প্রবীণ সাংবাদিক এবিএম মূসা বলেছেন, বর্তমান সরকার গণমাধ্যমে প্রকাশিত কোনো প্রতিবেদনের জন্য কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। সাংবাদিকদের নির্যাতন করেনি। এর জন্য সরকার প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য। তবে সরকার কিছু বলছে না তার কারণ হলো ‘দে ডোন্ট কেয়ার’। সরকার ভাবে যা খুশি লেখো, যা খুশি বলো।
আজ সোমবার রাজধানীতে ব্র্যাক সেন্টার ইন মিলনায়তনে দুর্নীতিবিরোধী অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে এবিএম মূসা এ কথা বলেন। জাতিসংঘ ঘোষিত আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস উপলক্ষে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এ পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
এবিএম মূসা বলেন, আগে অনুসন্ধান করার মতো বিষয় কম ছিল। এখন অনেক বিষয় আছে। মফস্বলের সাংবাদিকেরা বেশি অনুসন্ধান করেন।
তাঁরা বেশি নির্যাতনের শিকার হন।
বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতা প্রসঙ্গে এবিএম মূসা বলেন, ‘ভারতীয় পররাষ্ট্রসচিব আসলেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করলেন ভালো কথা। তিনি খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করলেন তাও ভালো কথা। কিন্তু তাঁর এরশাদের সঙ্গে দেখা করার কারণটা কী? এরশাদকে এত প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে কেন?’
অনুষ্ঠানের সভাপতি টিআইবি ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপারসন সুলতানা কামাল বলেন, ‘গণমাধ্যম বলে যায়, উচ্চতর পর্যায়ে প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায় না। তাঁরা ভাবেন এসব না শুনে পার পেয়ে যাবেন।
কিন্তু আসলেই তাঁদের প্রতিক্রিয়া হয় না তা নয়। তাঁরা “রিঅ্যাক্ট করেন, রেসপনস করেন না”। গণমাধ্যমের কাজ হবে উচ্চতর পর্যায়কে রেসপনস বা দায়িত্বশীল আচরণ করতে বাধ্য করানো। তাঁদের যাতে কিছু এসে যায় তার ব্যবস্থা করতে হবে। ’
বৈশাখী টিভির প্রধান বার্তা সম্পাদক ও সিইও মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল বলেন, অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে গণমাধ্যমগুলোর অভ্যন্তরীণ দক্ষ মানবসম্পদের স্বল্পতা একটি সমস্যা।
এ ছাড়া যাদের বিরুদ্ধে এ ধরনের সাংবাদিকতা করা হয়, সেই প্রভাবশালী দুর্নীতিবাজরাই গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করে, ফলে তা বিরাট চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়।
অনুষ্ঠানে সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান। উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির উপনির্বাহী পরিচালক সুমাইয়া খায়ের।
পুরস্কার পেলেন যাঁরা: দুর্নীতিবিরোধী অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার জাতীয় বিভাগে (প্রিন্ট) পুরস্কার পেয়েছেন ডেইলি স্টার পত্রিকার সাবেক প্রধান প্রতিবেদক জুলফিকার আলি মানিক। তিনি বর্তমানে ঢাকা ট্রিবিউন-এ বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছেন।
আঞ্চলিক বিভাগে (প্রিন্ট) খুলনা থেকে প্রকাশিত দৈনিক পূর্বাঞ্চল পত্রিকার প্রতিবেদক এইচ এম আলাউদ্দিন, ইলেকট্রনিক বিভাগে ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনে প্রচারিত প্রতিবেদনের জন্য অপূর্ব আলাউদ্দিন (বর্তমানে যমুনা টেলিভিশনে কর্মরত) এবং একই প্রতিবেদনের ক্যামেরা সাংবাদিক মহসিন মুকুল পুরস্কার পেয়েছেন। অনুষ্ঠানের অতিথিরা পুরস্কারপ্রাপ্তদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। প্রতিবেদন বিভাগে পুরস্কারপ্রাপ্তরা ক্রেস্ট, সনদ এবং ৮০ হাজার টাকার চেক পান। ফটোসাংবাদিক ক্রেস্ট, সনদ এবং ৫০ হাজার টাকার চেক পান। অনুষ্ঠানে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল আয়োজিত আন্তর্জাতিক আলোকচিত্র প্রতিযোগিতায় প্রথম সনি রামানি, তৃতীয় সুমন ইউসুফ এবং বিশেষ অবদান রাখায় এ এম আহাদকেও সম্মাননা জানানো হয়।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।