আজ BRTC পেলো না রাহুল তাই ৮ নাম্বার
বাসেই উঠলো প্রচন্ড্র ভিড় বাসে। খেয়াল
করে দেখলো তার ঠিক
সাথে দাঁড়িয়ে আছে ২ টা yoo yoo টাইপের
কলেজ বয়। আকর্ষণীয় ও উত্তেজক পোশাক
পড়া একটা মেয়ে সেই ৮ নাম্বার
বাসে প্রচণ্ড ভিড় ঠেলে উঠলো।
বাসে কিলবিল
করা অসংখ্য মানুষের মাঝে একটু
জায়গা করে দাঁড়ালো।
তার ঠিক পিছনে দাঁড়িয়ে আছে সেই ২
টা yoo yoo টাইপের
কলেজ বয়।
ইচ্ছা করে করে গায়ে হেলে পড়া, নানারকম
উল্টা পাল্টা কথায় কান গরম হচ্ছে মেয়েটার।
কিন্তু কিছু
বলার উপায় নেই রাহুলে,শুধু দেখছে । আর
মেয়েটাও র্নির্বিকার কারণ
সরাসরি তো তাকে কিছু বলছেনা!
একটা পর্যায়ে দুই বন্ধুর মধ্যে একজন
মেয়েটার
কাঁধে টোকা দিলো- এই যে আপু শুনছেন?
মেয়েটা তাকালো তার দিকে।
কি বলতে চাও?
- মানে, আমার বন্ধু
না আপনাকে ভালোবেসে ফেলেছে!
আপনি একটা চরম
মাল!
মেয়েটা হকচকিত
দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে থেকে বললো-
তোমরা কি জানো,
আমার ছোট ভাই তোমাদের বয়সী?
জুতা দিয়ে ২
গালে ৪টা বারি খেতে চাও? বেয়াদব
কোথাকার!
ভাবছেন, আমি কি নিয়ে লিখা শুরু করলাম
হঠাৎ!
আসলে হঠাৎ নয়, অনেকদিন ধরেই
ব্যাপারটা নিয়ে লিখবো বলে ভাবছিলাম।
আপনারা নিশ্চয়ই ক্লিয়ার শ্যাম্পুর ঐ
বিজ্ঞাপন
টা দেখেছেন! বরফি খ্যাত
অভিনেত্রী ইলিয়েনা ডি ক্রুজের সেই
বিজ্ঞাপনটি!
যেখানে ডি ক্রুজ বলছেন-
আমি জানি আপনি আমাকে ফলো করছেন,
আমার শর্ট,
মেকাপ……আর ইম্প্রেশন জমানোর মতো সব
কিছু! ইভেন
dandruf. এরপর আরও অনেক কথা বলে।
বিজ্ঞাপনের
শেষ মেসেজটা এরকম- যখন কিছুই লুকানোর
থাকেনা তখন
অনেক কিছুই
থাকে দুনিয়াকে দেখাবার! এখানে ২টা প্রশ্ন
আসে-
১. নারীর মধ্যে কি কিছুই লুকানোর নেই?
২.দুনিয়াকে নিজের সব কিছু দেখানোর
কি প্রয়োজন?
একটা বিজ্ঞাপন একটা সমাজের অনেক
বাস্তব অবস্থার
প্রতিচ্ছবি। ক্লিয়ার
ব্যবসা করছে বাংলাদেশে। ভ্যাটসহ
পণ্য কিনছে, কিনবে এদেশের জনগণ।
তাহলে কেন
ভিনদেশী মডেল দিয়ে আমাদের প্রথা বিরুদ্ধ
কথা দিয়ে সাজানো এই বিজ্ঞাপনের এমন
ঢালাও
প্রচারণা?
তাও, বিজ্ঞাপনটির শেষ
মেসেজগুলো কি ভয়াবহ! কিছুই
নাকি লুকানোর নেই, তাই সব কিছুই
দুনিয়াকে দেখাতে হবে।
প্রাচীনকাল থেকেই একটা প্রবাদ
সমাজে বিদ্যমান।
লজ্জাই নারীর ভূষণ।
লজ্জা বলতে একটি মেয়ে নিজেকে পাবলিক
প্রোপার্টির মতন প্রদর্শন
থেকে দূরে রাখাকেই
আমি বুঝি। আসলে আপনি যখন কিছুই
না লুকানোর
সংকল্প করেন, তাতে আপনার আল্টিমেট
লাভ কি হয়?
