জালিমের ফাঁসি হোক, যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি হোক, রাজাকারদের ফাঁসি হোক
মহান আল্লাহ পাক তিনি হাদীছে কুদসী শরীফ-এ ইরশাদ করেন, হে আমার হাবীব! আমি যদি আপনাকে সৃষ্টি না করতাম তবে আসমান-যমীন, লওহ-কলম কোনো কিছুই সৃষ্টি করতাম না।
সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ, সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম, সাইয়্যিদে ঈদে আকবর পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মাস সাইয়্যিদুশ শুহুর, শাহরুল আ’যম মাহে রবীউল আউয়াল শরীফ উপস্থিত। মুসলিম দেশসহ বিশ্বের সব সরকারের উচিত এ মাসের মর্যাদা-মর্তবা সম্পর্কে দেশবাসীকে সম্যক অবগত করানো। পাশাপাশি মহাসমারোহে পবিত্র সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম পালনের সার্বিক প্রস্থতি গ্রহণ করা, সর্বোচ্চ বাজেট বরাদ্দ করা ও পর্যাপ্ত ছুটির ব্যবস্থা করা।
“আসন্ন সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ, সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম, সাইয়্যিদে ঈদে আকবর অর্থাৎ কুল-কায়িনাতের সর্বশ্রেষ্ঠ ঈদ পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -১৪৩৫ হিজরী।
” সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যথাযথ তা’যীম-তাকরীমের মাঝেই মাখলুকাতের কামিয়াবী নিহিত। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, “যারা উনার প্রতি ঈমান আনবে, উনার তা’যীম করবে এবং উনার উপর অবতীর্ণ কুরআন শরীফ-এর অনুসরণ করবে তারাই হবে সফলকাম। ”
উল্লিখিত আয়াত শরীফসহ অসংখ্য আয়াত শরীফ-এ স্বয়ং আল্লাহ পাক তিনি উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি তা’যীম-তাকরীমের অমোঘ নির্দেশ দিয়েছেন।
সমস্ত ইমাম-মুজতাহিদ ও আউলিয়ায়ে কিরাম উনাদের ইজমা হয়েছে যে, যে মাটি মুবারক আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পা মুবারক স্পর্শ করে আছে সে মাটি মুবারক-এর মর্যাদা লক্ষ-কোটি আরশে আযীমের চেয়েও বেশি। সুবহানাল্লাহ!
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে তায়াল্লুক-নিসবত থাকার কারণে মাটি মুবারক-এর যদি এত মর্যাদা-মর্তবা হয়ে থাকে তা হলে আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যে তারিখে যে দিবসে যে মাসে এসেছেন অর্থাৎ রবীউল আউয়াল শরীফ তার কতটুকু মর্যাদা-মর্তবা রয়েছে সেটা খুব সহজেই অনুধাবনীয়।
এ মাস সব মাসের চেয়ে বেশি সম্মানিত ও ফযীলতপ্রাপ্ত মাস অর্থাৎ সাইয়্যিদুশ শুহুর, শাহরুল আ’যম।
যে কোনো লোক, যে কোনো সময়, যে কোনো নিয়ামত লাভ করলে সে সন'ষ্ট হয়, খুশি প্রকাশ করে। পরীক্ষার ফল প্রকাশ পেলে পরীক্ষার্থীরা এত খুশি হয় যে, তাদের খুশি প্রকাশের জন্য মিষ্টি কেনার কারণে দেশের সমস্ত মিষ্টি শেষ হয়ে যায়। একটা সাধারণ দুনিয়াবী কারণে যদি মানুষ এত খুশি হয় তাহলে যিনি আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ উপলক্ষে এ মাসে তা হলে কতটুকু খুশি প্রকাশ করতে হবে। এ মাসে যার যতটুকু তাওফীক রয়েছে, যেভাবে তাওফীক রয়েছে ঠিক ততটুকু সেভাবে দিয়ে সে খুশি প্রকাশ করবে; তা হলে তার জন্যে কামিয়াবী রয়েছে।
আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, “তোমাদেরকে যে নিয়ামত দেয়া হয়েছে তা তোমরা আলোচনা কর, প্রকাশ কর। ” (সূরা দোহা : আয়াত শরীফ ১১) এ আয়াত শরীফ সম্পর্কে উল্লেখ্য যে, সবচাইতে বড় নিয়ামত হচ্ছেন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি। কারণ কায়িনাত যদি উনাকে না পেত তাহলে আল্লাহ পাক উনাকেও পেত না।
আল্লাহ জাল্লা শানুহু তিনি আমাদের জন্য তথা সারা আলমের জন্য হাবীবুল্লাহ, নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ‘উসীলায়ে কুবরা’ তথা সবচেয়ে বড় উসীলা বানিয়েছেন। আল্লাহ পাক তিনি হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সারা আলমের জন্য রহমতুল্লিল আলামীনরূপে প্রেরণ করেছেন।
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আগমন তথা বিলাদত শরীফ এবং উনার বেছাল মুবারকও সারা আলমের জন্য আল্লাহ পাক উনার রহমত এবং ফজল ও করম স্বরূপ। তাই দুনিয়াবাসীদের উচিত শাহরুল আ’যম মাহে রবীউল আউয়াল শরীফকে যার যার সাধ্যমত তা’যীম-তাকরীম করা।
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মর্যাদা-মর্তবা ও তা’যীম-তাকরীম সম্পর্কে অধিকাংশ মহল খুব কম ফিকির করে থাকে এবং আপাতদৃষ্টি নিয়েই উনাকে মূল্যায়ন করার অপচেষ্টা করে থাকে। (নাঊযুবিল্লাহ) অথচ এটা কাফিরদের খাছলত।
কাফিররা সাইয়্যিদুল বাররী ওয়াল বাহ্র হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্পর্কে চিন্তা-ফিকির করতে উদাসীন, গাফিল ও অবুঝ থাকতো।
আল্লাহ পাক তিনি তাদের প্রসঙ্গে ইরশাদ করেন, “তারা কি ফিকির করেনা যে, তাদের মাঝে প্রেরিত রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি জিন থেকে নন বা জিন দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত নন। বরং তিনি ভয় প্রদর্শনকারী রসূল। ” (সূরা আরাফ : আয়াত শরীফ ১৮৪)
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, “হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি উম্মাহকে জানিয়ে দিন, আল্লাহ পাক তিনি ফজল-করম হিসেবে তাদেরকে যে দ্বীন ইসলাম দিয়েছেন, কুরআন শরীফ দিয়েছেন এবং রহমত হিসেবে প্রিয়তম হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে দিয়েছেন সেজন্য তারা যেন খুশি প্রকাশ করে। ” (সূরা ইউনুস : আয়াত শরীফ ৫৮)
মূলত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালামগণ উনাদের মুবারক আগমন ও বিদায় এবং বিশেষ ঘটনা সংঘটিত হওয়ার দিন তথা মাস উম্মাহর জন্য ঈদ বা খুশির অন্তর্ভুক্ত।
হালে সরকারিভাবে পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদযাপন করা হয়।
