আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ছোট খানের আনলাকি থারটিন

কথায় বলে, ‘মামা-ভাগনে যেখানে আপদ নেই সেখানে’। আর সেই মামার অভাবটাই যেন পুরো বছরজুড়ে হাড়ে হাড়ে টের পেলেন ভাগনে ইমরান খান। কেনই বা পাবে না বলুন? তাঁর ছয় বছরের ফিল্মি ক্যারিয়ারে চারটি হিট ছবির মধ্যে দুটি ছবিই পেরেছে সুপারহিটের তকমা গায়ে লাগাতে। আর এই দুটি ছবিই মামা আমির খানের প্রোডাকশনের। অথচ এ বছর মুক্তি পাওয়া প্রতিটি ছবি নিয়েই ইমরান খানের ছিল আকাশচুম্বী প্রত্যাশা।

আকাশ তো দূরের কথা, ইমরানের দিকে বলিউডের বক্স অফিস একবারও মুখ তুলে তাকাল না। বছরের শুরুতেই আনুশকাকে নিয়ে মাত্রু কি বিজলি কা মান্ডোলা, মাঝে এসে ওয়ান্স আপন অ্যা টাইম ইন মুম্বই দোবারা এবং বছরের শেষে এসে কারিনার সঙ্গে গোরি তেরে পেয়ার ম্যায়—তিনটি ছবিই বক্স অফিসে টায় টায় ফিস! অভিনয়ে প্রশংসা জুটলেও বক্স অফিস মাতানোটা অধরাই রয়ে গেল তেরোয় এসে, বছরটাই যে ছোটে খানের জন্য আনলাকি থারটিন!

বলিউডের রুপালি পর্দায় ইমরানের আগমন কিন্তু পাঁচ বছর বয়সেই। শুরুটাও মামা আমির খানের হাত ধরেই। আমির খান অভিনীত ১৯৮৮ সালের ব্লকবাস্টার কেয়ামত সে কেয়ামত তাক ছবিতে শিশুশিল্পীর চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন ইমরান। এরপর ১৯৯২ সালে আমির খানের আরেকটি ছবি জো জিতা ওহি সিকান্দার ছবিতেও দেখা যায় ইমরানকে।

দুটি ছবিতেই শিশু আমির খানের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন তিনি।

এরপর কেটে গেছে অনেক বছর। শিশু ইমরান যে কৈশোর পেরিয়ে যুবা হয়ে গিয়েছেন তা যেন আবার মামার চোখেই ধরা পড়ল। ক্যামেরার পেছনে কাজ করতে বেশি আগ্রহী ছেলেটাকে ক্যামেরার সামনে এনেই দাঁড় করিয়ে দিলেন। সালটা ২০০৮, তখনো স্রেফ খানদের জমানা।

কিন্তু বয়স বাড়ছে খানদের। আর চকলেটবয় হিরো হিসেবে তাঁদের পর্দায় চালানো যাচ্ছে না। বলিউডে ভীষণভাবে প্রয়োজন নতুন মুখ। আর তখনই আমির খান আবারও পর্দায় নিয়ে এলেন ভাগনে ইমরান খানকে। সেই ছবির পরিচালক আব্বাস টায়ারওয়ালাও ছবির নায়কের মতোই নতুন।

একমাত্র সামান্য চেনা মুখ, নায়িকা জেনেলিয়া ডিসুজা। কিন্তু তাতে কিছু এসে গেল না। বক্স অফিস জানিয়ে দিল ইমরানের প্রথম ছবি জানে তু ইয়া জানে না সুপারহিট। একটা টাটকা বাতাস নিয়ে আসতে পেরেছিলেন ইমরান তাঁর উপস্থিতি দিয়ে। তাঁর মিষ্টি চেহারার প্রেমে পড়ে গিয়েছিল মেয়েরা।



ইমরানকে দেখে অনেকেরই মনে হয়েছিল পাশের বাড়ির মিষ্টি ছেলেটা বুঝি! প্রথম ছবিতেই ভালো অভিনয় করে প্রশংসিত হন তিনি, জোটে ফিল্মফেয়ারে সেরা নবাগত অভিনেতার পুরস্কারটিও। তবে জানে তু ইয়া জানে নার বক্স অফিস সাফল্যের পরেই কিডন্যাপ ও লাক —পরপর দুটো ফ্লপ ছবি ইমরানের। নিন্দুকেরা তো তাঁর নামই দিয়ে দিলেন ‘ওয়ান ফিল্ম ওয়ান্ডার বয়’। তবে মামা ছাড়াও যে ভাগনে সফল হতে পারে ইমরান তা প্রথম প্রমাণ করেন ২০১০-এর ছবি আই হেট লাভ স্টোরিজ দিয়ে। ছবিটি ব্যাপক দর্শকপ্রিয়তা পেলেও পরের ছবি ব্রেক কে বাদ আবারও ব্রেক আনে ইমরানের সফলতায়।

ব্রেক কে বাদ ছবিটি বক্স অফিসে মার খায়। তাই আবারও মামার কাছেই ফিরতে হয় ইমরানকে।

২০১১ সালে আমির খানের প্রযোজনায় দিল্লি বেলি ছবিটি ইমরানকে হারিয়ে যাওয়া জমিন বেশ খানিকটা ফেরত পেতে সাহায্য করেছিল। মামার প্রোডাকশনের ছবি বলে কথা, সাফল্য নিয়ে তাই সেবারও ভাবনা ছিল না ইমরান খানের। দিল্লি বেলি ছবিটিও হয়ে যায় সুপারহিট।

সাফল্যের পালে একটু হাওয়া লাগে, সেই হাওয়াতেই ইমরানের পরের ছবি মেরে ব্রাদার কি দুলহানও হিট হয় সে বছর। কিন্তু তারপর? আবারও মোটামুটি ফ্লপের খাতাতেই নাম লেখাতে হয় ছোটে খানকে।

গত শুক্রবার মুক্তি পেয়েছে ইমরানের নতুন ছবি গোরি তেরে পেয়ার ম্যায়। করণ জোহর প্রযোজিত ও পুনিত মালহোত্রা পরিচালিত এই ছবিতে আবারও দ্বিতীয়বারের মতো জুটি হয়েছেন বলিউড অভিনেত্রী কারিনা কাপুর ও ইমরান খান। এর আগে ২০১২তে কারিনা কাপুর এক ম্যায় আউর এক তু ছবিতে ইমরান খানের সঙ্গে জুটি বেঁধে অভিনয় করেছিলেন।

গোরি তেরে পেয়ার ম্যায় ছবিতে ইমরান খান অভিনয় করেছেন একজন দক্ষিণ ভারতীয় যুবকের চরিত্রে। রোমান্টিক কমেডি ধাঁচের এই ছবিটি প্রথম দুদিনে বক্স অফিস থেকে আয় করেছে মাত্র ৫.৫ কোটি রুপি। ইমরানের এই ছবিটিও যে ফ্লপের তালিকায় যোগ হতে যাচ্ছে তা আগেভাগেই আঁচ করা যাচ্ছে। মামাকেই বুঝি আবারও প্রয়োজন ইমরানের। কিন্তু মামা তো এখন ধুম মাচাতেই ব্যস্ত।

আসছে বড়দিনে মুক্তি পাবে এ বছরের বহুল প্রতীক্ষিত ছবি আমির খান অভিনীত ধুম থ্রি।

সাজিদুল হক

মুম্বাই মিরর ও ইন্ডিয়া টাইমস অবলম্বনে

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।