সত্য পথের অনুসন্ধানি
জয়ের(win)ব্যাপকতা বুঝাতে বিজয়(victory)। জয়ের চেয়েও আরো অধিক যার পরিধি। হ্যাঁ বিজয় এসেছিল এই গাঙ্গেয় “ব”- দ্বীপে 1971 সালের 16ই ডিসেম্বর বিকাল চারটা 31 মিনিটে। ভাবলেই কেমন গা শিঁউরে ওঠে। লুঙ্গি পরা কিছু হাড্ডি সার জোয়ান শীতের নদীতে জং ধরা রাইফেল কাঁধে সাঁতার কেটে কেটে কেমন করে যেন পরাস্ত করলো এক রাষ্ট্রের সাঁজোয়া সেনাদের!! নিয়াজি ইয়াহিয়া কুপোকাত মাত্র নয় মাসে!! এটা জয় নয় এটা আসলেই বহুমাত্রিক এক বিজয়।
বৃহৎ বাঙালীর জীবনে একটা স্বাধীন আভাস ভুমি সুচিত হয়েছিল এই দিনে। একটা নির্দৃষ্ট ভু-খন্ডের মানুষের মধ্যে একধরনের মানসিক ঐক্য হয় আর সে ঐক্যের খেসারত ও তাদের কম দিতে হয় না।
খেসারতের জবাব দিতে অথবা নির্দৃষ্ট ভু-খন্ডের অধিবাসীদের চাওয়া পাওয়াকে দাবীতে পরিণত করতে হলে দরকার হয় একজন হেমিলনের বাঁশিওয়ালার। বরাবরই বাঁশিওয়ালারা মধ্যবিত্ত ঘরেই জন্মে। আমাদের বাঁশিওয়ালাও তেমনই।
তবে আমারা একটু বাড়তি পেয়ে গিয়েছিলাম : সৌম্য কান্তি চেহারা: সাদা চাদর:সাদার উপরে কালো কোট , মোটা ডাটের চশমার ভেতরে একজোড়া যুগপথ “ভরসা এবং আগুনে চোখ”। কন্ঠে তার অমিয় বজ্রবাণী। কেনেডি,কেষ্ট্রো, সাদাত, মেন্ডেলা কারো কাছ থেকে কম ছিল না আমাদের বাঁশিওয়ালা।
আসলে “বিজয়” শব্দটি আবার আপেক্ষিকও বটে। “বিজয়”কে দোষ দিলাম কেন? দুনিয়ার সব কিছুইতো সাপেক্ষেই চলে।
এই যে ধরুন : আমাদের “বিজয় দিবস তথা বিজয়টা সংকীর্ণ অর্থে কি? একদম সাদামাঠা উত্তর হলো আমাদের শোষকদের কাছে থেকে আমরা যুদ্ধ করে আমরা জয়ী হয়েছি। মানে তারা আমাদের আর শোষন করতে পারবে না। আসলেই কি আমাদের আর শোষণ করার কেউ নেই? আমাদের বুঝাতে শোষিত শ্রেণীর কথা বলছি। শোষিত শ্রেণী সংঙ্গা খোঁজার দরকার কি? নাম করণেই এর সার্থকতা। শোষিত শ্রেণীর কেউ যদি নেতৃত্ব দেয় সে কিন্তু আর শোষিত শ্রেণীতে থাকে না ।
সেও আবার শাষিত শ্রেণীর হয়ে যায়।
আমরা এইবার আমাদের বিজয়কে নিয়ে একটু ব-দ্বীপের অভ্যন্তরে ঢুকে পড়ি। দেখুন এটাই আমাদের শেষ বিজয় ছিল না। নির্দৃষ্ট ভু-খন্ডটা সব সময় ঠিক থাকে ,স্থির থাকে কিন্তু ভু-খন্ডের মানুষ গুলাতো আর স্থির থাকার পাত্র নয়। ঐ যে বললাম মানুষ!! মানুষ মানেই বহু মত।
