মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৩৫তম প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি হত্যার ৫০ বছর আজ। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার মাত্র তিন বছর পর ১৯৬৩ সালের ২২ নভেম্বর টেক্সাস স্টেটের ডালাসে সরকারি সফরকালে আততায়ীর গুলিতে নিহত হন কেনেডি। জন এফ কেনেডি ১৯১৭ সালের ২৯ মে ম্যাসাচুসেটসের ব্রুকলিনে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬১ থেকে ১৯৬৩ সালের ২২ নভেম্বর আততায়ীর গুলিতে নিহত হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদে ছিলেন। তার বাবা জোসেফ প্যাট্রিক কেনেডি এবং মা রোজ ফিটজেরাল্ড।
জন এফ কেনেডি তার জীবনের প্রথম ১০ বছর কাটান জন্মস্থান ব্রুকলিনেই। ১৯২৭ সালের সেপ্টেম্বরে সপরিবারে নিউইয়র্ক সিটির রিভারডেলে জন এফ কেনেডির নতুন ঠিকানা হয়। এর দুই বছর পর ব্রোঙ্কসভিলে।
১৯৩৬ সালের সেপ্টেম্বরে হার্ভার্ড কলেজে ভর্তির পর ১৯৪০ সালে কেনেডি শীর্ষক থিসিস এবং গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেন। পরের বছর তিনি ইউএস নেভিতে ইন্টিলিজেন্স অফিসার হিসেবে যোগ দেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তিনি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। সম্মুখ সমরে একবার তিনি মারাত্মকভাবে আহতও হয়েছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ১৯৪৫ সালের মার্চে তিনি সামরিক জীবন থেকে অবসর নিয়ে সাংবাদিকতা পেশায় নিযুক্ত হন।
মেধাবী কেনেডি অল্প সময়ের মধ্যেই সাংবাদিক হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি অর্জন করেন। এর কিছুদিন পরই যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্রেটিক দলে যোগ দেন এবং ১৯৪৬ সালে ‘হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভ’ হিসেবে জয়লাভ করেন। পরের দুই বছরের মধ্যেই তিনি যুক্তরাষ্ট্রের তত্কালীন প্রেসিডেন্ট হ্যারি এস ট্রুম্যানের কাছের মানুষে পরিণত হন। ১৯৫২ সালে কেনেডি সিনেটের সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে তার অবস্থান আরও সুসংহত হয়ে ওঠে। ক্যারিয়ারের এ উত্থানের প্রাক্কালে ১৯৫৩ সালের ১২ সেপ্টেম্বর জ্যাকুলিন লি বেভিয়ার নামের এক মহিলা সাংবাদিককে বিয়ে করেন কেনেডি।
বিয়ের ঠিক পরপরই যুদ্ধকালীন সময়ের পুরনো ব্যথাটি মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। সেই ব্যথার কারণে দুবার অপারেশন করাতে হয়েছিল তাকে। হাসপাতালে চিকিত্সারত অবস্থায় তিনি ‘প্রোফাইলস ইন ক্যারিজ’ নামে একটি বই লেখেন এবং ১৯৫৬ সালে এ বইটির জন্য পুলিত্জার পুরস্কার লাভ করেন।
১৯৬০ সালের ২ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে ডেমোক্রেটিক দল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রার্থী হিসেবে নিজেকে ঘোষণা দেন কেনেডি। ১৯৬০ সালের সেই প্রেসিডেনসিয়াল নির্বাচনে তিনি রিপাবলিকান পার্টির শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী রিচার্ড নিক্সনকে পরাজিত করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।
একজন রোমান ক্যাথলিক হিসেবে কেনেডিই ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম প্রেসিডেন্ট। একমাত্র পুলিত্জার পুরস্কার জয়ী প্রেসিডেন্টও তিনি। বে অব পিগস ইনভেশন [কিউবার ব্যর্থ সামরিক অভিযান], কিউবার মিসাইল সংকট, বার্লিন প্রাচীর নির্মাণ, স্পেসরেস, আফ্রিকান-আমেরিকান সিভিল রাইটস মুভমেন্ট তার সংক্ষিপ্ত শাসনামলের উল্লেখযোগ্য ঘটনাবলি। পাশাপাশি তিনি কম বয়সে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার ক্ষেত্রে দ্বিতীয় অবস্থান অর্জন করেন। মাত্র ৪৩ বছর বয়সে কেনেডি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।
তার আগে থিওডোর রুজভেল্ট ৪২ বছর বয়সে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।