আকাশ ছোঁয়া দালান ... আইডিয়াটা প্রথম মাথায় আসে জর্জ ফুলারের মাথায় ১৮৮০ সালের দিকে । তখন মাত্র ১০ কি ২০ তলা উচ্চতা ছিল সেই দালানগুলোর । আজ ২০১৩ এর জানুয়ারী মাস । জল অনেক গড়িয়েছে । ১০ কি ২০ তলা এখন অহরহ দেখতে পাওয়া যায় ।
কিন্তু সেই প্রচেষ্টাগুলো আজকে আমাদের সাহস দেয় বুরজ খলিফার মত আকাশ ছোঁয়া দালান তৈরি করতে ...
আজকে আর সেই ইতিহাসের কথা বলব না । বরং কিছু নতুনের কথা বলব । পৃথিবীজুড়ে আর্কিটেক্ট অসীম ছুঁচ্ছেন । কখনও বলতে গেলে তাও ছাড়িয়ে যাচ্ছেন । কিন্তু এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ দালান বুরজ খলিফাই ।
প্রায় ২৭১৭ ফিটের উচ্চতা এখনও ছুতে পারেনি কোনও ভবন । কিন্তু ভবিষ্যতে আর্কিটেক্টরা আরও উঁচুতে যাবেন । এই ব্যাপারে কোনও সন্দেহ নেই । এই পোস্টে সেই ধরনের কিছু নিদর্শন তুলে ধরবো যা কিনা আরও উঁচুতে উঠতে যাচ্ছে ।
১ ।
বুরজ মুবারাক আল কাবির
এই জায়ান্ট স্থাপত্যটি তৈরি হতে যাচ্ছে কুয়েতের সিটি অফ সিল্কে জার উচ্চতা হবে ৩২৮৪ ফিট অথবা ১০০১ মিটার !!!!! এত বড় উচ্চতা দিতে ৭ বিলিয়ন ডলারেরও বেশী খরচ পরবে । তিনটি পরস্পর যুক্ত দালান এই সুউচ্চ স্থাপত্যটির ভিত্তিপ্রদান করবে । এর নির্মাণ কাজ শেষ হবার ধারনাকৃত সময় ২০১৬ । এটির নির্মাণ কাজ শেষ হলে নিঃসন্দেহে এটি বুরজ খলিফাকে হারাতে যাচ্ছে ।
২।
১ দুবাই
উঁচু দালান বলতে অবশ্যই বুঝায় প্রশস্থ দালান । এই জন্য এই স্থাপত্যটি তৈরি হচ্ছে তিনটি টাওয়ারের সমন্বয়ে । এর উচ্চতা হবে ৩২৮০ ফুট এবং বাকি টাওয়ার দুইটির উচ্চতা হবে ১৯৬৯ এবং ২৬২৫ ফুট । সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে এটি স্থাপিত হতে যাচ্ছে । এর জন্য জায়গা খালির কাজ ২০০৮ এ শুরু হয়েছিল কিন্তু আর্থিক অবস্থার কারনে তা এখনও হয় নি ।
যদি এর কাজ শুরু হয়, সম্পূর্ণ কাজ শেষ হতে ধারনাকৃত সময় লাগবে প্রায় ৭ থেকে ১০ বছর ।
৩ । ইন্ডিয়া টাওয়ার
এবার একটু আশার কথায় আসি ... নাম শুনেই বুঝতে পারছেন এটি স্থাপিত হতে যাচ্ছে পাশের দেশ ভারতে । বুরজ খলিফাকে হারানোর মত কিছু না হলেও দক্ষিণ এশিয় দেশগুলোর মধ্যে এমন কিছু আসলেই দুর্লভ !! এর উচ্চতা ২৩৬৩ ফিট । ২০১০ এ এর নির্মাণ কাজ শুরু হয় ।
২০১১ তে কাজ স্তগিৎ রাখা হয় । আশা করা হচ্ছে এর নির্মাণ কাজ ২০১৬ এর মধ্যে শেষ হবে ।
শেষ করব একটা স্বপ্ন দিয়ে... এখনও এর কাজ শুরু হয়নি । কাজের কাজ যা হয়েছে তা হল স্বপ্ন দেখা আর একটু একটু পরিকল্পনা...
স্থাপত্যটির নাম দেয়া হয়েছে আল জাবের টাওয়ার যার প্রস্তাবিত স্থাপত্য ঠিকানা কুয়েত । এই স্থাপত্য পুরো আক নটিক্যাল মাইলজুরে থাকবে ।
উচ্চতা হবে ১৮৫২ মিটার ... অন্য কথায় ৬০০০ ফিটেরও বেশি !!!!!! ভাবা যায় ??? এই জন্য এর নাম দেয়া হয়েছে Millennium Challenge Tower... ইতালিয়ান আর্কিটেক্ট ওমেরো মারচেত্তি বলেন “ এই স্থাপত্য তৈরিতে গতানুগতিক পদ্ধতি, কনক্রিট , অরথগনাল গ্রিড ব্যাবহার করা যাবে না” । তার ভাষ্যমতে এখন তিনটি বিনিয়োগকারী গ্রুপ সারা বিশ্বে আছে যারা আই চ্যালেঞ্জ বাস্তবে পরিনত করতে আগ্রহী । তিনি বলেন “এটাই আমাদের ভবিষ্যৎ... যা এখন অর্জন করা বাকি” ।
বাইরের এতগুলো কথা তো বললাম । এবার আসি আমাদের দিকে ।
সুউচ্চ দালানের দিক থেকে আমরা অনেকখানি পিছিয়ে আছি । তৃতীয় বিশ্বের দেশ হিসেবে ওইরকম কিছু ভাবা হয়তো আমাদের জন্য আসলেই বিলাসিতা । কিন্তু আমাদের দেশের মাটি কাঠামোর কথা মাথায় রেখেও কিন্তু কিছু হচ্ছে । আমাদের দেশের সর্বোচ্চ দালান ছিল বাংলাদেশ ব্যাংক যার উচ্চতা ৩৩১ ফিট । কিন্তু ২০১২ সালে নির্মিত মতিঝিলের সিটি সেন্টার ৩৯০ ফিট উচ্চতা নিয়ে তাকেও ছাড়িয়ে যায় ।
আমার মনে হয় দুর্নীতিটা একটু কম হলে আর মানুষের মাঝে আরেকটু দেশপ্রেম জাগলে অদূর ভবিষ্যতে হয়তো আরও গর্ব করার মত কিছু পাবো ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।