ট্রাইব্যুনালের প্রধান সাবেক বিচারপতি খাদেমুল ইসলাম চৌধুরী আগেই বলে দিয়েছিলেন, তাঁদের কাজ হবে কঠোর গোপনীয়তায়। কাল বিপিএল ফিক্সিংয়ের প্রাথমিক শুনানির দিন তাঁরা সে কথা অক্ষরে অক্ষরে পালন করলেন। ট্রাইব্যুনালের কার্যালয় গুলশানের নাভানা টাওয়ারে হলেও শুনানির ‘ভেন্যু’ পার্শ্ববর্তী আরেকটি ভবনে। দিনভর অপেক্ষা করেও যে ভবনের গাড়ি বারান্দা অতিক্রম করারও অনুমতি মেলেনি সাংবাদিকদের।
শুনানি শেষ করে চলে যাওয়ার সময় ট্রাইব্যুনালের প্রধানসহ অন্য সদস্যদেরও পাওয়া গেল।
পাওয়া গেল অভিযুক্তদের পক্ষ নিয়ে আসা আইনজীবীদের। কিন্তু শুনানিতে আসলে কী হলো, আইনি বাধা আর কঠোর গোপনীয়তার বেড়াজাল থাকায় সেসব নিয়ে বিস্তারিত বলতে রাজি হননি কেউই। গাড়িতে ওঠার আগে ট্রাইব্যুনাল-প্রধান খাদেমুল ইসলাম চৌধুরী শুধু বললেন, ‘শুনানি চলছে। কিছু বলার নেই। এটা গোপনীয় ট্রায়াল।
আমরা সারা দিন ওনাদের কথা শুনলাম। এখন মুলতবি হয়েছে। ১৯ জানুয়ারি আবার শুনানি হবে। ’
জানা গেছে, এক মোহাম্মদ রফিক ছাড়া বাকি আট অভিযুক্তের পক্ষেই ট্রাইব্যুনালের সামনে কোনো না কোনোভাবে হাজির হয়েছেন তাঁদের আইনজীবীরা। এর মধ্যে মোহাম্মদ আশরাফুল আর ড্যারেন স্টিভেন্সের পক্ষে ব্রিটিশ আইনজীবী ইয়াসিন প্যাটেল কথা বলেছেন স্কাইপের মাধ্যমে।
বাকি আইনজীবীরা সশরীরে উপস্থিত ছিলেন। অভিযুক্ত ক্রিকেটার মাহবুবুল আলম ও মোশাররফ হোসেনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার নুরুস সাদিক। শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটার কৌশল লোকুয়ারাচ্চির হয়ে এসেছেন একজন শ্রীলঙ্কান আইনজীবী, ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরসের মালিক সেলিম চৌধুরী ও তাঁর ছেলে শিহাব চৌধুরী এবং ভারতীয় প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা গৌরব রাওয়াতের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার নওরোজ হাসান চৌধুরী ও আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন। আর বিসিবির পক্ষে প্রসিকিউটর হিসেবে ছিলেন জোনাথন টেলর। তাঁকে সহযোগিতা করেছেন আইসিসির আইন বিভাগের প্রধান ইয়ান হিগিন্স, আইন কর্মকর্তা শেলি ক্লার্ক এবং বিসিবির আইনি উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মোদাচ্ছের হোসেন।
শুনানি সম্পর্কে বিস্তারিত বলতে রাজি না হলেও মাহবুবুল-মোশাররফের আইনজীবী ব্যারিস্টার নুরুস সাদিক সংক্ষেপে বলেছেন, ‘মোহাম্মদ আশরাফুল ও লোকুয়ারাচ্চির আইনজীবী অভিযোগ স্বীকার করলেও অন্যরা সবাই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। আমরা বলেছি আমাদের মক্কেলরা নির্দোষ। ’ একই কথা বলেছেন ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরসের আইনজীবী ব্যারিস্টার নওরোজ হাসান চৌধুরীও, ‘আমরা বলেছি আমরা নির্দোষ। আমরা অপরাধী নই। ’
এর আগে সময়মতো ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়নি দাবি করে দেওয়ানি আদালতে মামলা করেছে ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরস।
সে মামলার সিদ্ধান্ত হওয়ার আগে ট্রাইব্যুনাল বন্ধ রাখার দাবিও করেছে ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। শুনানির মধ্যাহ্নবিরতির সময় গ্ল্যাডিয়েটরসের আরেক আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন জানালেন, ‘যেহেতু বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড আইন অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারেনি, সে জন্য আমরা সিভিল কোর্টে একটা মামলা করতে বাধ্য হয়েছি। মামলা বিচারাধীন থাকার কারণে সিভিল কোর্টে সিদ্ধান্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত এটা (ট্রাইব্যুনাল) বন্ধ রাখার জন্য বলেছি। ’ সঙ্গে যোগ করেছেন, ‘৪০ দিনের মধ্যে ট্রাইব্যুনাল করার কথা ছিল। ওনারা ট্রাইব্যুনালটা সে সময় করতে পারেননি।
এ ছাড়া আমাদের যেসব নোটিশ দেওয়া হয়েছে, সেগুলোর কিছু ত্রুটি আমরা তুলে ধরেছি। আইসিসি ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থা। তারা কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ লিগে হস্তক্ষেপ করতে পারে কি না সেই প্রশ্নও করেছি। ’
আইনজীবীরা জানিয়েছেন, আগামী ১৯ জানুয়ারি পরবর্তী শুনানির দিন ঠিক করা হলেও ট্রাইব্যুনালের সঙ্গে প্রয়োজনে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা চলবে তাঁদের।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।