আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

‘দায় রাজনীতিকদেরই নিতে হবে’

কেন?- উত্তরে বললেন, “আমার ভাইয়ের মতো যেন আর কোনো ভাই না পোড়ে। ”
এই আহ্বান জানিয়ে মঙ্গলবার বিকালে শাহবাগে ‘সহিংসতা প্রতিরোধে জনতা’ ব্যানারে বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নেন আফরোজা। এর উদ্যোক্তা ছিল অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ফোরাম; যাদের যাকে সাড়া দেন কবি, শিল্পী,ছাত্র,শিক্ষকরা।
দুই প্রধান দলের বিরোধের ফলে চলমান রাজনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে সংঘাতে মানুষের মৃত্যুর প্রতিবাদে ডাকা এই কর্মসূচিতে বামপন্থী কয়েকটি দলের নেতারাও সংহতি জানান।
কয়েকজন রাজনীতিকের সামনে দেয়া বক্তব্যে আফরোজা বলেন, “রাজনীতির নামে এই মরণখেলা বন্ধ করেন।

অনেক মানুষ আগুনে হতাহত হয়েছে। আমার ভাই মৃত্যুর সাথে লড়ছে। এই দায় রাজনীতিবিদের নিতে হবে। ”
“এ কষ্ট সহ্য হওয়ার নয়, যার হয় সে বোঝে,” ভাইয়ের কথা বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন এই নারী।
গত বৃহস্পতিবার পেট্রোল বোমায় অগ্নিদগ্ধ বাবা-মাকে হাসপাতালে রেখে এই কর্মসূচিতে শামিল হওয়া মাসুদ রানা বলেন, “আমাদের নিরাপত্তা কোথায়? কেন আমাদের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছেন? এটা কোন ধরনের আন্দোলন?”
নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে আপত্তিতে বিরোধী দল টানা অবরোধ চালিয়ে যাচ্ছে।

এতে সংঘাতে পুলিশের গুলিতে অবরোধকারী যেমন মারা যাচ্ছে, তেমনি গাড়িতে অগ্নিসংযোগে মারা যাচ্ছে নিরীহ মানুষ।
গত সপ্তাহ ধরে শুরু হওয়া অবরোধে এই পর্যন্ত ৩৭ জনের প্রাণহানির প্রেক্ষাপটে জাতীয় জাদুঘরের সামনে এই প্রতিবাদী কর্মসূচিতে আওয়াজ তোলেন জাতীয় পতাকার নকশাকার শিবনারায়ণ দাসও।
ক্ষোভ জানিয়ে তিনি বলেন, “কোনো একটি দল বা ব্যক্তি এ দেশ স্বাধীন করেনি। এদেশ স্বাধীন হয়েছে প্রগতিশীল মানুষের সংগ্রামের মাধ্যমে। ”
সমাবেশে ব্যানারগুলোর লেখায় সহিংসতা প্রতিরোধের আহ্বানের পাশাপাশি ক্ষমতায় যাওয়ার রাজনীতির প্রতি ধিক্কার জানানো হয়।


বক্তব্যে অধ্যাপক তানজিমুদ্দিন খান বলেন, “দুই দলের লোভের বলি আমরা সাধারণ জনগণ। তবে আজ  দেশের এ পরিস্থিতির জন্য অনেকাংশে আমরাই দায়ী; কারণ আমরা মানুষ দেখে নয়, মার্কা দেখে ভোট দিই। ”
“আমরা জনগণ আগুনে জ্বলছি। আমাদের বর্তমান ও ভবিষ্যত এখন এক ভয়ঙ্কর খাঁচার ভেতরে যাচ্ছে.” বলেন সঙ্গীতশিল্পী কফিল আহমেদ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেন, “সরকার চাইলে খুব সহজেই এ সব আতঙ্ক সৃষ্টিকারীদের খুঁজে বের করতে পারে।

সরকার না পারলেও জনগণ নিশ্চয়ই রুখে দাঁড়াবে। ”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কাবেরী গায়েন সম্মিলিত প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
স্বাধীনতা পরবর্তী ডাকসুর প্রথম জিএস মাহবুব জামান বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের মাসে আমরা অবরোধ মানি না। সরকার ও বিরোধী দল এখনই দেশের সঙ্কট সমাধানে আলোচনায় বসুন, মীমাংসা করুন। ”
এই কর্মসূচিতে সংহতি জানান সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম,  সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান খান, বাসদ সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, বামমোর্চার নেতা সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি।


সাবেক ছাত্রনেতা বজলুর রশীদ ফিরোজ, হাসান তারিক চৌধুরী, মানবেন্দ্র দেব, ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতি এস এম শুভ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি সাইফুজ্জামান শাকন সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন।
বিক্ষোভ সমাবেশের পর একটি মৌন মিছিল শাহবাগ শিশুপার্কের সামনে গিয়ে শেষ হয়, যেখানে গত ২৮ নভেম্বর পেট্রোল বোমায় আক্রান্ত হয়ে ১৯ জন বাসযাত্রী অগ্নিদগ্ধ হন।
এর পর সেখানে মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে কর্মসূচি শেষ করা হয়।

সোর্স: http://bangla.bdnews24.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।