আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় সরকারকে আরো কঠোর হতে হবে।।

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

সাধারণ মানুষের জীবনের নিরাপত্তা এবং আইন শৃঙ্খলা রক্ষা করার জন্য সরকারের উচিত এখন একটি সমন্বিত কার্যক্রম অনতিবিলম্বে শুরু করা। যে মুহূর্তে একদিকে একাত্তরের মানবতা বিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চলছে, পাশাপাশি আগামী দশম সাধারণ নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে, ঠিক সেই মুহূর্তে একাত্তরের পরাজিত শক্তি ঠিক একাত্তরের মত সারা দেশে সাধারণ মানুষের উপর নিছক আন্দোলনের নামে হামলা করছে। দেশের প্রধান বিরোধীদলের ছত্রছায়ায় জামায়াত-শিবির প্রকাশ্যে এই নাশকতার খেলায় মেতে উঠেছে। সরকারের শেষ সময়ের এই ক্রান্তিলগ্নে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য সরকারের সমন্বিত কার্যক্রমের একটি অভাবও পরিলক্ষিত হচ্ছে। সেই সুযোগে আন্দোলনের নামে বিএনপি জামায়াত জোট সারা দেশে সাধারণ মানুষের উপর হামলার পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় সম্পত্তির ব্যাপক ক্ষতি করে যাচ্ছে।

অথচ সরকারের যারা আইন শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত তারা যেনো দায়সারা একটি রক্ষা বলয় করেই দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে চাইছেন। আগামী সাধারণ নির্বাচনে কে ক্ষমতায় আসে কোন দল ক্ষমতায় আসে, তার উপর নির্ভর করেই আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত সদস্যদের মধ্যে একটি গা ছাড়া ভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আন্দোলনরত অপশক্তিদের নাশকতা ঠেকাতে তাদের কঠোর হতে কেমন একটা গড়িমসি ভাব বিরাজমান। অবস্থা এমন যদি আগামী নির্বাচনে বিএনপি ক্ষমতায় আসে তাহলে যেনো চাকরিটা রক্ষা করা যায়। তাই কঠোর হতে গিয়ে কারো নজরে না পড়ার কৌশল নিয়েছে অনেক সদস্য।

আগামী নির্বাচনে যে দলই সরকার গঠন করুক না কেন, বর্তমান সরকারের উচিত রাষ্ট্রের সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার দিকটি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনায় নেওয়া। সেজন্য সরকারকে এখনি একটি সমন্বিত কার্যক্রম শুরু করতে হবে। মনে রাখতে হবে সবার আগে দেশের সর্বস্তরের সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার উপরই একটি দেশের সবকিছু নির্ভর করে। সেজন্য এখনি সরকার আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত সকল বাহিনী'র সঙ্গে মিটিং করে জরুরী ভিত্তিতে একটি সমন্বিত যৌথ কার্যক্রমের উদ্যোগ নেওয়া অত্যন্ত প্রয়োজন। আন্দোলন কারীরা হরতাল অবরোধের দোহাই দিয়ে যাত্রীবাহী বাসে আগুন দিয়েজ্যান্ত মানুষ পোড়াচ্ছে।

রেল লাইন খুলে ফেলে ট্রেন উপড়ে সাধারণ নিরীহ মানুষকে হত্যা করছে। রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি নষ্ট করছে। প্রধান বিরোধীদলের অনেক বড় বড় নেতা বেশ কয়েকবার এই সহিংস আন্দোলনের প্রকাশ্যে উসকানি দিয়েছেন। অনেকে এখনো মিডিয়ার সামনে বলছেন, এটা যুদ্ধ পরিস্থিতি। যদি আন্দোলনরত জামায়াত শিবির বিএনপি'র কথা অনুযায়ী এটা যুদ্ধ পরিস্থিতি হয়, তাহলে সরকারকে আরো কঠোর হস্তে তা দমন করতে হবে।

সন্ত্রাসীদের গুলি করার জন্য পুলিশকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়া হোক। সাধারণ মানুষের জান মালের নিরাপত্তার চেয়েদু'চারজন সন্ত্রাসী'র জীবন মোটেও বড় বিষয় হতে পারে না। যারা এসব উসকানি দিচ্ছেন তাদের আইনের আওতায় এনে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হোক। মনে রাখতে হবে, রাজনৈতিক দলের কর্মী বা নেতা হিসেবে প্রকাশ্যে সাধারণ মানুষকে পুড়িয়ে মারা ক্ষমতা কেউ পায় নাই। আইন সকলের জন্য সমান এটা আইনের কঠোর প্রয়োগের মাধ্যমেই নিশ্চিত করতে হবে।

একথা এখন সুস্পষ্ট যে, আন্দোলনের নামে জামায়াত শিবিবর আর তাদের মিত্র বিএনপি আসলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রক্রিয়া নস্যাৎ করতে চায়। ১৯৭১ সালে ৩০ লাখ মানুষ শহীদ হয়েছেন। তিন লাখ মা বোন সম্ভ্রম হারিয়েছেন। অসংখ্য দুর্ভোগ ভোগ করেছে এদেশের নিরীহ সাধারণ মানুষ। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে সেই পরাজিত অপশক্তি আবার বাংলাদেশকে একটি পাকিস্তান বানানোর স্বপ্নে বিভোর হয়েছে।

