পরিক্ষার চাপে টিকপা চুক্তির ব্যপারে কিছুই লিখতে পারি নাই।
আশা করি এই লিখা মন দিয়ে পড়ে সঠিক বেঠিক যাচাই করবেন।
আমেরিকার মদদ পাওয়ার জন্য বাংলাদেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে টিকপা চুক্তি বাস্তবায়ন।
২৫নভেম্বর; আমেরিকার
কাছে যেভাবে বিক্রি হলো বাংলাদেশ.......
২৫নভেম্বর আমেরিকার সাথে ‘টিকফা’ নামক চুক্তি করেছে বাংলাদেশ । এ চুক্তির শর্তগুলো একটু জটিল হওয়ায় সাধারণ মানুষের কাছে তা সহজে বোধগম্য নয় ।
অনেকে জানেই না, তাদের চোখের সামনে কিভাবে বিক্রি করা হয়েছে তাদের মাতৃভূমিকে ।
আসুন খুব সহজ ভাষায় দেখি টিকফা হলে কি হবে........
১) গ্যাসঃ বাংলাদেশে বিনা শুল্কে শকুনের মত প্রবেশ করবে শত শত মার্কিন কোম্পানি, দখল করে নেবে পুরো গ্যাস সেক্টর । তাদের সাথে কখনই প্রতিযোগীতায় পেরে উঠবে না সরকারীও দেশীয় কোম্পানিগুলো । একচ্ছত্র আধিপত্য প্রতিষ্ঠার পর গ্যাসের দাম এত পরিমাণ বৃদ্ধি করবে যে, তখন বাঙালীরা গ্যাসের উপরে থেকেও রান্নার জন্য সামান্য গ্যাস পাবে না, যেমনি হীরার দেশে থেকেও দু’মুঠো খাবার পায় না সম্রাজ্যবাদীদের
চক্রান্তে বিধ্বস্ত সিয়েরা লিয়নবাসী ।
২) বিদ্যুৎ: সরকারি কোম্পানিগুলো পেরে না ওঠায়
দেশীয় বিদ্যুৎ বিভাগ চলে যাবে মার্কিনীদের হাতে ।
তখন
আধুনিকায়নের নামে বিদ্যুতের দাম বাড়বে কয়েকগুণ । আওয়ামীলীগের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ
পৌছে দেয়া, কিন্তু এ চুক্তি হলে উল্টো উচ্চ বিলের কারণে সুবিধা হারাবে শহুরে জনগণ ।
তখন দেশে উৎপন্ন বিদ্যুৎ
নিয়ে যাওয়া হবে দেশের বাইরে।
৩) বন্দরঃ অবাধ বাণিজ্যের
নামে বন্দরগুলো অবাধভাবে ব্যবহার করবে মার্কিনীরা । তখন এ বন্দর ব্যবহার করে আমাদের দেশে মার্কিন
সেনাবাহিনী ঢুকালো না অস্ত্র
ঢুকলো তার কোনো হিসেব নেয়ার ক্ষমতা থাকবে না বাংলাদেশ সরকারের ।
৪) টেলিযোগযোগঃ টেলিযোগাযোগ খাত আগেই বেসরকারিকরণ হওয়ায়, দেশের
অনেক গোপন তথ্যই হারিয়েছি আমরা । বিশেষ করে, কোন রাষ্ট্রেই কখনো পাশ্ববর্তী দেশের মোবাইল কোম্পানিকে জায়গা দেয়া হয় না, সেখানে ভারতের এয়ারটেল বাংলাদেশে প্রবেশ করে দেশের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ভারতের নিয়ন্ত্রণে রাখছে । যা আমাদের জন্য খুবই পরিতাপের বিষয় । তবে এ খাতে মার্কিনীরা প্রবেশ করলে তাদের অধিকতর পোদ্দারিতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠবে জনগণ,
কারণ মার্কিনীদের আড়িপাতার জঘন্য রেকর্ডের জন্য তারা সারা বিশ্বেই কুখ্যাত ।
৫) শিক্ষাঃ শিক্ষাখাতে মার্কিনীদের প্রবেশ, আর জাতির মেরুদণ্ডকে ড্রোন দিয়ে গুড়িয়ে দেয়া একই কথা ।
