মনির ইউসুফ
শিল্পকর্ম পৃথিবীর নিষিদ্ধ ফল,সোনালি আবেগ ও কল্পনার স্বপ্নবৈভব। এই নিষিদ্ধ ফলের বাসনা ও বৈভব মানবের মনে এমন এক ঘোর তৈরি করে যা মানুষকে সৃষ্টিশীলতার তুঙ্গে নিয়ে যায়। সময়ের চেয়ে সেই সৃষ্টিপ্রবণ মানুষগুলো এমনভাবে এগিয়ে যায় কয়েক প্রজন্মে এসেও তাঁদের সঙ্গে তাল মেলানো কঠিন হয়ে যায়, পারে না। ব্যাপক পঠন-পাঠন, চর্চা, শিল্পের সঙ্গে নিয়ত ঘর-সংসার, বিশ্বের গতিশীলতার সঙ্গে নিজেকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া, নিজ সমাজ ও রাষ্ট্রের সঙ্গে যুদ্ধ এবং বন্ধু ও শুুত্র“র শরবিদ্ধ তীর, অজনা আশঙ্কা, মানুষের যত অবহেলা সব নিয়ে সৃজনক্ষমতার মানুষকে এগিয়ে যেতে হয়, নিতে হয় শিল্পের দায়ভার। এই দায় স্বয়ংক্রিয় ভাবেই তার কাছে এসে পড়ে।
সাধারণ মানুষ ও শিল্পপ্রকরণের এই দায় মেটাতে কত রকমের মনোগত পরীক্ষা ও নিরীক্ষাপ্রবণতায় ঘাম ঝরাতে হয় সৃজনকর্মীকে। সেই প্রস্তুতি পর্বের কঠিন ধাপ পেরিয়ে তার মধ্যেও সময়কে জয় করতে পারে যে কয়জন তারাই কিছু নতুন স্বপ্ন ও সৌন্দর্যের নির্যাস দিতে পারে পৃথিবীকে। এ খুব কঠিন এক স্বপ্নযাত্রা যে শুভযাত্রা নিজের জীবন-যৌবনও দাবী করে বসে। শিল্পের জন্য ডালি দিতে হয় নিজেকে তবেই শিল্পপ্রকৃতি তাকে গ্রহণ করে। তা না হলে এই দায়হীন জীবন বরফের মতো গলে যায় সময়বুকে।
পৃথিবীর এই নিষিদ্ধ ফল এত মধুর ও ঘোরের মধ্যে মানুষকে টেনে নিয়ে যায় কিংবা আকর্ষণ করে যার তুলনা দেওয়ার মত বিষয়বৈভব আপাতত নেই। মানুষ নিষিদ্ধ জিনিসকেই ভালবেসেছে সব সময়। যত নিষেধ তত কৌতূহল তত বেশি উৎকণ্ঠা ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে মানুষই ভেঙ্গেছে সৃষ্টির অর্গল। একবিংশ শতাব্দীর এই সময়ে এসে বিশ্বচিত্র কত বদলেছে। মানুষ স্বাধীন হতে চেয়েছে নিজের মত।
ধর্ম, দর্শন, ইজম বিধি-নিষেধ থেকে মুক্তি চেয়েছে শিল্পের নিষিদ্ধ ফল ভক্ষণের মাধ্যমে। মানুষ জ্ঞান ও সৌন্দর্যের ভেতর খুঁজে ফিরেছে চিরমুক্তি। এই জ্ঞান তার জন্য নিয়ে এসেছে নানান সম্ভাবনা।
সময় এক নির্মোহ বিচারক। যাকে বলা হয় স্রষ্টাও।
তাহলে শিল্পী কি স্রষ্টা ও দ্রষ্টা উভয়ই। টোকন ঠাকুর ‘ব্ল্যাকাউট’ ফ্লিমে নিজেকে বা নিজের জীবনকে বা সম্পূর্ণত বলতে গেলে নিজের সময়কে এঁকেছেন। যে সময় তার মতো করে এগিয়ে যায়, অনেক কিছু নিয়ে যায়, আবার অনেক দিয়েও যায়। যা দেয় তা যেমন অমৃত, যা নেয় তাও আর ফিরে আসে না একজীবনে। সেই না পাওয়ার কষ্ট ফালি ফালি করে দেয় শিল্পীর মনোভুবন।