আপনার লাভ একটাই
সেটা হলো প্রশংসা কুড়াতে পারেন সকলের।
যদিও এই
প্রশংসা আপনার নয়, আপনার সৃষ্টি কর্তার
প্রাপ্য। আর
বাকিদের কী লাভ জানেন?
এই যে ব্যবসা সফল বিজ্ঞাপন
দিয়ে আপনাকে পণ্যে পরিণত করা হচ্ছে।
সেই পণ্য
আপনিই কিনছেন, হাজার টাকার মেকআপ
গায়ে মেখে ওনাদেরই আবার বিনোদন
দিচ্ছেন।
এতে আপনার কোনো লাভ
কি আসলে দেখতে পান?
কিছুদিন আগে ফেসবুকে এক পেইজ দেখলাম,
যার
অ্যাডমিনের কাজ একটাই। বাসে রিক্সায়
মাঠে ঘাটে সব
জায়গায়ই যতো সুন্দর নারী আছে, তাদের
শরীরের বিশেষ
কিছু পার্টসের ছবি তোলা। হুম!
এটা রাস্তা ঘাটে চলা ফেরা করা সাধারণ
মহিলাদের চিত্র,
বাংলাদেশেরই বিভিন্ন এলাকার। একবার
ভাবুন তো,
আপনার অঙ্গ প্রতঙ্গ কেউ
মোবাইলে বা কম্পিউটারে জুম
করে দেখছে আর
মজা লুটছে কেমন লাগে তখন?
জনাব হুমায়ুন আজাদ বলেছিলেন-
বিশ্ববিদ্যালয়ের
মেয়েদের দেখলে চুইংগামের
মতো চিবাতে ইচ্ছে করে!
একজন সুশীল, শিক্ষিত শিক্ষকের যদি এহেন
বাজে ধারণা আর খায়েশ করে মেয়েদের
দেখলে;
তাহলে একটা রিক্সাওয়ালা কিংবা মেথরের
কি ইচ্ছা করে একবার ভাবুন তো দেখি! আর
আপনার সাজ
সজ্জা নিত্যদিন কারা দেখছে বিনা পয়সায়?
রিকশাওয়ালা,
মেথর, মুচি, দোকানদারসহ সমাজের সবাই।
নারী যদি পর্দায়
ঢুকে যায়, ক্ষতি হয় ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের।
কারণ, তখন
তারা মানুষকে দেখানোর জন্য
গাদা গাদা লিপস্টিক নেল
পোলিশ, ফেসপাউডার কিনবে না।
না কিনলে ব্যবসায়ীরা পণ্য
বিক্রি করতে পারবেনা,
শোবিজে বিজ্ঞাপন বানানো হবেনা, মডেল
কন্যারা পড়ে যাবে মহাবিপদে। ইসলাম
আপনাকে কত
সম্মানিত করেছে দেখুন। ইসলাম চায়
নারী শালীনতার
মধ্যে থাকুক।
যাতে কেউ তাকে পথে-
ঘাটে কটু
দৃষ্টিতে না দেখে। বাজে কথা না বলে, টিজ
না করে! ছোট
ভাইয়ের বয়সী ছেলেরা যাতে ‘মাল’
বলে অপমানিত
না করে। ইসলাম চায় নারীকে যেন
যে সে না দেখে।
স্বামী ও যদি নারীর সুষমা ভোগ
করে তাহলেও
তাকে আগে মোহরানা আদায় করতে হবে।
কারণ
নারী মায়ের জাতি!
নারী এতো সস্তা নয়
যে যে খুশী সে চুইংগামের
মতো চিবোতে চাইলে চিবোতে পারবে।
ইদানিং একটা সুর
উঠেছে যে- বোরখা বা হিজাব
পড়ে কি লাভ?
ইভটিজিং তো বন্ধ হয় না!
এটার পিছনেও নারী লোভী মিডিয়ার হাত।
কারণ, এক
জায়গায় যখন রব উঠে যে, অমুকের
বিরিয়ানি খেতে খুব
মজা। তখন সে খাদ্য ঢাকা থাকুক আর খোলা,
তার স্বাদ
সবাই পেতে চায়।
যারা অশ্লীলভাবে চলেন, কিছুই না লুকানোয়
বিশ্বাসী,
তাদের কাজকর্ম আর ধ্যান ধারণার
ভুক্তভোগী হয়
আপামর নারী সমাজ।
আমি ক্লিয়ারের এই বিজ্ঞাপনের তীব্র
বিরোধিতা করে বলবো- যখন কিছুই দেখানোর
থাকেনা,
তখন অনেক কিছুই থাকেই নিজের
মতো লুকাবার।
সবচেয়ে অবাক বিষয় এটাই যে, ক্লিয়ার
একটা খুশকিনাশক
শ্যাম্পু! কিন্তু মাথা যদি না ঢাকা হয়,
মানে চুল
যদি না লুকানো হয়, খুশকির সম্ভাবনা আরও
১০০ গুন
বেড়ে যায়। এটা আমার কথা না, জগৎবিখ্যাত
স্কিন
স্পেশালিষ্টদের কথা। কিন্তু দুনিয়াকে সব
কিছু দেখাবার
এই ঢালাও প্রচারে চুলের ক্ষতির এহেন বানী,
একটা খুশকিমুক্ত করার শাম্পোর জন্য
কি শোভা পায়?