মানুষ মানেই ভিন্ন মত। ভিন্ন চাওয়া এবং বিবর্তিত চাওয়া। ভিন্ন ভিন্ন মতের ভিত্তিতে তৈরী হয় ভিন্ন সম্প্রদায়। সেখানে আবারো চলে জয় বিজয়ের খেলা। আবারো জয় পরাজয়ের সাল গননা :1975,1981,1990,1996,2001,2008 ।
ধরুন “পার্বত্য শান্তি চুক্তি” সোজা বাংলায় এটা হলো একটি সম্প্রদায়ের ভু-খন্ডের স্বাধীনতা চাওয়ার দাবীকে পরাস্ত করা। দেখুন 71 এ আমাদের যে যুদ্ধ এবং দাবী সেটা কিন্তু একই- ভু-খন্ডের সার্বভৌমত্ত চাওয়া। পার্বত্যবাসী পারলো না কেন? সেটার হাজারটা কারণ আছে কিন্তু সর্দার কারণটা হলো সামর্থ্যের অভাব। সেই অর্থে বিজয় আসে সামর্থ্যের পিঠে ভর করে। মানে কেউ “মাগনা” দেয় না।
71 এ বিজয় পাওয়ার পর আমরা আবার এত গুলা বিজয়ের সাল গননা করলাম কেন? এটা কি বিজয়ের ক্রমবর্ধমান উন্নতি? অবশ্যই না। আগেই বলেছি প্রত্যেকটা বিজয়ের অপর পিঠে লিখে থাকে অনেক বিসর্জন অনেক রক্ত, আগুন। বার বার কেন বিজয়ের স্বাদ নিতে হয় আমাদের? তাহলে কি “বড় বিজয়টা” আমাদের জন্য অপ্রত্যাশিত ছিল!!
এই বার একদম নেমে পড়ি 2013 সালে। চেতনা টেতনা বাদ দিলাম একদম সোজা বাংলায় বলি আপনি যদি মুক্তিযুদ্ধের কথা ভাবেন, স্মৃতি কাতর হন, অথবা মুক্তিযুদ্ধে অবদান আছে এমন কাউকে দেখে গর্ব অনুভব করেন -নিশ্চিত আপনি গালে হাত দিয়ে ভাবছেন। কেন এমন হলো? কেন পাকিস্তানি মানস এত বিপুল: কেন “জয় বাংলা”র দিন শেষ কথাটা জোরসেই বলছে পাকি মানস? কেন আসাদুজ্জামান নুরের মতো নির্মোহ রাজনীতিক ব্যক্তিকে কান্না করতে হয়? এর পিছনে অনেক উত্তর অনেক গবেষনা।
তবে নৈর্বক্তিক উত্তরটা বেশ ভালোভাবেই দিয়েছেন মুনতাসির মামুন- “একদল অনিচ্ছুক জাতিকে স্বাধীনতার পথ দেখিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু।
শুধু পতাকাটা তাদের হাতে তুলে দেবার বাকি । “বিছমিল্লাহ” বলে আমরা সেটাই শুরু করতে পারি। এতেই আমাদের নিরাপদ প্রস্থান নিশ্চিত হবে। সীতাকুন্ড, লালমনির হাটের পাট গ্রাম, সাতকানিয়া, মেহেরপুরে এখন তাদের বিজয় নিশান উড়ছে।
এই বারের বিজয় দিবস তাদেরকেই উৎসর্গ করলাম । অক্ষমের আবার বিজয় কি! বিজয় দিবস কি? যে মেহের পুরের আম্রকাননে একদিন গোড়াপত্তন হয়েছিল বিজয়ের সেই মেহেরপুরের পথ আগলে থাকে এ দেশরই মানুষ যাদের সামনে থাকে পাকিস্তানি মানস। !!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!! বিজয়ের দরজায় দাঁড়িয়ে থাকা জামাত -শিবিরকে অগ্রিম অভিনন্দন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।