা লেখা পাঠিয়েছে তাদেরকে আগামী শনিবার ওসমানী মিলানয়তনে উপস্থিত থাকতে হবে তখন বেশ মুশড়ে গেলাম। কিভাবে ওখানে যাব এই বৃদ্ধ বয়সে সেটা চিন্তা করতে থাকলাম যেখানে কিনা সব তরুণ কিশোর-কিশোরীদের সমাগম হবে সেখানে এক বৃদ্ধ লোক কিভাবে ওদের মাঝে থাকবে? খুব আক্ষেপ নিয়ে লেখাটা পাঠিয়ে ছিলাম। সেই ২৫ বছর বয়স থেকে লেখালেখি করা শুরু করেছি অথচ আজ ৫০টা বছর হয়ে গেল অথচ আজোও পর্যন্ত একটা বইও প্রকাশ করতে পারলাম না। কত বিষয়ের ওপরই না লিখেছিলাম কিন্তু কেউই আমার বই ছাপায়নি।

তাই শখ করে এই বয়সে একটা লেখা পাঠিয়ে ছিলাম। জিতি আর নাই জিতি লেখা পাঠানোর ইচ্ছে হয়েছিল তাই পাঠিয়ে ছিলাম। অনেক চিন্তা ভাবনার পর সিদ্ধান্ত নিলাম যে অনুষ্ঠানের দিন যাব না। টেলিভিশনে সরাসরি দেখাবে তাই বাসায় বসেই একা একা দেখবো। আরতো কেউ নেই আমার।

এই লেখালেখির জন্যই কখনও বিয়ে-সাদী করতে পারিনি। ড্রইংরুমে বসে একা একাই দেখবো। --------------- আজ শনিবার। সকাল ১১টায় অনুষ্ঠানটি শুরু হবে। টেলিভিশনের সামনে বসলাম।

যথারীতি ঠিক ১১টায় অনুষ্ঠানটি শুরু হলো। ধরেই নিয়েছি যেহেতু কখনই কোন বই প্রকাশ করতে পারিনি তাই পুরষ্কার জেতা আমার জন্য এক স্বপ্ন। প্রথম বিজয়ী পাবে ১লাখ টাকা, দ্বিতীয় বিজয়ী ৫০হাজার টাকা ও তৃতীয় বিজয়ী পাবে ২৫হাজার টাকা। টেলিভিশনে দেখলাম মিলনয়তনে এক এক করে সব ছোট্ট কিশোর কিশোরীরা প্রবেশ করছে। প্রত্যেকের মুখে কি সুন্দর অনাবিল হাসি।

প্রথম ৩০ মিনিট বক্তিতার পেছনেই ব্যয় হলো। এরপর ঘোষনা দেবার পালা এলো। হঠাৎ শুনি টেলিভিশন থেকে আমার নাম শুনা যাচ্ছে। কিছুই বুঝে উঠতে পারলাম না। আমি কি ভুল শুনছি? প্রথম পুরষ্কার আমি পেয়েছি তাই উপস্থাপক বার বার আমার নাম উচ্চারণ করছে।

আমি যে মিলনায়তনে নাই সেটাতো আর সে জানেনা। আমি এখন কি করি? উপস্থাপক বার বার বলছে ছোট্ট বন্ধু রিন্কু কোথায় আছ তুমি, সবাই হাত তালি দাও রিন্কুর জন্য। আরে, আমি যে বাসায় সেটাতো আর কেউ জানেনা আর আমি যে মোটেও "ছোট্ট" রিন্কু নই তা কাকে বলে বুঝাবো? আরো কিছু ভাববার আগে আবার টেলিভিশন পর্দায় মনোযোগ দিলাম। উপস্থাপক বলছে যে প্রথম পুরষ্কার পেয়েছে রিন্কু, ওর জন্য ১লাখ টাকা পুরষ্কার ও সাথে রয়েছে একটি ক্রেস্ট। আর সেরা লেখক হিসেবে লেখা ঈদ সংখ্যায় ছাপানো হবার সুযোগ।

জীবনের এই পর্যায়ে এসে লেখার জন্য একটি পুরষ্কার পেলাম কিন্তু কেমন করে পুরষ্কারটি গ্রহণ করবো তা ভেবে পারলাম না। যেহেতু উপস্থিত ছিলাম না তাই পুরষ্কার গ্রহণ করতে হবে আয়োজকদের অফিস থেকে। আমার পক্ষে কি সেটা করা সম্ভব? আমি যদি তাদের অফিসে গিয়ে বলি আমিই হলাম রিন্কু তাহলে পেদানী খাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, কোন সন্দেহ নেই। থাক্! জীবনের এই বয়সে এসে কোন বই না ছাপানো হোউক, একটা পুরষ্কারতো জিতেছি, সেটা নাইবা নিলাম। অন্তত স্বান্তনা রইলো নিজের কাছে যে কিছু একটা করতে যে পেরেছি।

তাই বাবার ওই কথাটা বারবার স্মরণ করছিলাম: Never Give up on a dream!

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।