আধুনিকায়নের কথা বলে সিলেবাস সহ সর্বত্রে বাদ দেয়া হবে ইসলামকে, প্রতিষ্ঠান গুলোতে পশ্চিমের মত ধর্ম
চর্চা নিষিদ্ধ করা হবে । বিজাতীয় অপসংস্কৃতি দিয়ে ধ্বংস করে দেয়া হবে আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মকে । অনেকে বলতে পারেন, এখনই তো অনেকটা হয়ে গেছে, তাদের
বলতে চাই: এখন যদি ৫ টাকার ধ্বংস হয়, তবে তখন হবে ৫০ টাকার ।
৬) স্বাস্থ্যঃ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে স্বাস্থ্য খাত । ঔষধের গুণগত মানের
কথা বলে মার্কিন নীতি চাপিয়ে দেয়া হবে দেশীয় কোম্পানিগুলোর ঘাড়ে ।
কথিত
নীতি বাস্তাবায়ন করতে মারাত্মক বৃদ্ধি পাবে ঔষধের দাম । এখন যদি একপাতা এন্টাসিড কিনতে যদি খরচ হয় ১৫ টাকা, তবে তখন খরচ হবে ১৫০ টাকা । মানুষ সামান্য
ঔষধের অভাবে বিনা চিকিৎসায় মারা যাবে । একই সাথে মার্কিন কোম্পানিগুলোর সাথে প্রতিযোগীতায় টিকতে না পেরে পথে বসে যাবে দেশীয়
কোম্পানিগুলো ।
৭) পরিবহন সেক্টরঃ পরিবহণ খাত বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান সেক্টর ।
দেশের পরিবহন সেবা না নিয়ে দেশের কোন নাগরিক থাকতে পারে না । দেশের কোটি কোটি জনগণ এ খাতের সাথে জড়িত, এ খাতের আয়ও প্রচুর । কিন্তু মার্কিনীরা এ ছোট্ট দেশে প্রবেশ করলে তারা বিনিয়োগের মাধ্যমে যেকোন উপায়ে একচ্ছত্র
অধিপত্র প্রতিষ্ঠা করবেই, ফলে বাংলাদেশের সমস্ত পরিবহন
মালিকদের পথে বসা ছাড়া কোন উপায় থাকবে না । আর আমাদের টাকা নিজ দেশে নিয়ে যাবে মার্কিনীরা ।
মনে রাখবেন এ চুক্তির সবচেয়ে ভয়াবহ ফলাফল হচ্ছে, মার্কিন বহুজাতিক কোম্পানির কাছে পেরে না ওঠায় রাস্তায় বসে যাবে দেশীয় ব্যবসায়ীরা ।
আর এই সুযোগে একচেটিয়া অধিকার পেয়ে সবকিছুর দাম
আকাশে উঠাবে মার্কিনীরা ।
মূলত, এই কারনেই ভারতও চীন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে টিকফা চুক্তিতে আবদ্ধ হয়নি । আমার এ লেখাটা অনেকের কাছে রুপকথার মত মনে হতে পারে,
কিন্তু আমি সহজ ভাষায় যা বর্ণনা করতে চেয়েছি পরিস্থিতি তার থেকে অনেক ভয়ংকর হবে । মূলত, এ চুক্তি হচ্ছে বাংলাদেশকে চুষে খেয়ে ভিখারী বানানোর একটা পন্থামাত্র ।
যেমনটা ল্যাতিন আমেরিকার
দেশগুলোতে অবাধ বানিজ্য চুক্তির নামে তাদের পথে বসিয়েছে দিয়েছে আমেরিকা,
কিংবা আফ্রিকান দেশগুলোতে ব্যবসার নামে ঢুকে তাদের দুর্ভিক্ষ আক্রান্ত করে ছেড়েছে তারা ।
তেমনি এই চুক্তির
মাধ্যমেও বাংলাদেশকে আফ্রিকা-ল্যাতিন আমেরিকার মত চুষে খাবে আমেরিকা,
বানিয়ে দিবে কঙ্কালসার ।
এরপরেও এদেশবাসী বরাবরের মতই ঘুমিয়ে থাকবে । ফায়দা কি এত কিছু বলে?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।