আমাদের একটা মানুষের সমাজ লাগবে
আজ২২ নভেম্বর সন্ধ্যা ৭টা। ওরাই সম্ভবত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচে প্রানোচ্ছল একদল বন্ধু। আগামীকালের মিডটার্ম পরীক্ষা বাতিল হয়ে যাওয়ায় ওরা ঘুরতে বেরিয়েছিল ফুলার রোড ধরে। একটা খেলা আছে হাটা প্রতিযোগিতা, ম্যারাথনে আছে. কে কত দ্রুত হাটতে পারে....
এই সময়ের এ বয়সের মেয়েরা, এমনকি ক্যাম্পাসের মেয়েরাও সারাক্ষণ রাস্তাঘাটে মৌখিক নিগ্রহের ভয়ে গুটিয়ে থাকে। ওদের ছুটতে ইচ্ছা করে, সাইকেল চালাতে ইচ্ছা করে, ক্রিকেট ফুটবল আর ব্যাডমিন্টনও খেলতে ইচ্ছা করে।
কারণ ওরা মানুষ। কিন্তু, কেউ কেউ মনে করেন ওরা মানুষ না। ভয়ে জড়সড় হয়ে কাচুমাচু হয়ে না থাকলে এই কেউ কেউরা ওই মেয়েদের উত্যক্ত করা নিজের সাংবিধানিক অধিকার বলে মনে করেন। আর এই কেউ কেউ দের ভয়ে মেয়েরা গুটিয়ে যায, শামুকের খোলসের মতো শক্ত গভীরে। কিন্তু সেখানেও পৌছে যায় কেউ কেউ দের হাত।
এ যেন একদল শ্বাপদের মধ্যে সারাটা জীবন ভয়ের চোটে শুকিয়ে নিঃশেষ হয়ে যাবার অনিঃশেষ অনুভূতি।
কিন্তু এই হাটা প্রতিযোগিতার প্রতিযোগীরা আলাদা। ফুলার রোডে উদয়ন স্কুলের সামনে প্রায়শই এমন উত্যক্ত করার খবর পাওয়া যায়। ওই জায়গায় বেড়াতে আসা ক্যাম্পাসের কিংবা বাইরের ছেলেমেয়েদের শারীরিক লাঞ্চনা থেকে আরম্ভ করে টাকা পয়সা হাতিয়ে নেয়া ওই সংঘবদ্ধ কেউ কেউ দের কাজ। কারো হাত ভেঙে কিংবা মোবাইল মানিব্যাগ ছিনতাই করে একেকটি অপূর্ব সন্ধ্যা কেটে যায় কেউ কেউ দের।
প্রশাসন জেনেও নির্বিকার। সূতরাং একেকটি মারমার কাটকাট সন্ধ্যা..
কেউ কেউরা ওদের দেখে বাজে ইঙ্গিত করে, এমনকি পূর্বের মতোন শারীরিক ভাবে লাঞ্ছনা করতেও উদ্যত হয়। কিন্তু ওরা তো আমাদের লক্ষী মেয়ের দল নয়..... ওরা একযোগে প্রতিবাদ করে। আশপাশের অনেক মানুষ চেয়ে থাকে....অপলক। কমবেশ সবাই সমঝোতা করবার কথা বলতে থাকে।
কারণ লক্ষী মেয়েরা রাস্তাঘাটে ঝগড়াঝাটি করে না। আর কারন এই কেউ কেউরা তো ক্ষমতাবান বাপু,এবং আরো কারণ ক্ষমতাবানরা যদি কিছু করে বসে...
কিন্তু এই হাটা প্রতিযোগিতার প্রতিযোগীরা ওদের ছাড়ে না, প্রক্টরিয়াল বডি আসে তারাও কেউ কেউ দের পক্ষে সাফাই গায়। তাদের হাত গলে এই নিপীড়করা হলে চলে যান। প্রক্টর সাহেব সদর্পে কিছুকাল পর মাটিতে অবতরণ করেন এবং বিচারের আশ্বাস দেন। এই ছয়টা মেয়ে একটাই কথা বলেন বার বার"এই নিপীড়কদের ক্যাম্পাস থেকে বহিস্কার করতে হবে"।
কাউকে না কাউকে তো সিনা টান করে দাড়াতেই হয়, আর তোমাদের তো পারতেই হবে.....রেড স্যালুট টু ইউ সিক্স।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।