ব্যক্তির উপরি কাঠামো দেখে যেমন তার সুখ দুঃখ বুঝতে পারা যায় না তেমনিভাবে শিল্পীরও ব্যক্তি জীবন দেখে তার সমগ্র সৃষ্টিসত্তা বুঝা যায় না। যার জন্য তার সৃষ্ট শিল্পভুবনে ডুব দিতে হয় তখন অনুভব করা যায় সৃষ্টির মৌলিকত্ব। বহতা জীবনের সঙ্গে নানান সময়, নানান বাস্তবতা ঘণীভূত হয়। এই ঘণীভূত বিষয়ের মূর্ত প্রকাশই হচ্ছে শিল্পীর গভীর উপলব্ধি। টোকন ঠাকুরের ‘ব্ল্যাকআউট’ এ ঘণীভূত জীবনের রূপায়ণ।
গ্রাম থেকে নগরে পড়তে আসা উন্নয়নশীল বিশ্বের তরুণদের গল্পই বলা যায় ‘ব্ল্যাকআউট কে। যেখানে চিত্রায়িত হয়েছে সৃষ্টিশীল তরুণদের মনোগত যন্ত্রণা। যে যন্ত্রণা গ্রাম বা মফস্বল থেকে আসা উন্নয়নশীল বিশ্বের প্রতিটি তরুণের যন্ত্রণা। সেই গ্রাম বা মফস্বল থেকে আসা একজন তরুণের কত দায়, তার দিকে চেয়ে থাকে পাড়া প্রতিবেশি পুরোগ্রাম, নৈতিকতায় সমৃদ্ধ বিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ জন্মশহরের চেনা জানা মানুষজন একিসঙ্গে বেড়ে ওঠা বন্ধুবান্ধব শৈশবের হারানো চকিত ভালবাসার সংবেদনশীল ফুফাত,মামাত,খালাত বোন কিংবা প্রতিবেশি তরুণীর স্মৃতির দহন। সে সোনালি দায় ও দহন কাধে নিয়ে ঐ মেধাবী সৃষ্টিশীল তরুণ শহরে পড়তে আসে।
টিকে থাকার নিরন্তর যুদ্ধে কখন সময় পেরিয়ে যায়, কখন এক এক করে সব হারিয়ে যায়, আবার নতুন করে যোগ হয় আরও নতুন বাস্তবতা ্ঐ তরুণেরা বুঝতে পারে না। জগতের দিকে চোখ মেলে তাকিয়ে দেখে সব দিকে রুপালি পূর্ণিমার মতো স্নীগ্ধ ধূসর অন্ধকার। ‘ব্ল্যাকআউট’ এই তরুণদের স্বপ্নভঙ্গ ও স্বপবৈভবের ধূসর গল্প। জীবনের আলো পেয়ে সেই তরুণেরা জগত নিয়ে অনেক বড় করে ভাবতে থাকে, তার সেই ভাবনার ঘোর কাটে না। এদিকে সময়ও তার জন্য অপেক্ষা করে না, সে সময় ও বাস্তবতার কাছে পরাজিত হয়ে যায়, যে অমর শিল্পের কাছে নিজেকে সপে দেয় কিংবা যে নিষিদ্ধ ফল খেয়ে মানুষ স্বর্গচ্যুত হয় এখানেও নিষিদ্ধ ফল তাকে ফালি ফালি করে ফেলে।
এই তরুণেরা না পারে ঘরের জন্য কিছু করতে না পারে সে আপনের বিকল্প পরের জন্য কিছু করতে বা নিজের জন্যও কিছু করতে। এই আত্মদহন তাকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে মারে। শিল্পীর এখানেই একটু পাওয়ার থাকে, শিল্পী নিজের জীবন দিয়ে যদি তার এই দায়কে চিত্রিত করতে পারে তাহলে সে শিল্পী টিকে যায়, অনাগত আগামী তাকে স্মরণ করে। খ্যাতির জন্য তাকে আর ছুটতে হয় না, খ্যাতি তার পায়ে এসে লুটিয়ে পড়ে। এই সততার জন্য শিল্পীকে হতে হয় অনেক নির্মোহ ও নির্মম।