বরং, নারীদের
চুলে খুশকি বাড়ানোকে উৎসাহিত করার
দণ্ডে জরিমানা করা উচিৎ এই প্রতিষ্ঠানকে।
কিছুই না লুকানোর শিক্ষা এ দেশের
নারী সমাজকে দিবেন
না দয়া করে। আপনারা তো সেই সুসভ্য দেশের
নাগরিক
যে দেশে চলন্ত বাসে নারী ধর্ষিত হয়ে মৃত্যু
বরণ করে!
আপনারা কিছুই লুকান না! তাই আপনাদের
দেশের পুরুষদের
পশু বৃত্তির কোনো সীমা পরিসীমা নেই।
কিছুই
না লুকানোর
শিক্ষাটা না হয় আপনাদের নারীদের জন্যই
তুলে রাখলেন! আর আমি এটা বলছিনা,যে আমাদের দেশের
মেয়েরা দোয়া তুলশি পাতা ,তাদেরও
সমস্যা আছে। যেমন Tradition হিসেবে এখন
বড় জামা পরার যুগ আসছে। আগেও ছিল।
মিনিমাম ১৫ বছর আগে। অনেকে ফ্যামিলির
কারনে বা নিজের ন্যায় বোধের
কারনে তা পরতো।
কিন্তু তাই
বলে এমনটি নয়। তারা এতটাই Traditional
যে জামা নামক বস্তুটি শুধু তাদের দেহ
আগলেই রাখে না,বরংচো তার আকার
আক্রিতিও বুজিয়ে দেয়। কিন্তু কি বা লাভ
পড়ে এই জামা??? না পরাটাই ভাল। এখন
বুজার জন্য মানুষ আপনার দিকে দু বার তাকায়
তখন না হয় এক বার তাকাবে। আপনাকেও আর
হ্যারিজমেন্টে পরতে হবে না।
বিরক্ত বোধ
করতে হবে। আমরা ছেলে যদি এই
কথা বলি তাহল্র কিছু
মেয়ে বলবে না তাকালেই হয় সেই সব
মেয়েদের দিকে,আচ্ছা তাকালাম না। নিজের
অবস্তান দেখার জন্যও
কি আসে পাসে তাকাতে পারিনা। আর
তাকালেই তো চোখে পরে এই সব। আর এখন
যদি বলি আমাদের দেশে মেয়েদের
বোরকা পরা উচিত বোরখা পরার
তাহলে আমি হয়ে যাব মোল্লা।
আর কিছু
মেয়ে বললবে সব মেয়েরা এক না। আর কিছু
লুলায়িত পোলারা কইবে আমি ইতিহাস লিখছি/পরার টাইম নেই/আমি দেশের দেশপ্রেমিক হয়ে গেছি। না দেশপ্রেমিক না,ইতিহাস বিদও না,তবে হ্যা কথা গুলা একজন বিজ্ঞের্। আমি কিছু লেজ আর মাথা লাগিয়েছি। আমি হয়তবা নিজের কথা গুলাই খুজে পেয়েছিলাম তাই সেটা সম্প্রশারন করে বললাম।
আমি কাওকে ছোট করার জন্য বলিনি। আর কিছু মেয়ে আছে যাদের দেখলে অথবা তাদের দিকে তাকালে দেখা যায় তারা মাথা নিচু করেই হাটছে। নিজেই লজ্জা পরে যাই তখন কারন আমি তাকাতেই হয়তবা তিনি মাথা নিচের দিকে দিয়েছেন এটা ভাবে। আর মনে মনে বলি মাসাআল্লাহ। তাদের জানাই হাজার সালাম যারা আজও কষ্ট করে পরির্পুন হিজাব পরে নিজেকে লুকিয়ে রাখে সমাজের লুলাইতো ভাবে তাকিয়ে থাকা কিছু মানুষের হাত থেকে।
সালাম তোমায় মা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।