আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

চরম পর্যায়ের বিদয়াতী ও গুমরাহ তারা যারা “পবিত্র আখিরী চাহার শোম্বাহ শরীফ” পালন করাকে বিদয়াত বলে

আমি সত্য কথা বলি পবিত্র সুন্নত মুবারক উনার একনিষ্ঠ অনুসরণকারী, বিশিষ্ট ছাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহু তিনি উনার সঙ্গী-সাথী উনাদেরকে নিয়ে কোথাও যাচ্ছিলেন। হঠাৎ পথিমধ্যে কোনো এক জায়গায় তিনি উনার মাথা মুবারক নিচু করে দিলেন। উনার সঙ্গীদের মধ্য হতে একজন বললেন, হে হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমর রদিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহু! আপনি এখানে মাথা নিচু করলেন, তার কি কারণ? জবাবে হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমর রদিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহু তিনি বলেন, “আমি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে এ রাস্তায় কোথাও যাচ্ছিলাম, এখানেই রাস্তার পাশে একটি বড় গাছ ছিল, গাছের একটি ডালা বাঁকা হয়ে রাস্তার উপরে এসেছিল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাথা মুবারকে লাগবে বিধায় তিনি মাথা মুবারক নিচু করে ডালাটি অতিক্রম করেন। এখানে যদিও সে ডালাটি নেই, তথাপি আমি শুধুমাত্র সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র সুন্নত মুবারক আদায় করার জন্য নিজ মাথা নিচু করে দিয়েছি। ” (সুবহানাল্লাহ্) হযরত আব্দুল্লাহ্ ইব্নে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহু তিনি সেখান থেকে কিছু দূর যাওয়ার পর এক স্থানে ইস্তিঞ্জা মুবারক করতে বসলেন।

এক ব্যক্তি বললো- হুযূর আপনি এইমাত্র বাড়ি থেকে ইস্তিঞ্জা মুবারক করে এসেছেন, তারপর আবার এখানে ইস্তিঞ্জা মুবারক করতে বসার কারণ কি? জবাবে হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহু তিনি বলেন, “আমি দেখেছি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এখানে ইস্তিঞ্জা মুবারক করতে বসেছিলেন, আমার যদিও ইস্তিঞ্জার মুবারক উনার হাযত হয়নি, তথাপি আমি এখানে ইস্তিঞ্জা মুবারক করতে বসেছি শুধুমাত্র সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র সুন্নত মুবারক উনার অনুসরণের জন্য। ” (সুবহানাল্লাহ্) তাহলে, ফিকিরের বিষয় এই যে, পবিত্র সুন্নত মুবারক উনার হুবহু অনুসরণ-অনুকরণ করার জন্য মাথা মুবারক নিচু করার প্রয়োজনীয়তা না থাকা সত্ত্বেও এবং ইস্তিঞ্জা মুবারক উনার হাযত না হওয়া সত্ত্বেও মাথা মুবারক নিচু করলে এবং ইস্তিঞ্জা মুবারক করতে বসলে যদি তা বিদয়াত না হয়ে থাকে। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, والذين اتبعوهم باحسان رضى الله عنهم ورضوا عنه . অর্থাৎ- “হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে যারা উত্তমভাবে অনুসরণ করবে, মহান আল্লাহ পাক তিনি তাদের প্রতিও সন্তুষ্ট এবং তারাও মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি সন্তুষ্ট। ” ‘আখির’ শব্দের অর্থ হচ্ছে ‘শেষ’। আর ‘চাহার শোম্বাহ’ ফার্সী শব্দ।

যার অর্থ হচ্ছে ‘ইয়াওমুল আরবিয়ায়ি বা বুধবার’। পবিত্র ছফর মাস উনার ‘শেষ বুধবার’ দিনটি সারাবিশ্বে ‘পবিত্র আখিরী চাহার শোম্বাহ’ হিসেবে মশহুর। সেদিন মুবারকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি দীর্ঘদিন অসুস্থতা অনুভব করার পর সুস্থতা অনুভব করেন, গোসল করেন এবং হযরত আহলে বাইত আলাইহিমুস সালাম উনাদের সাথে আহার করেন। হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে মুবারক ছোহবত দান করেন এতে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা খুশি হয়ে যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক খিদমতে হাদিয়া মুবারক পেশ করেন এবং আলাদাভাবে গরিব-মিসকীনদেরও কিছু দান খয়রাত করেন। এটাই মূলত ‘পবিত্র আখিরী চাহার শোম্বাহ শরীফ’ উনার মূল বিষয়।

তাই পবিত্র আখিরী চাহার শোম্বাহ শরীফ পালন করা খাছ ‘সুন্নতে ছাহাবা’। আর এটাকে বিদয়াত বলা কাট্টা কুফরীর অন্তর্ভুক্ত। তাহলে পবিত্র সুন্নত মুবারক উনার হুবহু অনুসরণ-অনুকরণে “পবিত্র আখিরী চাহার শোম্বাহ শরীফ” পালন করা বিদয়াত হয় কি করে? মূলত, যারা এ ধরনের এলোমেলো কথা বলে থাকে তারাই চরম পর্যায়ের বিদয়াতী ও গুমরাহ। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।