এখানেও যুদ্ধ, এই যুদ্ধ অদৃশ্য। কিন্তু শিল্পীকে একমুখি চিন্তা করলে হয় না তাকেও দেখতে হয় জীবনের নানান অভিঘাত। এর মধ্যেই তাকে তার শ্রেষ্ঠ কাজটুকু দিতে হয়, নিতেও হয়।
টোকন ঠাকুর এই কঠিন বাস্তবতার ভেতর দিয়ে আসা স্বপ্নপ্রবণ উন্নয়নশীল বিশ্বের তরুণ হিসেবে এই সত্যকে গ্রহন করে নির্মাণ করেছেন ‘ব্ল্যাকআউট’। তৃতীয় চোখে নয় সপ্তম চোখে জগতকে দেখার সাহস বুকে নিয়ে ‘ব্ল্যাকআউট’ নির্মিত।
মানুষের প্রধান শুত্রু হচ্ছে তার বুদ্ধিভিত্তিক সত্তা, মানুষের প্রধান বন্ধুও হচ্ছে ঐ বুদ্ধিভিত্তিকসত্তা। এই সত্তা না থাকলে মানুষ কখনো মানুষের পর্যায়ে আসতে পারত না। উন্নয়শীল বিশ্বের তরুণদের জীবনের অনেক অপ্রাপ্তি ও অবদমনকে চেপে রেখে যে জীবন শিল্পীর কবির সাহিতিকের তা কষ্টের সুষমায় ভরা। সেই সুষমা কি, সেই কষ্টই বা কি তা ‘ব্ল্যাকআউট’ ছবিতে টোকন ঠাকুর প্রতীক,ইমেজ,নবায়ন প্রবণ নানান প্রকরণের মাধ্যমে দেখিয়েছেন। সিনেমাকেই করে তুলেছেন কবিতা।
কবির হাতে সিনেমা নির্মিত হলে সিনেমাই যে কাব্য হয়ে ওঠে তার দৃষ্টান্ত হচ্ছে ‘ব্ল্যাকআউট। ’ এই ফ্লিমে তিনি ইচ্ছেমত সীমানা ভেঙ্গেছেন,বিশ্বের তাবৎ শিল্পের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়ার সফল পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে একজন ভবিষ্যত চলচ্চিত্রকার হিসেবে নিজের আত্মপ্রকাশ ও জাত চিনিয়েছেন। এত ব্যথা এত দহন এত কষ্ট ও রাজনৈতিক সমস্যার মাঝে জীবনের সামাজিক দায় নিয়ে বাস্তবতাকে পাশ কাটিয়ে উন্নয়নশীল বিশ্বের তরুণেরা শিল্প বিংবা কবিতা বা শিল্পের অন্য মাধ্যমে ঘোরগ্রস্ত জীবর যাপন করছেন। বাস্তবতা যে কত ধূসর জাদুবাস্তবতায় ভরা, যাপিত জীবন পার করা যে কত কঠিন উন্নয়শীল বিশ্বের গ্রাম থেকে উঠে আসা তরুণদের মত করে তা আর কেউ জানে না, উপলব্ধি করতে পারে না। ।
কেননা মৌমাছির মত তাকে ঘিরে ধরেছে কর্পোরেট এন জি ও, ক্ষমতায় মদমত্ত মাতাল দেশিয় দেবপুত্র ও সামন্তীয় রাজপুত্রদের ক্ষমতার অংশীদারিত্বের দালালি,নিজেদের মননে ঔপনিবেশিক অহংকার। শাসন ও শোষণে নিমজ্জিত বর্তমান সময়ে ঢুকে পড়া সাম্রাজ্যবাদী শক্তি। বুর্জোয়া শিক্ষা ব্যবস্থার ভেতর বেড়ে ওঠা নিজের আত্মপরিচয়কে ভুলে যাওয়া বহুজাতিক কোম্পানির পণ্যবিক্রেতা বনে যাওয়া সাংস্কৃতিককর্মী ও জীবনবাস্তবতার ঘেরাটোপে পাকখাওয়া সমাজবদলানোর চিন্তায় মগ্নযুবক। এই হতচ্ছড়া যুবকরা কি করবে নগরে। কি করবে এই রহস্যময় জাদুবাস্তবতায় ঘেরা শহরে।
