ছোটবেলা থেকেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনাটা বেশ ভালমতোই কাজ করতো আমার মধ্যে, ২৬শে মার্চ কিংবা ১৬ই ডিসেম্বর আসলে পুরো বারান্দা জুড়ে ছোট ছোট জাতীয় পতাকা লাগানো ছিল নিয়মিত অভ্যাস। বাবা সরকারি কর্মকর্তা হওয়ার সুবাদে তোপধ্বনির সময়ও অনেকবার থাকা হয়েছে। রাত জেগে শহীদ মিনারে ফুল দিতে যাওয়া কিংবা বিজয়ের সারাদিন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান শোনা, এগুলো ছিল বাঁধাধরা নিয়ম। তখন একটিবারও মনে হয়নি এগুলো পালন করতে গেলে কোন বিশেষ দলের অনুসারী না হলে হবে না। শেখ মুজিবর রহমানকে দেখলে তখন মনে হত, উনি না থাকলে আসলেই বোধহয় আমরা আজীবন পূর্ব পাকিস্তান থেকে যেতাম।
কিন্তু সময় ধীরে ধীরে পাল্টে গেছে, নাহ; ‘১৩র ৫ই ফেব্রুয়ারি দেখে আমি লীগের উপর বিরক্ত হইনি। আমি মেনে নিচ্ছি লীগ আর বিএনপি একই মুদ্রার এপীঠ ওপিঠ। মেনে নিচ্ছি তারেক রহমান যতটুকু চুরি করেছেন, সজীব ওয়াজেদও ঠিক ততটুকুই করেছেন। মেনে নিচ্ছি সাইদ ইস্কান্দার যত টাকা বিদেশে পাঠিয়েছেন, শেখ রেহানাও ঠিক তত টাকাই লন্ডন নিয়ে গেছেন। মেনে নিচ্ছি আরাফাত রহমান আড়ালে আবডালে থেকে বিদেশে যতগুলো বাড়ি করেছেন, সায়মা ওয়াজেদও ততগুলোই কিনেছেন।
এত গেল দুই রাজপরিবারের সমানাধিকারের আলাপ।
ছাত্রদলের গোলাগুলিতে পড়ে বুয়েটের ছাত্রী সানি নিহত হয়েছে। তেমনি ছাত্রলীগের কারণে ফারুক, আবু বকর সহ আরও কত শিক্ষার্থীকে মরতে হয়েছে।
মেনে নিচ্ছি বিএনপি আমলে হিন্দু সম্প্রদায়কে ঘরছাড়া করা হয়েছে আর লীগের সময় মুসলিমদের করা হয়েছে দাঁড়ি- টুপি বিহীন।
আমি এটাও মেনে নিচ্ছি, বিএনপি আমলে যেমন আলতাফ বাবরের মত মন্ত্রী ছিল, লীগের আমলেও তেমন সাহারা, আলমগীরের মত মন্ত্রীরা ছিলেন।
আপনার সমস্ত দোষত্রুটি মেনে নিলাম সমুদ্রকন্যা, কিন্তু ‘পিলখানা হত্যাকাণ্ড’। কোন জিনিসের বিনিময়ে আপনাকে এই অপরাধের বিনিময়ে ক্ষমা করে দেই বলুন তো? দেশের ৫৭ জন সূর্যসন্তানকে এক লহমায় শেষ করে দিয়ে আজ আপনি বারবার বলেন, দেশে আর্মি ক্ষমতায় আসার কোন সুযোগ নেই।
আজকে আপনি বড় গলায় বলেন, শীর্ষপদ আপনি চান না। ঠিক কথাই বলেন আপনি; আপনি তো আসলে ভারতের একটি অঙ্গরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হয়ে থাকতে চান। কথায় কথায় জামায়াত-শিবিরের ধোঁয়া তুলে নিজের সব ব্যর্থতাকেই ঢাকতে চান।
যুদ্ধাপরাধের বিচার আর তার সাথে বাংলাদেশীদের সেন্টিমেন্ট নিয়ে তো কম খেললেন না আপনি? এতই যদি ফাঁসিতে ঝোলানোর সদিচ্ছা থাকত, তবে ৫ বছর পড়ে গিয়ে মাত্র একজনকেই কেন ঝুলাতে পারলেন?
কোন দলের পক্ষ নিয়ে কথা বলতে চাই না। তবে এটুকু বলতে পারি, দেশকে আপনি কোনদিনই ভালবাসেন না। দেশে ফিরে এসেছিলেন, পরিবারের সদস্যের হত্যার বদলা নিতে। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে বদলা নিয়েছেন। এখন বন্ধুপ্রতিম দেশে চলে গেলেই বোধহয় ভালো করবেন।
দেশের মানুষ অন্তত শান্তি পাবে।
আজ হঠাৎ করে শেখ পরিবারের একজন হতে ইচ্ছা করছে। তাহলে হয়তো বুঝতে পারতাম বাপের রেখে যাওয়া ৫৬ হাজার বর্গমাইলের মালিকানা কতটা আরাম আয়েশে ভোগ করা যায়। বুঝতাম ১৬ কোটি ক্রীতদাসকে দিনের পর দিন খাটিয়ে খাটিয়ে টাঁকশালগুলো ভরে তারপর তাদের না খাইয়ে রেখে এসি রুমে বসে বিরিয়ানী খেতে কেমন লাগে!!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।