ভিআইপি রাস্তায় কিছু রঙিন পতাকা, ব্যানার ইত্যাদি টানানো হয়। বিচ্ছিন্নভাবে অন্তঃসারশূন্য কিছু মাহফিল, সেমিনার ইত্যাদির ব্যবস্থা করা হয় এবং একেই যথেষ্ট বলে মনে করা হয়। অথচ তুলনামূলক তথ্যে দেখা যায়, এদেশে রবীন্দ্র, নজরুলের স্মরণসহ অন্যান্য অনুষ্ঠানে যে বিপুল অর্থ ব্যয় করা হয় তার চেয়ে অনেক কম অর্থ কেবল নয় বরং কম উৎসাহ ও কম আয়োজনের দ্বারা যেনোতেনোভাবে ১২ই রবীউল আউয়াল শরীফ-এর মতো পবিত্র দিনটিকে অতিক্রান্ত করা হয়। অথচ ঈমানের একান্ত দাবির কারণেই শুধু এ মুবারক দিনেই কেবল নয় বরং পুরো মাসে সরকারি বেসরকারি সর্বমহলে ব্যাপক আয়োজনে, বিপুল উৎসাহে, গভীর মূল্যায়নে, স্বতঃস্ফূর্তভাবে পালিত হওয়া ফরজের অন্তর্ভুক্ত।
বর্তমানে দেশে অতি সাধারণ বিষয়ে এ সপ্তাহ, সে সপ্তাহ, এ পক্ষ, ও পক্ষ মাসব্যাপী এ মেলা, ও মেলা ইত্যাদি কর্মসূচি পালিত হয়ে থাকে।
যদি তাই হয়ে থাকে তাহলে যিনি হাবীবুল্লাহ, নূরে মুজাসসাম, যিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যিনি সৃষ্টি না হলে আল্লাহ পাক কিছুই সৃষ্টি করতেন না উনার আগমনী মাস তথা সাইয়্যিদুশ শুহুর, শাহরুল আ’যম মাহে রবীউল আউয়াল শরীফ উপলক্ষে সারাদেশব্যাপী কত ব্যাপক ও শান শওকতপূর্ণ কর্মসূচি গ্রহণ করা উচিত। কত বেশি পন্থা ও কত বেশি বাজেট করা উচিত। তা সকলকে ফিকির করতে হবে।
যেহেতু বাংলাদেশের ৯৭ ভাগ জনগণ মুসলমান, প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী মুসলমান। পাশাপাশি বাংলাদেশে ইসলামকে রাষ্ট্র দ্বীন ঘোষণা করা হয়েছে।
সংবিধানের প্রস্তাবনায় পরম করুণাময় আল্লাহ পাক, উনার প্রতি পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাসের কথা বলা হয়েছে। তাই বাংলাদেশ সরকারের জন্য দায়িত্ব ও কর্তব্য হচ্ছে হাবীবুল্লাহ, নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, উনার আগমনী মাস তথা শাহরুল আ’যম মাহে রবীউল আউয়াল শরীফ উপলক্ষে সারাদেশব্যাপী ব্যাপক ও শান শওকতপূর্ণ কর্মসূচি গ্রহণ এবং যথাযথ তা’যীম-তাকরীম ও শান-শওক্বতের সাথে পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালনের সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
মূল কথা হলো- সাইয়্যিদুল আইয়াদ, সাইয়্যিদে ঈদে আযম, সাইয়্যিদে ঈদে আকবর পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাস সাইয়্যিদুশ শুহুর, শাহরুল আ’যম মাহে রবীউল আউয়াল শরীফ উপস্থিত। তাই বাংলাদেশসহ সকল মুসলিম ও অমুসলিম সরকারের দায়িত্ব ও কর্তব্য হচ্ছে- সারা দেশব্যাপী শাহ্রুল আ’যম, রবীউল আউয়াল শরীফ ও সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ, সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম, সাইয়্যিদে ঈদে আকবর পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষে পরিপূর্ণ তা’যীম-তাকরীম ও আদব-মুহব্বত ও শান শওকতের সাথে যথাযথ সার্বিক ব্যবস্থা নেয়া। পাশাপাশি সকলেই যেন কুল-কায়িনাতের সর্বশ্রেষ্ঠ ঈদ, পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যথাযথভাবে পালন করতে পারে তাই সবদেশে কমপক্ষে ১ মাস অর্থাৎ সম্পূর্ণ রবীউল আউয়াল শরীফ-এ ছুটি প্রদান করা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।