বাড়ি থেকে ফোন আসে মা অসুস্থ সময়মত যেতে পারে না, পারে না মায়ের অসুস্থতায় টাকা পাঠাতে, বাড়ি থেকে ফোন আসে বোন পরীক্ষার ফি দিতে পারে নাই বলে লেখা পড়া বন্ধ হয়ে গেছে। জীবনের এই দহন অনেক না পাওয়ার কষ্ট ও জীবনের চাহিদা তাদের মাতাল করে তুলে। ফলে, সেই তরুণেরা পান করে সময়বিষ নতুন ধরনের ড্রাগ, আর স্থির থাকতে পারে না, কেমন যেন আওলা-্জাওলা হয়ে যায়। সেই অস্থিরতারই গল্প ‘ব্ল্যাকআউট’ এক সৃষ্টিশীল তরুণের বহুমাত্রিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা।
কবি ও চলচ্চিত্রকার টোকন ঠাকুর চেষ্টা করেছেন ‘ব্ল্যাকআউট’ এ শিল্পের দায় মেটাতে।
গ্রাম থেকে শহরে পড়তে আসা তরুণদের জীবনচিত্রকে নিজের জীবনের বাস্তবতায় তুলে ধরে,অর্ন্তমুখি ও বর্হিমুখি রূঢ় বাস্তবতাকে স্থান-কাল-চেতনা ঘটনা ও চরিত্রের মাধ্যমে মনস্তাত্ত্বিক অবদমনকে কালচেতনায় উত্তরণের এক অসাধ্য সাধনের চেষ্টা করেছেন তিনি। এদেশে চলচ্চিত্র শিল্পে যা একেবারে নতুন। ‘এক নদীর জল যেমন অনায়সে অন্য নদীর জলে এসে মেশে, কোন দাগ রেখে মেশে না, চলচ্চিত্রে সময় থেকে অন্য সময়ে যাতায়ত তেমনি অনায়স, অতীত বর্তমান ভবিষ্যতের এক স্বচ্ছন্দ সম্মেলন। শুধু কাল নয়, চলচ্চিত্রে স্থান থেকে স্থানান্তরে গমনও এমনই অনায়স। ’ সৃষ্টিশীলতা সম্পূর্ণ ভিন্ন এক ক্রিয়েশন সেটা চলচ্চিত্র হোক, শিল্পের অন্য মাধ্যম কবিতা, প্রবন্ধ, গদ্য, কথাসাহিত্য, ভাস্কর্য, পেইন্টিং এই ক্রিয়েশন অনুভব করতে পারাটাই হচ্ছে একজন বোদ্ধা বা সজ্ঞাময় মানুষের সচকিত প্রজ্ঞা, চকিত সেন্স।
বেশিরভাগ গতানুগতিক মানুষ সৃষ্টিপ্রকরণের এই সেন্সই অনুভব করতে পারে না। তাই একটা দেশের চলচ্চিত্র বলুন, অন্য শিল্পমাধ্যম বলুন এগিয়ে যেতে পারে না। এদিক থেকে টোকন টাকুরের ‘ব্ল্যাকআউট’র ভাগ্যে কি ঘটে তাই দেখার বিষয়।
মানবিক সৌন্দর্য নির্মাণ করতে পারা অত সহজ কাজ নয়, আবার অত কঠিন ও নয়। কিন্তু মানুষ তা কি চায়? তাহলে কি চায় মানুষ,এই মনুষ্যজাত।
কিছু সৃষ্টিপ্রবণ মানুষ তা চায় বলে সৃষ্টিসৌন্দর্য ও মানবিক সৌন্দর্যের শিল্পবোধে তাড়িত হয়ে মানুষ জীবন নিয়ে নতুন করে ভাবতে পারে, ভাবতে বাধ্য হয়। শিল্পকে মানবিক ও পাললিক করে তুলে মানুষের মনে জায়গা করে নেওয়াও সহজ নয়, শিল্পের চরম সত্যের কাছে পৌঁছতে না পারলে মানুষ কোন কিছু নেয় না এবং শিল্পের সিদ্ধিও আসে