আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দুই কোচ নিয়ে বেকায়দায় বাফুফে

চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই কি দুই ডাচ কোচ চলে যাচ্ছেন? বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন এ ব্যাপারে স্পষ্ট করে কিছু না বললেও সমস্যা যে তৈরি হয়েছে তা নিশ্চিতই বলা যায়। শুক্রবার জাতীয় দলের মূল কোচ লোডডিক ক্রুইফ ও তার সহযোগী রেনে কোস্টার বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের গুলশানের বাসায় হাজির হন। দু'জনাকে বাসায় দেখে অবাকই হন সভাপতি। কেননা ফুটবল সংক্রান্ত যে কোনো আলাপ তিনি বাফুফে ভবনে বসেই করেন। অবশ্য দু'জনার মুড দেখেই সালাউদ্দিন বুঝে ফেলেন কি কারণে তাদের আগমন।

চুক্তির শর্ত অনুযায়ী কথা ছিল প্রতি মাসেই কোচদের বেতন দেওয়া হবে। কিন্তু ক্রুইফ ও কোস্টার দুই মাস ধরে বেতনই পাচ্ছেন না। সে কারণে বকেয়া চাইতেই সভাপতির সঙ্গে আলাপ করতে এসেছেন। জানা যায়, দু'জনার মনোভাব এমনি ছিল যে বেতন না ক্লিয়ার করলে তারা বিকল্প সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হবেন। সালাউদ্দিন তাদের কি যে বলবেন ভেবে কূল পাচ্ছিলেন না।

পরে উপস্থিত থাকা বাফুফের সহসভাপতি তাবিথ আউয়ালের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে বেশ কিছুক্ষণ সালাউদ্দিন আলাপ করেন। পরে দুই কোচকে আশ্বাস দেওয়া হয় ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যেই পেমেন্টের সমস্যা মিটিয়ে দেবেন।

সালাউদ্দিনের কথা শুনে দুই কোচ হাসি মুখে বিদায় নিয়েছেন ঠিকই। কিন্তু সভাপতির মাথায় চিন্তা ঢুকে গেছে। কারণ চুক্তি অনুযায়ী বেতন ছাড়াও অন্যান্য সুবিধাসহ দুই কোচের পেছনে প্রতিমাসে প্রায় ২৫ লাখ টাকা খরচ পড়বে।

এমনিতেই ফেডারেশনের ফান্ডের অবস্থা ভালো নয়। কর্মচারীদের বেতন দিতে সমস্যা হচ্ছে। এই অবস্থায় কোচদের খরচের পয়সা কোথায় থেকে জোগাড় হবে। প্রতিশ্রুতি যখন দেওয়া হয়েছে তখন না হয় ফেব্রুয়ারির মধ্যেই বকেয়া টাকা দেওয়া হবে। কিন্তু চুক্তিতো হয়েছে দুই বছরের জন্য।

সালাউদ্দিন ভেবেছিলেন স্পন্সরের মাধ্যমে দুই কোচের বেতন ঠিকই জোগাড় করা যাবে। এখনতো এ ব্যাপারে কোনো সাড়াই মিলছে না। হয়তো বা কোনো প্রতিষ্ঠান এগিয়ে আসত। কিন্তু সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে চরম ভরাডুবিতে কেউ আর আগ্রহ দেখাচ্ছে না। এই অবস্থায় দুই বছরে কোচদের বেতন দিলে আরতো কোনো খরচই চালানো যাবে না।

তাছাড়া বলাবলি হচ্ছে কোচদের বসিয়ে বসিয়ে এত টাকা বেতন দেওয়ার মানে কি থাকতে পারে। কারণ সিডিউল অনুযায়ী আগামী এক বছর ফুটবলে জাতীয় দলের কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচই নেই। প্রীতিম্যাচ হলে অন্য কথা। তাই আপাতত দুই কোচের কাজ হচ্ছে প্রতিদিন বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে গিয়ে ম্যাচ দেখে পারফরমার চিহ্নিত করা। এমনটি বিদেশে হয়ে থাকে, কিন্তু বাংলাদেশের মতো দরিদ্র দেশে এমন বিলাসিতা মানায় না।

তাই সালাউদ্দিন নাকি চিন্তাভাবনা করছেন ফেব্রুয়ারির মধ্যেই বকেয়া মিটিয়ে দিয়ে দুই কোচকে বিদায় জানানো। যদিও এক্ষেত্রে অনেক অর্থের প্রয়োজন পড়বে। কেননা চুক্তি অনুযায়ী মেয়াদের আগে যদি তাদের বিদায় জানানো হয় তাহলে কয়েক মাসের বাড়তি বেতন দিতে হবে। সুতরাং বিদায় বললেই ক্রুইফ বা কোস্টার রাজি হয়ে যাবেন তাও নয়। এখন বিকল্প হিসেবে সালাউদ্দিন সমঝোতায় যেতে চাচ্ছেন।

দুই কোচের কাছে অপরাগতার কথা স্বীকার করবেন। বাড়তি টাকা দেবে তবে তা সমঝোতার ভিত্তিতে হবে। সালাউদ্দিন ফুটবল উন্নয়নের কথা ভেবে দুই কোচকে রাখতে চেয়েছিল। এখন যদি ফান্ডই না থাকে রাখবেন কিভাবে। বিষয়টি নিয়ে খুব শীঘ্রই দুই কোচের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন।

তারা রাজি থাকলেই হাফ ছেড়ে বাঁচবে বাফুফে। অবশ্য অন্য এক সূত্র বলছে সালাউদ্দিন এত অল্পতেই ভেঙ্গে যাওয়ার পাত্র নন। দেশে তার অনেক বিত্তশালী বন্ধু রয়েছেন। তাদের মাধ্যমে কোচদের স্পন্সরশিপ নিয়ে আলোচনা করবেন। আশা করা যায় এতে তিনি সফলও হবেন।

 

 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।