সেই অপশক্তিতে বিএনপি নানাভাবে সুযোগ সুবিধা দিয়ে আজ এই দানবে পরিনত করেছে। এই দানব সরকার যদি কঠোর হস্তে দমন করতে না পারে, তাহলে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়বে। পরাজিত অপশক্তির জন্য কোনো ধরনের দয়া বা মানবিকতা দেখানোর সুযোগ নাই। কারণ তারা ৪২ বছরেও চরিত্র বদল করে নাই। তারা এখনো একাত্তরের মত জ্বালাও পোড়াও খুন ধ্বংসের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে।

তাদের প্রতি এতো করুণা করারও কিছু নাই। সোজা কথা সাধারণ মানুষের জীবনের নিরাপত্তার জন্য সরকারকে কঠোর হস্তে আইন শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বটি পালন করতে হবে। পাশাপাশি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের সকল প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে। বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে বিতর্কিত করা বা এটি নিয়ে রাজনৈতিক সুফল পাবার যে কোনো ধরনের দুষ্টু মতলব পরিহার করতে হবে। আন্দোলনরত অপশক্তি যেভাবে রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি ধ্বংস করছে, নিরীহ মানুষ পুড়িয়ে মারছে, সেই মুহূর্তে সরকারের নমনীয় মনোভাব হবে খোদ রাষ্ট্রের জন্য একটি ভয়াবহ হুমকি।

আর বিচার প্রক্রিয়া একটি সুনির্দিষ্ট সময় সীমার মধ্যে শেষ করতে হবে। এটা নিয়ে সুদুরপ্রসারী ভোটের রাজনীতি কখনোই সুফল বয়ে আনবে না। বরং তা বিপক্ষ শক্তি যে কোনো ভাবে ক্ষমতায় গেলে বুমেরাং হয়ে আজকের এই মানবিকতাকেই দুর্বলতা মনে করে পাল্টা আঘাত করবে। যা বাংলাদেশের জন্য হুমকি স্বরূপ। যেখানেই অপশক্তির অপচেষ্টা বা আইন শৃঙ্খলা নষ্ট করার চেষ্টা দেখা যাবে সেখানেই কঠোর হাতে তা দমন করতে হবে।

প্রয়োজনে গুলি চালাতে হবে। দেশের সাধারণ মানুষ কেউ এই নাশকতার সঙ্গে জড়িত নয়। তাই এটা নিয়ে করুণা করার কোনো সুযোগ নাই। যদি সারা দেশে সেনা নামানো প্রয়োজন হয় তাহলে এখনি সেনা নামাতে হবে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে সেনা নামিয়ে অনাকাঙ্খিত রক্তপাত এড়ানো যাবে না।

যা করার এখনিকরতে হবে। মনে রাখতে হবে এই সরকারকে দেশের নিরঙ্কুশ ভোটাররা ভোট দিয়ে ক্ষমতায় বসিয়েছে। সেই সাধারণ মানুষকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেওয়া এবং দেশের শান্তি বজায় রাখার সকল দায়িত্ব সরকারের। এটাতে গাফিলতি দেখালে বা কোনো ধরনের শীতলতা দেখালে তা ভালো ফল বয়ে আনবে না। আইন শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য এখন যা যা প্রয়োজন তার সবই খুব কঠোর হাতে করতে হবে।

নইলে এর সকল দায় সরকারকেই বহন করতে হবে। দেশের ব্যবসা বাণিজ্য আজ স্থবির হয়ে আছে। দেশের পরিবহণ ব্যবস্থা ধ্বংসের মুখে। দেশের শান্তি শৃঙ্খলা এখন সুদূর পরাহত। জিনিসপত্রের দাম ঊর্ধ্বমুখী।

সাধারণ মানুষ কাজে যেতে ভয় পাচ্ছে। রাস্তায় কোনো নিরাপত্তা নাই। এভাবে একটা দেশ চলতে পারে না। সেই সঙ্গে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক কুচক্রীমহল সক্রিয় ঘোলা মাছে মাছ শিকার করার জন্য। তাই সরকারকে সতর্ক হয়ে কঠোর হাতে এসব নাশকতা দমন করা ছাড়া আর কোনো বিকল্প নাই।

এখনি সমন্বিত যৌথ অভিযান পরিচালনা করা ছাড়া আর কোনো বিকল্প নাই। সরকার যতোই সময় নষ্ট করবে পরিস্থিতি ততোই সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। মনে রাখতে হবে, কেউ আইনের ঊর্ধ্ব নয়। আইনকে প্রয়োগ করতে যতোই শিথিল থাকবে সরকার ততোই অপশক্তি আরো শক্তিশালী হয়ে মরণ ছোবল দেবে। বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় একটি আধুনিক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে হলে আইনকে সঠিকভাবে সময় মতোই প্রয়োগ করতে হবে।

নইলে বাংলাদেশকে রক্ষা করাই বিপদজ্জনক হয়ে দাঁড়াবে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।