না। একি সঙ্গে দুটো কাজ করা কত যে কঠিন তা স্রষ্টা মাত্রই বুঝতে পারে, বুঝতে পারে বলেই শিল্পীর দায় অনেক। ‘ব্ল্যাকআউট’ চলচ্চিত্রে বাংলা সিনেমার দর্শক নতুন কিছু বিষয় দেখতে পাবে যা দৈনন্দিন জীবনের বাস্তবতা কিন্তু বাংলা চলচ্চিত্রে নতুন ও সাহসী কাজ। জীবনের অবদমনের মনস্তাত্ত্বিক নিষিদ্ধ বিষয় তুলে ধরা হয়েছে ‘ব্ল্যাকআউট’ এ।
নিগ্রো কবি আইমে সিজার মানুষ নিয়ে সম্ভাবনার চাঞ্চল্যকর নতুন কথা শোনালেন তাকে কে অস্বীকার করবে? অস্বীকার মানে সভ্যতার সমস্ত কিছুকে অস্বীকার করা। চলচ্চিত্র কবিতা প্রবন্ধ নাটক কথাসাহিত্য ফোকলোরসহ ধমর্ও একবিন্দুতে মিলতে পারে, মনে রাখতে হবে ধর্ম বা শিল্প এককভাবে কোন জাতির নয়। জীবনের দাবীও তাই। সিজাররের ভাষায়-
যেমন:
এটা সত্য নয় যে পৃথিবীতে মানুষের কাজ শেষ হয়েছে
সত্য নয় যে আমাদের আর কিছু করার নেই
আমরা পৃথিবীর তুচ্ছ পরজীবী নই
সকলের পায়ের সঙ্গে পা রেখে চলতে হবে
পৃথিবীতে মানুষের কাজ তো সবেমাত্র আরম্ভ হলো
মানুষকে সকল বাঁধা জয় করতে হবে
মানুষ তার শক্তির অধিকারে দণ্ডয়মান থাকবে
মনে রাখত হবে সৌন্দর্য, বুদ্ধি এবং শক্তির অধিকার
এককভাবে কোন জাতির নয়
জয়ের বিন্দুতে সকল মানুষই মিলিত হতে পারে।
( আইমে সিজার,অনুবাদ- সৈয়দ আলী আহসান, শিল্পবোধ ও শিল্পচৈতন্য)
এই দায় বুকে নিয়ে অনন্তের উদ্দেশ্যে বাঙালি কবি মুহম্মদ নূরুল হুদাও প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন---
যেমন:
স্বর্গের নিষিদ্ধ ফল ভক্ষণের দায়ে আমরা কি আসিনি মর্ত্য,ে
মর্ত্যরে নিষিদ্ধ ফল ভক্ষণের দায়ে আমরা কি যাব না স্বর্গে?
স্বর্গের নিষিদ্ধ ফল ভক্ষণের দায়ে আমরা যদি পৃথিবী নামক এমন সুজলা সফলা প্রাণময় স্থান পেতে পারি, পৃথিবীর নিষিদ্ধ ফল (শিল্প) ভক্ষণের দায়ে আমরা কি আরো নান্দনিক ও শোভাময় স্থান পাব না? এই হচ্ছে স্রষ্টার প্রতি খেয়ালী শিল্পীর ছুঁড়ে দেওয়া শ্রদ্ধা, অহংকার, ভালোবাসা, ঈর্ষা কিংবা শেষ সত্যে পৌঁছানোর শিল্পিত অভিঘাত।
শিল্পকর্ম হচ্ছে এই নিষিদ্ধ সত্য বা শেষ সত্যে পৌঁছানোর নিরন্তর প্রক্রিয়া।
টোকন ঠাকুরের ‘ব্ল্যাকআউট’ও দর্শকের মনে এমন অনেক সাহসী প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয়। ভক্ষণ করে নিষিদ্ধ ফল। এ কথা এখন নির্দ্বিধায় বলা যায বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে টোকন ঠাকুরের ‘ব্ল্যাকআউট’ একটি নতুন সংযোজন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।