আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

৭১ এ ঢাকার গেরিলা অপারেশনগুলো। পর্ব ০৮ অপারেশন “টেরর দ্যা সিটি”

আমি দুয়ার খুলে বের হয়ে জোছনা ধরতে যাই। আমার হাত ভরতি চাঁদের আলো ধরতে গেলে নাই!

আরবান গেরিলাদের প্রতি নির্দেশ ছিল ছোট বড় নানা ধরনের অপারেশন করে শহরের স্বাভাবিক জীবন যাপন ব্যাহত করে দিয়ে পাকি আর্মিদের সবসময় আতঙ্কের মধ্যে রাখা। শহরের সমস্ত এলাকা জুড়ে এমনভাবে কাজগুলো করতে হবে যেন তারা মনে করে যে সারা শহর জুড়ে গেরিলারা তৎপরতা চালাচ্ছে। এরই নাম ছিল “সিটি টেররাইজিং অপারেশন”। এই লক্ষ্য ৫ জন গেরিলাঃ সামাদ, হাফিজ, উলফত,গাজী আর বাপী- এম.কে-১৪ এবং এম.কে-১৬ নামের মাইন নিয়ে সামাদ এর নিজস্ব টয়োটা গাড়িতে বেরিয়ে পড়ে।

২৬ শে আগস্ট এর সন্ধ্যা। গুড়িগুড়ি বৃষ্টি পড়ছে কিছুক্ষণ আগে থেকেই। আইউব গেট (বর্তমানে আসাদ গেট) এর কাছে এগিয়ে আসতে থাকে একটি টয়োটা গাড়ি। গেটের কাছাকাছি আসবার পরে গেরিলারা দেখে যে মিরপুর এর দিক থেকে একটি আর্মি কনভয় এগিয়ে আসছে। গেরিলারা পেট্রোল নেবার ভান করে পেট্রোল পাম্প এ গাড়ি থামায়।

কনভয় আসবার পূর্বেই উলফত দ্রুত রাস্তাতে কয়েকটি মাইন পেতে দিয়ে আসে। দুটি গাড়ি বিনা বাধায় পার হলেও তৃতীয় গাড়িতে মাইন এর আঘাতে প্রচণ্ড বিস্ফোরণ ঘটে। এরপর গেরিলারা দ্রুত চলে গেলো কার্জন হল এর সামনে (এখন যেখানে দোয়েল চত্বর সেখানে)। এইখানে গেরিলারা দেখল হাইকোর্ট এর দিক থেকে আসছে দোতলা বাস যেখানে ছিল সব অবাঙ্গালি যাত্রী। বাস স্ট্যান্ড এ বাসটি দাড়াতেই উলফত ও বাপী চাকার নিচে পেতে দিল মাইন।

এবং বাসটি চলতে শুরু করবার মুহূর্তেই প্রচণ্ড বিস্ফোরণে বাসটি কাঁত হয়ে পড়ে যায়। গেরিলারা এরপর গাড়ি ছুটায় নিউমার্কেট এর দিকে। গ্রিন রোড এর মোড়ে আসতেই গেরিলারা দেখতে পায় পেট্রোল পাম্প এ কয়েকটি মিলিটারি জীপ পেট্রোল নিচ্ছে। সায়েন্স ল্যাবরেটরি এর রাস্তাতে হাফিজ এম. কে-১৬ মাইন বসিয়ে দিয়ে গেরিলারা মোহাম্মাদপুর এর দিকে চলে যাবার সময়ই ভেসে আসে প্রচণ্ড বিস্ফোরণের শব্দ। জীপ দুটি প্রচণ্ড বিস্ফোরণে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল।

আর জীপের ভেতরের ৩ জন পাকি হানাদার ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছিল। (চলবে) তথ্যসূত্রঃ সেলিনা হোসেন, "একাত্তরের ঢাকা", আহমদ পাবলিশিং হাউস, ঢাকা, ১৯৮৯। পর্ব ৯ ঃ অপারেশন “বাসাবো”

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৪ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।