বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে চালকের সহকারী মো. হাসানের মৃত্যু হয় বলে জানান ঢাকা মেডিকেল হাসপাতাল ফাঁড়ি পুলিশের পরিদর্শক মোজাম্মেল হক।
এর আগে সকাল ৯টার দিকে জনপথ মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকা ইশরাত পরিবহনের ওই বাসে পেট্রোল বোমা ছুড়ে মারে অবরোধকারীরা। আগুন লেগে গেলে ঘুমিয়ে থাকা হাসানের শরীরের ৯০ শতাংশই পুড়ে যায়।
এনিয়ে হরতাল ও অবরোধের ঘটনায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বার্ন ইউনিটের আগুনের পোড়া ১২ জনের মৃত্যু হলো।
মহানগর পুলিশের ডেমরা জোনের জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার মিনহাজুল ইসলাম জানান, বাস চালকের সহকারী হাসানকে (১৫) গুরুতর অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছিল।
ওই রুটের পরিবহনের কর্মচারী আলাউদ্দিন ও অপু জানান, তাদের বাস ঢাকা ও চট্টগ্রামের মধ্যে যাতায়াত করে। অবরোধের কারণে গত পাঁচ দিন ধরে তাদের বাসগুলো জনপথ মোড়ে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। চালকদের সহকারীরা দিনে গাড়ির আশেপাশেই থাকেন এবং রাতে বাসেই ঘুমান।
অপু ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলে বলেন, হাসান সকালে ওই বাসের পেছনের সিটে ঘুমিয়ে ছিল। সকাল ৯টার দিকে হঠাৎ তিনটি বিস্ফোরণের শব্দ হলে ছুটোছুটি শুরু হয়ে যায়।
এর মধ্যেই একটি বাসে আগুন জ্বলে ওঠে।
“আমরা হাসানকে খুঁজে না পেয়ে বুঝতে পারি, সে গাড়ি থেকে বের হতে পারেনি। পরে ফায়ার ব্রিগেড এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনলে আমরা ভেতরে ঢুকে ওকে পাই। হাসান তখনো পেছনের সিটে অচেতন হয়ে পড়ে ছিল। ওর গায়ে আগুন জ্বলছিল।
”
আলাউদ্দিন ও অপু জানান, বাসের মালিক মো. সালাউদ্দিন। আর যে বাসটি পুড়েছে সেটি চালাতেন স্বপন ও লিটন নামের দুজন চালক। ঘটনার সময় তারা সেখানে ছিলেন না।
সালাউদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বুধবার সন্ধ্যায় দুইশত টাকা রোজে হাসানকে ঠিক করা হয়। সে আগে একই রুটের অন্য গাড়িতে বাসের হেলপারি করতো।
“অবরোধের কারণে বাস না চলায় মালিক ঠিকমতো ‘খোরাকি’ (খাবারের টাকা) দিতো না হাসানকে। আমার পুরনো হেলপার গ্রামের বাড়িতে গেছে, তাই হাসান আমার গাড়িতে গত সন্ধ্যা থেকে কাজ শুরু করে। ”
অন্য একটি বাসের চালক আব্দুল মান্নান কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, “এই ছেলেটি গত পাঁচ-দিন এখানে অনাহারে- অর্ধাহারে দিন কাটিয়েছে। গাড়ি চলতো না তাই আগের মালিক ঠিকমতো তাকে খরচ দিতো না। গত কালই লিটন তার গাড়িতে কাজ দেয় হাসানকে।
”
হাসানের বাবার নাম নাজিম উদ্দিন, বাড়ি নোয়াখালী।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।